আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)

"আর আল্লাহ যখন বলবেন, ‘হে মারইয়ামের পুত্র ঈসা, তুমি কি মানুষদেরকে বলেছিলে যে, ‘তোমরা আল্লাহ ছাড়া আমাকে ও আমার মাতাকে ইলাহরূপে গ্রহণ কর?’ সে বলবে, ‘আপনি পবিত্র মহান, যার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার জন্য সম্ভব নয়। যদি আমি তা বলতাম তাহলে অবশ্যই আপনি তা জানতেন। আমার অন্তরে যা আছে তা আপনি জানেন, আর আপনার অন্তরে যা আছে তা আমি জানি না; নিশ্চয় আপনি গায়েবী বিষয়সমূহে সর্বজ্ঞাত’। 

‘আমি তাদেরকে কেবল তাই বলেছি, যা আপনি আমাকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর ইবাদাত কর। আর যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি তাদের উপর সাক্ষী ছিলাম। অতঃপর যখন আপনি আমাকে উঠিয়ে নিলেন তখন আপনি ছিলেন তাদের পর্যবেক্ষণকারী। আর আপনি সব কিছুর উপর সাক্ষী। 

যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করেন তবে তারা আপনারই বান্দা, আর তাদেরকে যদি ক্ষমা করেন, তবে নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ "

[সূরা আল মায়িদা, আয়াত ১১৬-১১৮]

এখানে কিন্তু খ্রিষ্টপূজারী প্যাগানদের কথাই বলা হচ্ছে, কনটেক্সট অনুসারে?

1 Answer

0 votes
ago by (657,690 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اِنۡ تُعَذِّبۡہُمۡ فَاِنَّہُمۡ عِبَادُکَ ۚ وَ اِنۡ تَغۡفِرۡ لَہُمۡ فَاِنَّکَ اَنۡتَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱۱۸﴾

আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তবে তারা তে আপনারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তবে আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(সুরা মায়েদা ১১৮)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয় কেয়ামতের দিন তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে এবং কিছুসংখ্যক লোককে পাকড়াও করে বাম দিকে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলবঃ আমার উম্মত! তখন আমাকে বলা হবেঃ আপনি জানেন না আপনার পরে তারা কি সব নতুন পদ্ধতির প্রচলন করেছে। তখন আমি বলবঃ যেমন নেক বান্দা বলেছেন, “এবং যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি ছিলাম তাদের কাজকর্মের সাক্ষী, কিন্তু যখন আপনি আমাকে তুলে নিলেন তখন আপনিই তো ছিলেন তাদের কাজকর্মের তত্ত্বাবধায়ক এবং আপনিই সব বিষয়ে সাক্ষী। আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তবে তারা তো আপনারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তবে আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [বুখারীঃ ৪৬২৬]

হাদীসে এসেছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এ আয়াতখানি পাঠ করে হাত উঠালেন এবং দোআ করে বললেনঃ হে আল্লাহ! আমার উম্মাত, আমার উম্মাত! এবং কাঁদতে থাকলেন। তখন আল্লাহ্ তাআলা জিবরীলকে বললেনঃ মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং তাকে জিজ্ঞাসা কর - যদিও তিনি সর্ববিষয়ে ভাল জানেন- কেন তিনি কাঁদছেন? জিবরীল তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন আর রাসূলও তার উত্তর করলেন। তখন আল্লাহ আবার বললেনঃ হে জিবরীল, মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং তাকে বল, আমরা আপনার উম্মাতের ব্যাপারে আপনাকে সন্তুষ্ট করে দেব; অসন্তুষ্ট করব না। [মুসলিমঃ ২০২]

হাদীসে আরও এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার কিছু উম্মতকে বাম দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, আমি তখন ‘আমার সাথী’ বলতে থাকব, তখন আমাকে বলা হবে, আপনি জানেন না, তারা আপনার পরে দ্বীনের মধ্যে নতুন কি কি পন্থা উদ্ভাবন করেছিল। আমি তখন সেই নেক বান্দার মত বলব, যিনি বলেছিলেন, আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তবে তারাতো আপনারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তবে আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [বুখারী: ৪৬২৫; মুসলিম: ৩০২৩]

