ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হাঁচিদাতা হাঁচি দেবার পর পড়বে আলহামদুলিল্লাহ। আর যে ব্যক্তি শুনবে সে পড়বে “ইয়ারহামুকাল্লাহ”। ইয়ারহামুকাল্লাহ শুনার পর হাঁচিদাতা আবার পড়বে ইয়াহদীকুমুল্লাহু ওয়াওছলিহু বালাকুম”।আর যদি হাঁচিদাতা “আলহামদুলিল্লাহ” না বলে তাহলে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলার বিধান নেই।ইচ্ছেকৃত হাইতোলা ভাল নয়। হাইকে যথা সম্ভব রুখে রাখার চেষ্টা করা উচিত। তবে যদি এসেই যায়, তাহলে মুখে হাত দিয়ে রাখবে। যাতে মুখ খোলা না থাকে। এটাই রাসূল সাঃ এর শিখানো পদ্ধতি।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ العُطَاسَ، وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ، فَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ، فَحَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يُشَمِّتَهُ، وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ: فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ، فَإِذَا قَالَ: هَا، ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ পাক হাঁচি দেয়াকে পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে অপছন্দ করেন; সুতরাং তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে এবং “আলহামদুলিল্লাহ” বললে এমন প্রত্যেক মুসলমানের উপর “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, যে হাঁচিদাতার “আলহামদুলিল্লাহ” বলা শুনেছে। আর হাই তোলা হল শয়তানের প্রভাব দ্বারা কৃত। অতএব যখন তোমাদের কারো হাই আসে তখন যথাসাধ্য তা প্রতিরোধ করবে। কেননা, কেউ হাই তোললে অর্থাৎ মুখ হা করলে শয়তান বিদ্রুপের হাসি হাসে। {মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৮৫০৮, বুখারী, হাদীস নং-৬২২৩}
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ: الحَمْدُ لِلَّهِ، وَلْيَقُلْ لَهُ أَخُوهُ أَوْ صَاحِبُهُ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَإِذَا قَالَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللَّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ “
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে এবং তার সঙ্গী মুসলমান ভাই অথবা বলেছেন সঙ্গী ব্যক্তি যেন “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলে জবাব দেয়। আর যখন জবাবদাতা হাঁচিদাতাকে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলে, তখন হাঁচিদাতা যেন “ইয়াহদীকুমুল্লাহু ওয়াইয়ুছলিহু বালাকুম” বলে। {বুখারী, হাদীস নং-৬২২৪}
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ، فَلْيُمْسِكْ بِيَدِهِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ»
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কারো হাই আসে, তখন সে যেন নিজের হাত দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখে। নতুবা শয়তান তার মুখের ভিতরে চলে যায়। {মুসলিম, হাদীস নং-২৯৯৫}(সংগৃহিত)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নামাযরত অবস্থায় হাঁচি আসলে তখন হাঁচির দু’আ মনে মনে পড়া উচিৎ এমনকি দু’আ না পড়াই উত্তত। তবে যদি কেউ হাঁচির দেয়ার পর আল-হামদুলিল্লাহ বলে ফেলে, তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا رِفَاعَةُ بْنُ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيُّ، عَنْ عَمِّ، أَبِيهِ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَطَسْتُ فَقُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى . فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ فَقَالَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ قَالَهَا الثَّانِيَةَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَلَمْ يَتَكَلَّمْ أَحَدٌ ثُمَّ قَالَهَا الثَّالِثَةَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ " . فَقَالَ رِفَاعَةُ بْنُ رَافِعِ ابْنِ عَفْرَاءَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " كَيْفَ قُلْتَ " . قَالَ قُلْتُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ مُبَارَكًا عَلَيْهِ كَمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدِ ابْتَدَرَهَا بِضْعَةٌ وَثَلاَثُونَ مَلَكًا أَيُّهُمْ يَصْعَدُ بِهَا " .
রিফা'আ ইবনু রাফি' (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে নামায আদায় করছিলাম। হঠাৎ আমার হাঁচি বের হল। আমি বললাম, মুবারাকান আলাইহি কামা ইউহিববু রবরুনা ওয়া ইয়ারদা।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায শেষ করে ফিরে বসলেন তখন প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? কেউ কোন সাড়া শব্দ করল না। তিনি দ্বিতীয় বার প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? এবারও কেউ কোন কথা বলল না। তিনি তৃতীয় বার প্রশ্ন করলেনঃ নামাযের মধ্যে কে কথা বলেছে? (রাবী) রিফা'আহ ইবনু রাফি ইবনু আফরাআ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কথা বলেছি। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কিভাবে বললে? রাবী বলেন, আমি বলেছি, "আল্লাহর জন্য অশেষ প্রশংসা, পবিত্রময় প্রশংসা, বারকাতময় প্রশংসা (এবং প্রশংসাকারীর জন্য) বারকাতময় প্রশংসা যা আমাদের প্রতিপালক ভালবাসেন ও পছন্দ করেন।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি দেখছি তিরিশের বেশি ফিরিশতা তাড়াহুড়া করছে কে কার আগে এটা নিয়ে উপরে উঠবে। (তিরমিজি ৪০৪ সহীহ আবু দাউদ- ৭৪৭, মিশকাত— (৯৯২)।
«رَجُلٌ عَطَسَ فَقَالَ الْمُصَلِّي: يَرْحَمُك اللَّهُ تَفْسُدُ صَلَاتُهُ. كَذَا فِي الْمُحِيطَيْنِ وَلَوْ قَالَ الْعَاطِسُ يَرْحَمُك اللَّهُ وَخَاطَبَ نَفْسَهُ لَا يَضُرُّهُ. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ وَلَوْ عَطَسَ فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ: آخَرُ يَرْحَمُك اللَّهُ فَقَالَ الْمُصَلِّي: آمِينَ تَفْسُدُ. كَذَا فِي مُنْيَةِ الْمُصَلِّي وَهَكَذَا فِي الْمُحِيطِ. وَلَوْ عَطَسَ فَقَالَ لَهُ الْمُصَلِّي الْحَمْدُ لِلَّهِ لَا تَفْسُدُ؛ لِأَنَّهُ لَيْسَ بِجَوَابٍ وَإِنْ أَرَادَ بِهِ جَوَابَهُ أَوْ اسْتِفْهَامَهُ فَالصَّحِيحُ أَنَّهَا تَفْسُدُ هَكَذَا فِي التُّمُرْتَاشِيِّ وَلَوْ قَالَ الْعَاطِسُ لَا تَفْسُدُ صَلَاتُهُ وَيَنْبَغِي أَنْ يَقُولَ فِي نَفْسِهِ وَالْأَحْسَنُ هُوَ السُّكُوتُ. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ فَإِنْ لَمْ يَحْمَدْ فَهَلْ يَحْمَدُ إذَا فَرَغَ؟ فَالصَّحِيحُ أَنَّهُ يَحْمَدُ فَإِنْ كَانَ مُقْتَدِيًا لَا يَحْمَدُ سِرًّا وَلَا عَلَنًا فِي قَوْلِهِمْ. كَذَا فِي التُّمُرْتَاشِيِّ.» - «الفتاوى الهندية» (1/ 98)
এবং টয়লেটরত অবস্থায় হাঁচি আসলে মনে মনে আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে।
বিপদ দেখা দিলে কি নামাজ ভাংগা যাবে। নিজের জান মালের কোনো প্রকার ক্ষতির আশংকা থাকলে তখন নামায ভঙ্গ করা যাবে।