আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (63 points)
রাসুল (সা) বলেছেন: মদীনায় মহামারি প্রবেশ করবেনা। অথচ হযরত উমার (রা) এর সময় মদীনায় মহামারি দেখা দিয়েছিল। তাছাড়া করোনার সময় ও মদিনা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে কি নবীর ভবিষ্যৎবাণী মিথ্যে প্রমাণিত হয়না? আর নবীর ভবিষ্যৎবাণি মিথ্যা মানে তো নবী ও ইসলাম পুরোটাই মিথ্যা।
রেফারেন্স:
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না মাসীহ দাজ্জাল, আর না মহামারী।(সহিহ বুখারি: ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫৩২০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৭৩১)

২৪৬৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবুল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি মদিনায় আসলাম, সেখানে তখন মহামারী দেখা দিয়েছিল। এতে ব্যাপক হারে লোক মারা যাচ্ছিল। আমি উমর (রাঃ) এর কাছে বসাছিলাম।এমন সময় একটি জানাযা অতিক্রম করলো এবং তার সম্পর্কে ভালো ধরনের মন্তব্য করা হল। তা শুনে উমর (রাঃ) বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর আরেকটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কেও ভালো মন্তব্য করা হল। তা শুনে তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর তৃতীয় জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা হল। এবারও তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কি ওয়াজিব হয়ে গেছে, হে আমীরুল মু'মিনীন? তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলেছিলেন, আমি তেমন বললাম। (তিনি বলেছিলেন) কোন মুসলিম সম্পর্কে চার জন লোক ভাল সাক্ষ্য দিলে আল্লাহ্ তাঁকে জান্নাতে দাখিল করবেন। তিনি বললেন, তিনজন সাক্ষ্য দিলেও।আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, দু'জন সাক্ষ্য দিলে? তিনি বললেন, দু'জন সাক্ষ্য দিলেও। এরপর আমরা একজনের সাক্ষ্য সম্পর্কে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।


একবার রাসুল (সা) কে কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে তা নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। যেমন: এক গোলাম বার্ধক্যে পৌছানোর পূর্বে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া। অথচ সেই গোলাম হাজার বছর পূর্বে মারা গেলেও কিয়ামত এখনো সংঘটিত হয়নি।

রেফারেন্স:
৭১৪৪। হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর এক গোলাম একদা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, সে ছিল আমার সমবয়স্কা। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তার হায়াত দীর্ঘায়িত হয় তবে সে বার্ধক্যে পৌছার পূর্বেই কিয়ামত কায়িম সংগঠিত হবে।

باب قُرْبِ السَّاعَةِ
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ مَرَّ غُلاَمٌ لِلْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ وَكَانَ مِنْ أَقْرَانِي فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ; إِنْ يُؤَخَّرْ هَذَا فَلَنْ يُدْرِكَهُ الْهَرَمُ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ ;

حدثنا هارون بن عبد الله، حدثنا عفان بن مسلم، حدثنا همام، حدثنا قتادة، عن انس، قال مر غلام للمغيرة بن شعبة وكان من اقراني فقال النبي صلى الله عليه وسلم ; ان يوخر هذا فلن يدركه الهرم حتى تقوم الساعة
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
 বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
 পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)


এবার নবীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন:
এক হাদিসে এমনটা উল্লেখ আছে,আবূ উসায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছলাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি (ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী (সা.) যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন সাধারণ বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও। [৫২৫৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫

এখানে প্রশ্ন হল:
একজন নবী কিভাবে একজন বেগানা নারীকে নিজের নিকট সমর্পণ করতে বলতে পারে? আর নবীর উদ্দেশ্য খারাপ ছিল বলেই সেই নারী আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছিল। আবার নবী হাত দ্বারা সেই নারীকে স্পর্শ করে শান্ত করতে চাইলেন অথচ আমরা জানি বিবাহ ব্যতিরেক নারীকে স্পর্শ করা হারাম। তাহলে রাসুল (সা) কিভাবে এমনটা করতে পারেন?

