আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
১. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
আমাদের ফ্যামিলি একটা বড় সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এর কি কোন সমাধান আছে যদি কোন সমাধান থাকে প্লিজ আমাকে সঠিক পরামর্শ দিবেন ইনশাআল্লাহ।
সমস্যাটা আমার আব্বুকে নিয়ে।আমার আব্বুর বর্তমান বয়স ৬৫+। আমার আব্বু ছোটবেলা থেকেই আমার দাদা দাদু চাচা ফুপিদের কেই আপন মনে করতো।আমার আম্মুকে এবং আমাদেরকে কখনো মূল্য দিত না।আমাদের কথা কখনো বিশ্বাস করত না।সব সময় আমাদেরকে সবার সামনে ছোট করে রাখত,অপমান করত, আমাদেরকে কখনো কোন কিছু বলতে দিত না আমাদের মুখ সবসময় বন্ধ করে রাখতো। আমার আব্বু একটা এনজিও তে চাকরি করে।আমার আব্বু অনেক  সমাজসেবা করে,মসজিদ মাদ্রাসায় অনেক অনেক দান করে।বাইরের মানুষের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করে।কিন্তু আমার আম্মু এবং আমার তিন বোন আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।আমাদের ঘরে বাজার করতে চায়না, বাজার করেনা মাসের পর মাস।আব্বু চাকরি সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় থাকে আর আমরা গ্রামে থাকি।২ সপ্তাহ পরপর বাড়িতে আসে ২ দিন থেকে আবার চলে যায়।বাড়িতে আসলেও সারাদিন বাইরেই কাটায়।আব্বু কোনো নেশা করে না।আব্বু এত এত টাকা  সুদে কিস্তি নেয় সব আম্মুর নামে।আম্মু না দিলে আমৃমুকে তো মেনেই নিবে না।  লাখ লাখ টাকা ঋণ করে বিল্ডিং করছে ৩ তলা এখনো ফুল কমপ্লিট না। সাথে লাখ লাখ টাকা ঋণ করে মসজিদ মাদ্রাসায় দান করতেছে।ঋণ পরিশোধ না করে দান করতেছে আমার আব্বুর এই দানগুলো কি কোন কাজে লাগবে?এলাকা সব জায়গার মানুষ আমার আব্বুকে অনেক ভাল মনে করে অনেক ভালোভাবে চিনে আমরাও যত যাই হোক আব্বুকে অনেক ভালো মনে করি।কিন্তু আব্বু আমাদের তিন বোনকে অনেক ছোট চোখে দেখে আমার আম্মুকে ছোট চোখে দেখে। আমাদেরকে ভালো মনে করেনা আমরা আব্বুকে কোন ভালো কথা বললে ভালো পরামর্শ দিলে সেটাকে কু পরামর্শ মনে করে।আমরা এমন একটা অবস্থায় আছি কেউ আমাদেরকে বিশ্বাস করবে না। কারণ আব্বু সবার সাথে এত ভালো সবাই আব্বুকে ভালোই মনে করে। যাই হোক সব কিছু মেনে নিলাম কিন্তু আমার আব্বু এখন এনজিও তে চাকরি করে সেখানে আব্বু একজন  অবিবাহিত মেয়েকে চাকরি দিয়ে দিয়েছে। আমার আম্মু হঠাৎ খেয়াল করে আব্বু একটা মেয়ের সাথে কথা বলতেছে এখনো আব্বু সবসময় ওই মেয়ের সাথে মেসেজে কথা বলে ফোনে কথা বলে কিন্তু আম্মুর কাছে আমাদের কাছে অস্বীকার করে আমাদের ঘরে বাজার করে না আমাদের ভরণপোষণ আমাদের পড়ালেখা এগুলা টাকা দিতে চায় না শুধু সমাজে মানসম্মানের ভয়ে যতটুকু করে।অথচ আব্বু অনেক মাদ্রাসায় দান করে আর আমাদের মাঝে এক লাখ টাকা কিস্তি থাকে অথচ আমার আব্বুর বেতনি এক লাখ ৫০ হাজারের মতো কিন্তু অফিস থেকেও অনেক টাকা কেটে নেয়। কই কই থেকে টাকা নেয় কই কি করে আমাদের বলে না।বাবা থাকা অবস্থায় আমরা বাবার আদর থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমার আব্বু আরেক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে গিয়েছে। আম্মু কিছু বললে আম্মুকে ধমক  দিয়ে না করে রাখে কিন্তু আমি আমরা সবাই দেখতেছি আমরা সব সময় ফোনে এবং মেসেজে কথা বলছে আমার আম্মু অনেক কষ্ট পাচ্ছে অনেক দুঃখ পাচ্ছে আমার আম্মু অনেক সহজ সরল মানুষ আমার আম্মুর আপন বলতে কেউ নেই।  আমরা তিন বোনও কারো আদর কখনো পায়নি মা বাবাই আমাদের আশা ছিল কিন্তু এখন আমাদের বাবাও আমাদের সাথে এমন ব্যবহার করছে।অনেক অনেক সমস্যা যা বলে শেষ করা যাবে না।আমরা তিন বোন এবং আমার আম্মু অনেক খারাপ সময় পার করতেছি অনেক কষ্টের সময় পার করতেছি আমরা চাইতাছি আম্মু আমাদের পরিবার কে যেন আব্বু আপন করে নেয়। ওই মেয়ের সাথে পরকীয়া আর না করে। আব্বু যেনো ওই রাস্তা থেকে ফিরে আসে এবং আমাদেরকে আপন মনে করে আমাদের পরিবারের দিকে মন ফিরে আসে এমন কোন আমল বা কোন কিছু কি আছে যার মাধ্যমে আমার আব্বুকে ফিরিয়ে আনতে পারি।

