আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ।

১.আমার ডিভোর্স হওয়ার পরে দেনমোহরের দুই লাখ টাকা IFIC ব্যাংকে রাখা আছে। সেখান থেকে প্রতি মাসে লাখে ৮৫০ টাকা মুনাফা আসার কথা। আমি বলছিলাম যে সুদ গ্রহণ করবো না যার জন্য অল্প পরিমাণে মুনাফা আসছে সেটা কি হালাল হবে? আমার ফ্যামিলি আমার কোনো ভরণপোষণ দেই না যার জন্য ওই টাকা টা আমার অনেক জরুরী।

২. আমি যদি মেকআপ প্রোডাক্টস বিজনেস এ গায়রে মাহরাম কাস্টমার বা রাইডার এর সাথে ফোন কলে কথা না বলে ম্যাসাজে প্রয়োজনীয় কথা বলি তাহলে কি সেটা জায়েয হবে? আমার নিজের কোনো মাহরাম নেই বা মাহরাম আত্মীয় নাই যে আমার হয়ে কিছু করবে,, নিজের কাজ নিজের একা করা লাগবে। আর প্রোডাক্টস এর ভিডিও করে সেটাতে হালাল নাশিদ লাগিয়ে আপলোড করা কি জায়েজ হবে? সেটা থেকে আসা মনিটাইজেশন কি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (666,510 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান মতে সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান উভয়ই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ। 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " أيها الناس، إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا، وإن الله أمر المؤمنين بما أمر به المرسلين، فقال: {يا أيها الرسل كلوا من الطيبات واعملوا صالحا، إني بما تعملون عليم} [المؤمنون: ٥١] وقال: {يا أيها الذين آمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم} [البقرة: ١٧٢] ثم ذكر الرجل يطيل السفر أشعث أغبر، يمد يديه إلى السماء، يا رب، يا رب، ومطعمه حرام، ومشربه حرام، وملبسه حرام، وغذي بالحرام، فأنى يستجاب لذلك؟ "

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)
তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?” (সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মুনাফা গ্রহন হারাম।
আপনি চাইলে সেই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে ব্যবসায় খাটিয়ে লাভ নিতে পারেন।

(০২)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
edited by
১. আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ আমার লেখায় একটু ভুল আছে। আমি টাকা রাখার আগেই বলে নিছিলাম যে কোনো প্রকার সুদ গ্রহণ করবো না, সুদ ছাড়া হালাল মুনাফা চাই। এই জন্য তিন বছর ডিপোজিট মেয়াদে ১২% মুনাফা দিচ্ছে আর উনারা বলছিলো যে এটা হালাল মুনাফা আসবে। কারণ আমার জানামতে IFIC ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে। আমি স্টুডেন্ট বলে ব্যাংকের বিষয়ে আসলে বুঝি না। এখন এটা দিয়েই আমি পড়াশোনার খরচ চালাই আমার ফ্যামিলি কোনো ভাবেই আমার ভরণপোষণ দেই না। আমি কি করতে পারি?? 

২. এই টাকা কি ব্যাংকে যেভাবে আছে ঐভাবে রাখতে পারি তিন বছর? তিন বছর পরে কি ব্যবসায়িক কাজে লাগালে হালাল হতে পারে? নাকি ওটা একেবারে বন্ধ করা উচিৎ। নাকি আমার কোনো ইনকাম সোর্স না আসা পর্যন্ত আমি ব্যবহার করতে পারি। প্লীজ উস্তাদ জানাবেন সবগুলার উত্তর।
by (666,510 points)
(০১)
হালাল মুনাফা কোনোভাবেই হবেনা।

(০২)
আপনি টাকাটি ওইভাবেই ব্যাংকে রাখতে পারেন। টাকা উত্তোলনের সময় যে মুনাফা তারা দিবে, সেই মুনাফা আপনি গরীব মিসকিনদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিবেন।

তিন বছর পর আপনি চাইলে সে টাকায ব্যবসার কাজে লাগাতে পারেন।

তবে মুনাফার এক টাকাও আপনি ব্যবসার কাজে লাগাতে পারবেন না।

সেই টাকা পুরোপুরি গরিব মিসকিনদের মাঝে সদকাহ করে দিতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...