আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম। ৩ বছর আগে আমার বিয়ে হয় আমার তখন ২৫ বছর বয়স।বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছিল জন্য বাবা মা বিয়ে নিয়ে চিন্তিত ছিল এছাড়া আত্নীয় স্বজন ও প্রতিবেশিরাও অনেক রকম কথা বলত।আমি ২ জন পাত্রকে রিজেক্ট করেছিলাম উনারা নামাজ পড়েন না জন্য।এজন্য আমাকে অনেক কথাই শুনতে হয় কষ্ট করতে হয়।আমার যার সাথে বিয়ে হয় উনাকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম যে নামাজ পড়েন কিনা সে বলেছিল পড়েন উনি মাদ্রাসা ও পড়তেন ছোটবেলায় এরপর আরও ভালোভাবে জিজ্ঞেস করা হয়নি বা অন্য কথায় এ কথা ঢেকে যায় কারণ একা উনার সাথে কথা বলার সুযোগ হয়নি আমার বড়রা চলে আসায়।এটা যে কত বড় ভুল ছিল জীবনে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি বেশি কথা না বাড়িয়ে  বিয়েতে রাজি হয়ে যাই।পরিবার ও যেন হাফ ছেড়ে বাচে আমার বিয়ে হয়ে গেলে।

কিন্তু বিয়ের পর দেখলাম যে উনি এক ওয়াক্ত নামাজ ও পড়েন না জুময়ার নামাজেও সবদিন যান না।আমি বা কেউ বললে মাঝে মাঝে পড়েন। সবসময় বললেও রেগে যান। আমি উনাকে মাঝে মাঝে বুঝাই কান্নাকাটি ও করি তখন বলেন যে ঠিক আছে ঠিক হয়ে যাবেন।কিন্তু হিদায়েত আল্লাহ তায়ালা না দিলে মানুষের পক্ষে কি সম্ভব? উনি কোন রোজগার ও করেন না।শশুর এর ইনকাম ও বাড়ি ভাড়ায় সংসার চলে যৌথ পরিবারেই থাকি আমি।বিয়ের আগে বলেছিলেন বাবার ব্যাবসা দেখবেন পাশাপাশি অন্য চাকরিও করবেন যেহেতু তখন মাত্র পড়ালিখা শেষ তাই সেভাবে কিছু শুরু করেন নি।কিন্তু বিয়ের পর উনার ব্যাবসার যে অংশ ছিল সেটা বিক্রি করা হয় ফলে উনার আর কোনো অংশ নেই।আর অন্য কোন চাকরি বা ব্যবসাও করেন না।কিছু দিন চাকরি করেন আবার ছেড়ে দেন।বিদেশ এ অনেক বেশি টাকার স্যালারি হলেই সে চাকরি করবেন বা লোক খাটিয়ে ব্যাবসা করবেন নিজে পরিশ্রম করতে চান না।উনি চান আমি চাকরি করি। বলেন পর্দা মেনেও আজকাল চাকরি করা যায়। উনি বেশিরভাগ সময় ই অনেক রাত করে বাড়ি ফেরেন অনেক সময় ভোর ও হয়ে যায় তবে এমন না যে উনি কোন মাদক গ্রহন করেন। বন্ধুদের সাথে গল্প করেন বা ঘুরেন মাঝে মাঝে কাজ ও করেন।কাজ বলতে অন্যদের যেহেতু উনি ফ্রি থাকেন ত উনার খালা মামা ফুপি বিভিন্ন কাযে ডাকেন উনাকে। উনি সন্তান ও নিতে চাননা।উনার বাবার ৩০ লাখ টাকা ঋন আছে। উনি বলেন তুমি ও বেশি বেশি ইনকাম করবা আমিও করব ঋন শোধ হলে পরিস্থিতি ভালো হলে এরপর সন্তান নিব। উনাদের বাসায় পর্দা করতেও আমার অসুবিধা হয়।বিয়ের প্রথম দিকে আমাকে কোন পুরুষ ই দেখেন নি আমি মেইনটেইন করেছি কিন্তু বিভিন্ন কথা ও কারনে আমাকে এখন অনেকেই দেখেছেন।

