وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তাআলা বলেন,
زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء
মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)
আল্লাহ তা'আলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেনঃ-
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﺃَﻗِﻤْﻦَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗِﻴﻦَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺃَﻃِﻌْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﺬْﻫِﺐَ ﻋَﻨﻜُﻢُ ﺍﻟﺮِّﺟْﺲَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻳُﻄَﻬِّﺮَﻛُﻢْ ﺗَﻄْﻬِﻴﺮًﺍ
তরজমাঃ তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা-আহযাব-৩৩)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ
আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
হযরত উম্মে হুমাইদ আস সাআদী রাযি. থেকে বর্ণিত, একবার তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাই। নবী করীম ﷺ উত্তরে বললেন,
قَدْ عَلِمْتُ أَنَّكِ تُحِبِّينَ الصَّلاةَ مَعِي وَصَلاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ وَصَلاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلاتِكِ فِي دَارِكِ وَصَلاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ وَصَلاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلاتِكِ فِي مَسْجِدِي قَالَ فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتَّى لَقِيَتْ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
‘আমি ভালো করেই জানি, তুমি আমার পিছনে নামাজ আদায় করতে চাও। কিন্তু তোমার জন্য তোমার রুমে নামাজ আদায় করা অন্য রুমে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার ঘরের কোনো রুমে আদায় করা বাড়িতে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় করা কওমের (এলাকার ) মসজিদে আদায় করার চেয়ে উত্তম। আর তোমার কওমের (এলাকার ) মসজিদে নামাজ আদায় করা আমার পিছনে নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম। এরপর ঐ মহিলা তার অন্ধকার কুঠরিতে নামাজের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে নেয়। এবং মৃত্যু পর্যমত সেখানেই নামাজ আদায় করতে থাকে।’ (মুসনাদে আহমাদ ৩৭/৪৫)
শরীয়তের বিধান হল নারীরা ঘর থেকে বের হবে না। তবে প্রয়োজনবশত ঘর থেকে বের হতে হলে সেক্ষেত্রে পরিপূর্ণ পর্দা করে ঘর থেকে বের হবে এবং প্রয়োজন পূরণ করেই ঘরে ফিরে আসবে। অহেতুক বাইরে থাকবে না।
কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন,
একজন নারীর জন্য এভাবে দোকানে বসে পরপুরুষদের নিকট কেনাবেচা করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এতে নানা ফেতনায় জড়িয়ে পড়ার পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যথাসম্ভব কেবল মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে মার্কেট থাকলে সেখানে দোকানদারী করার চেষ্টা করবে। (যেমন: সৌদি আরবে বিদ্যমান রয়েছে) অথবা নিজ ঘরে বসে কাপড় সেলাই, হস্তশিল্প, অনলাইন ব্যবসা ইত্যাদি বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন করবে।
তবে এমন সুযোগ না থাকলে এবং তার জীবন যাপনের জন্য দোকানে বসা ছাড়া বিকল্প না থাকলে নিজের দ্বীন, চরিত্র ও সম্ভ্রম রক্ষা করে শরীয়তের পর্দা ঠিক রেখে দোকানে কাজ করতে পারে।
কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন,
ইসলামের প্রথম যুগে মহিলাগণ ব্যবসা করতেন। ব্যাবসা নারী পুরুষ সকলের জন্যই জায়েজ
কিন্তু পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর এবং পর পুরুষের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ হওয়ার পর মহিলাদের জন্য ব্যবসা নিরুৎসাহিত করা হয়। কেননা এতে হালালের পথ ধরে হারামের অনুপ্রবেশ ঘটার আশংকা দেখা দেয়। বর্তমান যুগে যে ফিৎনা মহামারী আকার ধারণ করেছে। অতএব মুসলিম মহিলাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়ত নারীদের পর্দা করার উপর জোর দেয় এবং শরীয়তের প্রয়োজন ছাড়া তাদের ঘর থেকে বের হওয়াকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। এমনকি নামাজের ক্ষেত্রেও, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মহিলাদের ঘরে নামাজ পড়া পছন্দ করেছিলেন এবং তাদের তা করতে উৎসাহিত করেছিলেন।
একজন মহিলা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বললেন, "আমি আপনার পিছনে মসজিদে নববীতে নামাজ পড়তে পছন্দ করি।" আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, "হ্যাঁ, আমি জানি, তবে আপনার নিজের ঘরে নামাজ পড়াই উত্তম।" এছাড়াও, একজন মহিলাকে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং তার ভরণপোষণ তার পিতা বা স্বামীর উপর ফরজ করা হয়েছে; যাতে ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন না হয়। যদি বিয়ের আগে তার নিজের টাকা না থাকে, তাহলে তার ভরণপোষণ তার পিতার উপর ফরজ করা হয় এবং বিয়ের পরে, তার ভরণপোষণ তার স্বামীর উপর ফরজ করা হয়। অতএব, অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যেও একজন মহিলার ঘর থেকে বের হওয়া জায়েজ নয়।
তবে, যদি কোনও মহিলার উপর খুব চাপ থাকে এবং অন্য কোনও উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকে, তাহলে এই ক্ষেত্রে মহিলার ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ থাকবে, তবে এই ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ যে মহিলাটি সম্পূর্ণ পর্দা করে ঘর থেকে বের হন, কোনও নন-মাহরামের সাথে কথা না বলেন, কারও সাথে নির্জনতা জড়িত এমন কোনও কাজ না করেন।
তবে শুধুমাত্র দোকান চালানোর উদ্দেশ্য "কেবল আয় বৃদ্ধি করা" হয়,নিজের নাফকা ভরনপোষণ কোনও সমস্যা না থাকে,সেক্ষেত্রে নারীদের দোকান চালানো কোনোক্রমেই জায়েজ নেই।