 প্লিজ আমাদের একটু সাহায্য করুন।আব্বুর এই ভয়াবহ রূপ টা আমাদের চার দেয়ালে বদ্ধ। বাইরের কেও আমাদের এইসব কথা বিশ্বাস করবে না।আমরা অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি।আমার আম্মু সারাটা জীবন অনেক কষ্ট করে গেছে এই শেষ বয়সে আম্মুর কষ্ট গুলো মেনে নিতে পারছি না। এত টা খারাপ অবস্থায় আছি লেখা গুলে গুছিয়ে লিখতে পারছি না।হয়তো আমি যেভাবে যা বলতে চেয়েছি,বুঝাতে চেয়েছি তা প্রকাশ করতে পারিনি। ছোট বোন হিসেবে আমাকে একটা সমাধান দিন প্লিজ

২. স্বপ্নে দেখি আমি আর আমার মা এক পাত্রের বাসায় গিয়েছি দেখতে। গিয়ে দেখি উনার খুব হাসিখুশি। একটা ঘরে উনারা ছিলেন। টিনের এবং ছনের তৈরি। এরপর উনারা ছেলের ঘর দেখাতে নিয়ে গেলেন। যাওয়ার কোনো পথ নেই বাগানের মধ্যে, ঘরবাড়িও হালকা পাতলা। সেখানে গিয়ে দেখি একটা বাগানের মধ্যে ছেলের ঘর,কিন্তু সেখানে থাকার মতো কোনো পরিবেশ নাই। কোনো মেয়ে সে ঘরে থাকতে পারবে না। যে পাত্রকে দেখতে গিয়েছি তার মা খালারা ছিল প্রথম ঘরে কিন্তু যখন পাত্রের ঘর দেখাতে নিয়ে গেল সেখানে গিয়ে দেখি অন্য একজন পাত্র যিনি অনেক গরীব। তার ঘরের এ অবস্থা। আসরের আজান হয়। আমি আর মা প্রথম ঘরে চলে আসি। মা নামাজ পরে উনাদের সাথে গল্প করছিলেন, আমি মনে মনে ভয় পাচ্ছিলাম যে বাসায় যাব কিভাবে এরকম পথ দিয়ে। এরমধ্যে দেখি আমার ভাইয়া চলে এসেছে আমাদের নেওয়ার জন্য। চমি নামাজে দাড়াই। নামাজ পড়তেই আছি খুব মনোযোগ দিয়ে। ভেবেছি আমার ভাইয়া রাগ করবে কিন্তু ভাইয়া রাগ করেনি এজন্য আরও মনোযোগ দিয়ে নামাজ পড়ছিলাম। এ মধ্যেই ঘুম ভেঙে যায়।