قَالَ اللّٰہُ ہٰذَا یَوۡمُ یَنۡفَعُ الصّٰدِقِیۡنَ صِدۡقُہُمۡ ؕ لَہُمۡ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَبَدًا ؕ رَضِیَ اللّٰہُ عَنۡہُمۡ وَ رَضُوۡا عَنۡہُ ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۱۱۹﴾ 

আল্লাহ বলবেন, এ সে দিন যেদিন সত্যবাদিগণ তাদের সত্যের জন্য উপকৃত হবে, তাদের জন্য আছে জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট, এটা মহাসফলতা।
(সুরা মায়েদা ১১৯)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত আয়াতের ব্যখ্যাঃ
তাফসীর ইবনে কাসীর,

এই আয়াত অন্তর্নিহিত অর্থ ব্যক্ত করে—ইহকাল বা আখিরাত, যে কোনো অবস্থায় আল্লাহর সিদ্ধান্তই সর্বোচ্চ, এবং তিনি যা চান তাই করবেন।

এটি নবী (আঃ)-এর দয়া ও বিনয় প্রকাশের একটি নজিরস্বরূপ দৃষ্টান্ত; ঈসা (আঃ) কিয়ামতের দিনে বলবেন, “আমি শুধু আমার ওপর যা অবত্বায় করা হলো, তা করেছি—‘আল্লাহর ইবাদত করো…’।” এরপর তিনি এই আয়াতে প্রকাশিত দোয়াটাই পাঠ করবেন ۔

তিনি এটিও জানান যে—যদি আল্লাহ তাদের শাস্তি দেন, তাহলে তারা তাঁরই সৃষ্টি; আবার যদি ক্ষমা করেন, তবে তাঁর ক্ষমা ও শক্তি দ্ব্যর্থহীন ।

অন্য তাফসীরের কিতাবে এসেছে,

أن الله له الحق في تعذيب من يشاء من عباده إذا استحقوا ذلك، وله الحق في مغفرة من يشاء منهم. وفي ذلك إشارة إلى أن الله تعالى هو العزيز الذي لا يُغالب، والحكيم في أفعاله وقراراته. 

নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখেন, যদি তারা তা প্রাপ্য হয়, এবং তিনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করার অধিকার রাখেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা হলেন সর্বশক্তিমান যাকে পরাজিত করা যায় না, এবং তাঁর কর্ম ও সিদ্ধান্তে তিনি প্রজ্ঞাবান।

অন্য তাফসীরের কিতাবে এসেছে,

“তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই দাস; আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তুমিই পরাক্রমশালী, পরম জ্ঞানী।”
অর্থাৎ, এই আয়াত বান্দাদের সম্পূর্ণ হাত থেকে আল্লাহর ক্ষমতা ও বিচারকে প্রমাণ করে। ক্ষমা করা তাঁর দুর্বলতা নয়, বরং তাঁর পরাক্রম ও প্রজ্ঞার পরিচায়ক ।

এর পাশাপাশি উল্লেখ আছে—এই আয়াত মানব জীবনের দুর্বলতা ও আল্লাহর ক্ষমতা, প্রজ্ঞা এবং পূর্ণ কর্তৃত্বের প্রতিচ্ছবি। এবং এই আয়াতে ঈসা (আঃ)-এর বিনয় এবং দয়াশীলতা স্পষ্ট; এরাবৎ ব্যাখ্যা হিসাবে বুখারী ও মুসলিম হাদিস রয়েছে ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত দোয়াটি হযরত ঈসা আঃ তার জামানার কাফেরদের ব্যাপারে করেছেন, তার ধর্মে কাফেরদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনার দোয়া করার বৈধতা ছিল।

এজন্য তিনি এই দোয়াটি করেছিলেন তবে পরবর্তী আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে এই দোয়াটি আল্লাহতালা কবুল করেননি।

কারণ পরবর্তী আয়াত থেকে স্পষ্ট জানা যায় যে আল্লাহ তায়ালা নাজাত শুধু সত্যবাদীদেরকেই দিবেন, কাফেররা সত্যবাদী নয়, তারা রবের ক্ষেত্রে মিথ্যাবাদী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (1 point)
আমার প্রশ্ন তো এটা ছিলো না। আমার প্রশ্ন ছিলো, ঐ কাফেরদের কেন "আপনারই বান্দা" বলেছেন ঈসা (আঃ) নবী?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...