আসলে উনার জীবনধারা ইসলামের সাথে মিলেনা।কোন ক্ষেত্রে এমন আয়ের উৎস চিন্তা করেন যা ইসলামে অনুমোদিত নয় যেমন ইউটিউব ভ্লগ ফেসবুক ভ্লগ।বর্তমান পরিস্থিতি তে প্রাক্টিসিং মুসলিম পরিবার পাওয়া সত্যিই দুষ্কর কিন্তু আমি সন্দিহান আমার নিজের ও অনাগত সন্তানের দ্বীন নিয়ে।আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি মাঝে মাঝে ২-১ ওয়াক্ত মিস ও হয় তবে খুব কম খুব জটিল কারণ ছাড়া মিস হয়না।তবে আমি নিজেকে উত্তম মুসলিম বলব না।তবে আমি চেষ্টা করি (আল্লাহ ভালো জানেন কতটুকু পারি)।আমার মনের খুব ইচ্ছা খাটি মুমিন বান্দা হওয়ার।

আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি যদিও সে দায়িত্বশীল নয় খাটি মুমিন নয়।তবুও আমার মনে হয় যেন উনাকে আমার ছেড়ে দেয়া উচিৎ নিজের কল্যানের জন্য আল্লাহকে ভালোবেসে।আমি যদি পথভ্রষ্ট হয়ে যাই। আবার আমার মনে হয় আমার স্বামী আমাকে ভরনপোষণ দিক সামান্য কিছু উনি আরেকটা বিয়ে করে তার সাথে থাকুক আমি আমার মত দ্বীন পালন করব মাঝে মাঝে দেখা করব উনার সাথে। নারী ত আর মাহরাম ছাড়া অভিভাবক ছাড়া থাকতে পারেন না।উনাকে ছেড়ে আবার বিয়ে করলে যে মুমিন স্বামী পাব তার ত কোন নিশ্চয়তা নেই। আবার তালাক ও ইসলাম উৎসাহিত করে না।

আসলে ঠিক কি করা উচিৎ আমার বা এ বিষয়ের সমাধান কি কুরআন সুন্নাহর আলোকে সে ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
ago by (656,910 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ ترك الصَّلَاة» . رَوَاهُ مُسلم

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মু’মিন) বান্দা ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করা।

সহীহ : মুসলিম ৮২, আবূ দাঊদ ৪৬৭৮, নাসায়ী ৪৬৪, তিরমিযী ২৬২০, ইবনু মাজাহ্ ১০৭৮।


এই হাদীসের ব্যখ্যাঃ-

উপরোক্ত হাদীসটি দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করে যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জন কুফরীকে অনিবার্য করে দেয়। সকল মুসলিম মনীষীর ঐকমত্যে, বিশ্বাস সহকারে কেউ সালাত বর্জন করলে সে কাফির হয়ে যাবে। তবে সালাত আদায় ওয়াজিব মনে করে ও অলসতাবশত কেউ সালাত বর্জন করলে তার কুফরীর ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।

★কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ঐ ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে। 

তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, এমন ব্যক্তি কাফের হবে না। তাকে ফাসেক বলা হবে। তাদের দলিল হল, হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘আল্লাহ তাআলা তো এমন ব্যক্তির প্রতি জাহান্নাম হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২৫]

উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে, শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললেই মানুষ কোনো এক সময় জান্নাতে যেতে পারবে। নামাজের কথা এই হাদিসে বলা হয়নি। সুতরাং নামাজ না পড়লে যদি ব্যক্তি কাফেরই হয়ে যায় তাহলে সে তো জান্নাতে যেতে পারত না।

আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২০]

এই হাদিস থেকেও বুঝা যাচ্ছে, নামাজ না পড়লে ব্যক্তি কাফের হবে না। যদি কাফের হয়ে যেত তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নামে পাঠাবেন। জান্নাতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অথচ হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে তাকে জাহান্নামে দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
সুতরাং নামাজ অস্বীকারকারী নয় এমন ব্যক্তি নামাজ না পড়লে কাফের হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার স্বামী কাফের হয়ে যায়নি, তাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রয়েছে।

এক্ষেত্রে আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে, আপনি আপনার স্বামীকে এক/তিন চিল্লায় পাঠিয়ে দিবেন এবং তার জন্য সর্বদা হেদায়াতের দোয়া করতে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ আপনি কামিয়াব হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...