বি.দ্র: স্বপ্নে যে ছেলের বাসা দেখতে গিয়েছি তারা সময় নিচ্ছে বিয়ের জন্য দু'পক্ষই রাজি কিন্তু সময়ের জন্য বিয়ে হচ্ছে না, ইস্তিখারায় ছেলের ব্যাপারে পজিটিভ পেয়েছি অসংখ্য বার। গিয়ে যে ছেলের ঘর দেখেছি তার সাথে আমাদের পরিবার বিয়ে দিবে না,আগেই না করে দিছে।
সেদিন রাতে আমি এশার নামাজ না পড়ে ঘুমিয়েছি। এস্বপ্নের ব্যাখ্যা কি?

৩. উস্তদ ছেলের ব্যাপারে ই্সেখারা করে পজিটিভ রেজাল্ট পেয়েছি অনেক বার। তারাও পজিটিভ কিন্তু তারা বলতেছে যে, ৫ মাস সময় মোহরানা জমাবে এবং তাদের মেয়ের পরীক্ষা এজন্য বিয়ে করাবে না। এখন এসময় কী করা উচিত? তারা আকদ ও করে রাখবে না। যা করবে একসাথে।
আমাদের কী করা  উচিত? বা কী করলে বিয়েটা সহজ হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (662,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে  এসেছে

أن عبد الله بن عمر يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول ( كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته الإمام راع ومسؤول عن رعيته والرجل راع في أهله وهو مسؤول عن رعيته والمرأة راعية في بيت زوجها ومسؤولة عن رعيتها والخادم راع في مال سيده ومسؤول عن رعيته

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ বলেন-আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন-প্রতিটি ব্যক্তিই দায়িত্বশীল। প্রতিটি ব্যক্তিই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ইমামগণ দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষগণ তাদের পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। মহিলাগণ স্বীয় স্বামীর গৃহের দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। দাস-দাসীগণ দায়িত্বশীল তার মনিবের সম্পদের ব্যাপারে, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

(সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৮৫৩
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৮২৮
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৪৮৯
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৯৩০
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৪৯৫
মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৫৩৭৭
মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২৯৫১
মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-৭৪৫
মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১০৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনারা বাবাকে যথাযথ ভাবে বুঝাবেন,পরকালের শাস্তির ব্যাপারে বুঝাবেন,নিজের পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে তাদের বুঝাবেন।

আপনার বাবাকে অবশ্যই এই পরকিয়া থেকে হটানোর যথাযথ চেষ্টা করবেন।
পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।

সেই মেয়েটির সাথে কথা বলা,যোগাযোগ  করার যাবতীয় রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।

আপনার মার জন্য আরো করনীয় সম্পর্কে জানুনঃ- 

আপনার বাবা যেসব দান করছেন,এগুলোর কোনোটির ছওয়াব তার হবেনা।

আপনার বাবা আপনার মায়ের উপর ও আপনাদের উপর যেসব জুলুম করেছেন,মুরব্বিদেরকে জানিয়ে এর সমাধান করা না গেলে এর জন্য আপনারা চাইলে আইনি সহায়তাও নিতে পারেন।

(০২)
আপনার বিবাহ আসন্ন ইনশাআল্লাহ।
নির্দিষ্ট সেই ছেলের সাথে বিবাহ হওয়ার অনেকটাই সম্ভাবনা রয়েছে।
,
তবে এটি পুরোপুরি এমনই হবে,এর খেলাফ হবেনা,বিষয়টি এমন নহে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সেই ছেলের সাথে বিবাহ না হয়,তাহলে পরামর্শ থাকবে অভিভাবকদের বিপক্ষে কোনো কাজ না করার।  

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনি আপনার অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করুন  তারা যদি চায় এ পাঁচ মাস অপেক্ষা করবে, তাহলে অপেক্ষা করতে পারেন। আর যদি তারা এ পাঁচ মাস অপেক্ষা না করতে চান, সেক্ষেত্রে অন্যত্রে পাত্র দেখতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...