আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমাকে অনেক সময় আত্নীয় গায়রে মাহরাম (যেমন কাজিন) এবং অনাত্মীয় গায়রে মাহরাম দাওয়াত করে থাকে, যেখানে নারী পুরুষ পরিপূর্ণ পৃথক স্থানে আপ্যায়িত হয় বা হয় না। তখন নারী পুরুষের জন্য আলাদা আপ্যায়ন এর ব্যবস্থা থাকে তখন কি আমি দাওয়াত গ্রহণ করতে পারবো? যেহেতু এক বান্দার উপর অপর বান্দার যেসব অধিকার রয়েছে তার মধ্যে দাওয়াত গ্রহণ অন্যতম?

1 Answer

0 votes
ago by (657,690 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যদি কোন ফিতনার শংকা না থাকে, এবং সফরের দূরত্ব না হয়, তাহলে নারীদের জন্য পর্দার সাথে ঘরের বাইরে বের হওয়া জায়েজ আছে।

তবে বাসায় পুরুষ থাকা অবস্থায় বের হবে না।

আর যদি সফরের দূরত্বে কোথাও যায়, তাহলে অবশ্যই পর্দার সাথে সাথে মাহরামও সাথে থাকতে হবে।

عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}

স্বামীর উপস্থিতিতে বাহিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারা অন্য মাহরামদের সহযোগিতা নিতে হবে বা অন্য কাউকে দিয়ে বাজার করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

তবে স্বামীর অনুমতিক্রমে শহরের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্ত্ত ক্রয়ের জন্য বাধ্যগত অবস্থায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকলে মুখমন্ডলসহ সমস্ত শরীর আবৃত করে বাজারে যেতে পারে।

এছাড়া সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী- ‘নারী হ’ল গোপন বস্ত্ত। যখন সে বের হয়, শয়তান তার পিছু নেয়’ 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার আত্মীয়-স্বজন যদি আপনাকে দাওয়াত দেয়, সেক্ষেত্রে সেই দাওয়াতে অংশগ্রহণ যেহেতু জরুরী, তাই মাহরাম পুরুষ সহকারে আপনি সে দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবেন।

তবে আপনার আত্মীয়-স্বজন নয় এমন কেউ যদি দাওয়াত দেয়, সেক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সে দাওয়াতে না যাওয়ার চেষ্টা করবেন,অগত্যা যেতেই হলে আপনি মাহরাম পুরুষের সাথেই সে দাওয়াতে যাবেন।

মাহরাম পুরুষ ছাড়া এভাবে দাওয়াতে যাওয়ার অনুমতি নেই।

আর যদি আপনার মাহরাম পুরুষ (স্বামী,বাবা,ভাই) বাসায় না থাকে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে দাওয়াতে যেতে হলে,এমতাবস্থায় যদি কোন ফিতনার শংকা না থাকে,রাস্তা ও দাওয়াতের স্থান নিরাপদ থাকে, এবং সফরের দূরত্ব না হয়,সেক্ষেত্রে মাহরাম পুরুষ এর অনুমতি স্বাপেক্ষে দিনের বেলা চেহারা হাত পা সহ পরিপূর্ণ পর্দা করে যেতে হবে।

গায়রে মাহরাম দের সাথে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলার ধরুন আপনার গুনাহ হবে।

এক্ষেত্রে কন্ঠ বিকৃত করার চেষ্টা করা অথবা মুখের উপর হাত রেখে কথা বলার চেষ্টা করা উত্তম।

তদুপরি আপনি যদি এভাবে কথা না বলেন বরং সাধারণভাবে কথা বলেন, তার দারুন আপনার গুনাহ হবে না।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...