আমরা জানি, শিশুরা নিষ্পাপ। এক হাদিসে উল্লেখ আছে,  অমুসলিম নাবালক মারা গেলে তারা তাদের বাপ দাদ্র অনুসারি হবে অর্থাৎ জাহান্নামি হবে।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মাবুষ যার বিচার বুদ্ধি রয়েছে তার নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌছানোর পরেও সে কাফির থেকে গেলে তার জন্য জাহান্নাম এটা যৌক্তিক।  কিন্তু নাবালক যে কিনা কিছুই বোঝেনা,  কেবল অমুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়ার জন্যই সে নাবালক অবস্থায় মারা গেলেও জাহান্নামি হবে এটা কোন বিচারে যৌক্তিক।
আশা করি, প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (703,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَدْخُلُ الْمَدِينَةَ الْمَسِيحُ وَلاَ الطَّاعُونُ ".
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না মাসীহ দাজ্জাল, আর না মহামারী।(সহীহ বোখারী-৫৩২০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মক্কা ও মদীনা এই দু'টি শহরে দাজ্জাল এবং কাফির জ্বীন প্রবেশ করতে পারবে না। এবং কাফির জ্বীনদের অনিষ্টতা থেকে তৈরী মহামারী বা অন্য কোনো কারণে যেইসব মহামারী হতে পারে, এগুলো পবিত্র এই দুই শহর হতে কখনো সৃষ্টি হবে না। অর্থাৎ পবিত্র এই দু'টি শহর কখনো মহামারীর উৎপত্তিস্থল হবে না এবং পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার মত এই দু'টি শহর কখনো মহামারীতে আক্রান্ত হবে না। ইতিহাস সাক্ষী আজ অব্দি এই দুইটি শহর হতে কখনো মহামারীর উৎপত্তি হয়নি বা ব্যাপকারে মহামারীতে এই দু'টি শহর কখনো আক্রান্ত হয়নি।

لما فى مشکوة المصابيح:
٢٧٤١ - وعنه قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - «على أنقاب المدينة ملائكة لا يدخلها الطاعون ولا الدجال»  . متفق عليه. 
ــ 
٢٧٤١ - (وعنه) أي عن أبي هريرة (قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - على أنقاب المدينة ملائكة) جمع نقب بسكون القاف وهو الطريق بين جبلين، قاله الطيبي - رحمه الله - والأظهر أن المراد به مطلق الطريق، أو أريد بالأنقاب الأبواب والمراد ملائكة حرسه (لا يدخلها) أي المدينة أو أنقابها (الطاعون ولا الدجال) وهو يحتمل أن يكون حكما مستقلا، وكون الملائكة على الأنقاب بمنزلة الحجاب، واقفين على بابه تعظيما لجنابه، وأن يكون حكما مرتبا على الأول بأن يكونوا مانعين دخول الجن من الكفار الذين من أثر ضربهم وطعنهم ظهور الطاعون ودخول الدجال الذي هو مسحور ومسخر لهم، أو هم مسخرون له ابتلاء منه - تعالى - على عباده فحفظ الله - تعالى - منه أهل الحرمين الشريفين ببركة ما فيهما من البقعتين المنيعتين (متفق عليه) 

وفى "المفهم لما أشكل من تلخيص كتاب مسلم":
قوله " على أنقاب المدينة ملائكة ، لا يدخلها الطاعون ولا الدجال " ، قد تقدم القول في الأنقاب ، و " الطاعون " الموت العام الفاشي ، ويعني بذلك أنه لا يكون في المدينة من الطاعون مثل الذي يكون في غيرها من البلاد ، كالذي وقع في طاعون عمواس والجارف وغيرهما ، وقد أظهر الله صدق رسوله صلى الله عليه وسلم ; فإنه لم يسمع من النقلة ولا من غيرهم من يقول أنه وقع في المدينة طاعون عام ، وذلك ببركة دعاء النبي - صلى الله عليه وسلم - حيث قال : "اللهم صححها لنا" . وقد تقدم الكلام على اسم الدجال واشتقاقه ، وهو وإن لم يدخل المدينة إلا أنه يأتي سبختها من دبر أحد فيضرب هناك رواقه فترجف المدينة بأهلها ثلاث رجفات ، فيخرج إليه منها كل كافر ومنافق ، كما يأتي في حديث أنس في كتاب الفتن ، ثم يهم بدخول المدينة ، فتصرف الملائكة وجهه إلى الشام ، وهناك يهلك بقتل عيسى ابن مريم إياه بباب لد على ما يأتي ، وسيأتي أيضا أن مكة لا يدخلها الدجال .(المفهم لما أشكل من تلخيص كتاب مسلم ،كتاب الحج، باب: المدينة لا يدخلها الطاعون ولا الدجال وتنفي الأشرار ، ص: 495 )


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (63 points)
হুজুর, আমি আরেকটি হাদিস উল্লেখ করেছি, সেখানে উল্লেখ আছে হযরত উমার (রা) এর আমলে মহামারি হয়েছিল আর তাতে অনেক লোক মারা গিয়েছিল। তাহলে কি এই হাদিস মিথ্যা?

আর কিয়ামত সম্পর্কিত হাদিস মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
by (703,410 points)
যরত উমার (রা) এর আমলে যেই মহামারি হয়েছিল, সেটা তাউনে আমওয়াস বলা হয়। সেটা মক্কা মদীনাতে হয়নি। বরং সিরিয়া ও ফিলিস্তিন এলাকায় ৬৩৯ ইসায়ী মুতাবেক ১৮ হিজরীতে  হয়েছিলো।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...