আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমার স্বামীর বর্তমান আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ যাচ্ছে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত। শুধু কোন রকম খেয়ে পড়ে বেচে থাকার মত। স্বামীর আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আত্মীয় স্বজনরাসহ নিজের আপন মা বাবাও তেমন যোগাযোগ রাখেনি। আমার একজন নিকটাত্মীয় তিনি প্রতি মাসে আমাদেরকে কিছু আর্থিক সাহায্য করে থাকে। কিন্তু তার উপার্জন মিশ্র হারামের অংশ বেশি। এটা আমি সম্প্রতি জানতে পেরেছি। তার মিশ্র উপার্জন জানার পর থেকে আমি তাকে সরাসরি টাকা দিতে বা বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী কিনে দিতে মানা করেছি  কিন্তু সে আমাকে তার উপার্জনের হালাল অংশ থেকে আর্থিক সাহায্যের কথা বললেও সেই কথা সে রাখেনা সে একপ্রকার জোর করে তার হারাম উপার্জন থেকে আমাদেরকে আর্থিক সাহায্য করে। আমি তার সাহায্য নিতে চাই না কিন্তু সে বাসায় এসে বসে থাকে বাজার করে দেয়ার জন্য বা অনেক সময় বাসায় খাবার নিয়ে আসে। তার উপার্জন মিশ্র এই বিষয়টি আমার স্বামীকে জানানোর পর সে বলেছে খুব প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া তার কাছ থেকে কোনকিছু নিতে না। আর সে আমাদেরকে আর্থিক যে সহায়তা করেছেন সেটার প্রতিটা টাকা আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থা ভালো হলে তাকে সব টাকা ফেরত দেয়া হবে যেহেতু সে আমাদেরকে আর্থিক সাহায্য করেছে এবং এখনও করছেন। তার দেয়া আর্থিক সাহায্যের হিসেব একটা খাতায় লিখে রাখি যেন আল্লাহ তায়ালা আমাদের অবস্থা ভালো করলে নিকট আত্মীয়কে যেন তার সব মিশ্র উপার্জনের টাকা ফেরত দিতে পারি।
১.এখন আমার প্রশ্ন হলো, নিকট আত্মীয়ের মিশ্র উপার্জনে হারামের অংশ বেশি হওয়ার কারনে সে যেই আর্থিক সাহায্য আমাদেরকে করছে সেই টাকাটা আমরা যদি ভবিষ্যতে আমাদের অবস্থা উন্নতি হলে তাকে ফেরত দেই তাহলে কি সেটা জায়েজ হবে?  নাকি এই আর্থিক সাহায্যের হারাম টাকা গরীবদেরকে দিয়ে দিবো?
২.আমার একটা ছেলে সন্তান আছে আল্লাহ চাহেন তো ওকে দ্বীনের পথে পড়ানোর নিয়ত আছে এজন্য আমি চাই সকল হারাম থেকে নিজেকে মা হিসেবে বাচিয়ে রাখতে কিন্তু কেন জানি মনে হয় হারাম থেকে আমি যতই বাচতে চাচ্ছি শয়তান মনে হয় আমাকে হারামে জড়ানোর নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থায় খারাপ এর পিছনে কারন হলো সে না জেনে সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়েছিল এখন সুদের টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংক এনজিপ থেকে টাকা লোন নিয়েছে এখন সে মুদি দোকান চালায় আর কিস্তির মাধ্যমে লোন শোধ করে  এই অবস্থায় কি স্বামীর ইনকাম হালাল বলা যাবে?
৩. স্বামীর ইনকাম পুরোপুরি হালাল কিনা এটা নিয়ে মনের মধ্যে সন্দেহ চলে আর অন্যদিকে নিকট আত্মীয়ের জোর করে হারাম টাকায় আর্থিক সাহায্যের দয়া দেখানো এই ২ জিনিস থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই, আমি আর আমার বাচ্চা নিরুপায় আমাদের কি করা উচিত বলে দিন দয়া করে?  নিকট আত্মাীয়কে অনেকবার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেছি সাহায্য লাগবেনা কিন্তু ওনি শোনেনা,ওনি আমাদেরকে দয়া দেখাচ্ছে সেটা আমি বুঝি,কিন্তু হারাম উপার্জনের দয়া নিতে চাইনা। তার সাথে কঠোরও হতে পারছিনা তাহলে সে কষ্ট পাবে আর হয়ত বলবে এতদিন আমি খাওয়াইছি সাহায্য করেছি আর এখন আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ আচরন করে। কিন্তু দুনিয়ার সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে আমার আল্লাহকে আমি হারিয়ে ফেলছি। কারো কাছ থেকে টাকা ধার কিংবা আর্থিক সাহায্য নিলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার গোলামি করতে হয়, নিকট আত্মীয়কে না কিছু বলতে পারছি আর না সহ্য করতে পারছি। সারাক্ষণ মনের মধ্যে নিজের সাথে দ্বন্দ্ব করে যাচ্ছি

আমি চিন্তা করেছি নিকটআত্মীয় জোর করে আর্থিক সাহায্য করলে সেই টাকা গুলো জমিয়ে তাকেই ফেরত দিবো নয়ত সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবকে দান করবো। আমার চিন্তা গুলোকি জায়েজ হবে?

আর স্বামী বলছে তার দেয়া আর্থিক সাহায্য গুলো খাতায় হিসেব রাখতে স্বামীর অবস্থার উন্নতি হলে তখন সবটাকা তাকে ফেরত দিবে এটা কি জায়েজ হবে?

আমাকে একটু মুক্তির পথ বলে দিন,হারাম থেকে বাচার উপায় বলে দিন। এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার পথ বাতলে দিন।
by (5 points)
আমার স্বামী এখন যাকাত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত যেহেতু তার এবং আমার কোন জমিজমা,সম্পদ, স্বর্ণ,জমানো টাকা কিছুই নেই,শুধু মুদি দোকান, দোকান থেকে যা আয় হয় প্রায় সব টাকা ব্যংক এনজিও এর লোন শোধ করতেই চলে যায়। এই অবস্থায় আমি কি আমার আত্মীয়দের দেয়া হারাম টাকার আর্থিক সাহায্যের টাকা গুলো স্বামীকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করতে পারবো?এটা কি জায়েজ হবে? 

1 Answer

0 votes
ago by (689,100 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া। নতুবা জনকল্যাণ মূলক কাজে ব্যবহার করা(জাদীদ ফেকহি মাসাঈল-৪/৫২) কিংবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।
 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪) 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1900

في الشامية: والحاصل: أنه إن علم أرباب الأموال وجب رده عليهم، وإلا فإن علم عين الحرام لايحل له ويتصدق به بنية صاحبه''. (5/99،مَطْلَبٌ فِيمَنْ وَرِثَ مَالًا حَرَامًا، ط: سعید)   فقط واللہ اعلم

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনারা যেহেতু এখন নিঃস্ব। তাই আপনার জন্য ও আপনার স্বামী ঐ আত্মীয়র হারাম মিশ্র ইনকাম থেকে গ্রহণ করতে পারবেন। কেননা আপনারা এখন ঋণে জর্জরিত। পরবর্তীতে আর ফিরিয়ে দিতে হবে না বা সদকাহ করতে হবে না।

(২) আপনার স্বামীর জন্য লোন নেয়া জায়েয হয় নাই। তবে বর্তমান ব্যবসাতে যদি থোকা ও প্রতারণা না থাকে, তাহলে আপনার স্বামীর ব্যবসা বাণিজ্য নাজায়েয হবে । 

(৩) হারাম ইনকাম থেকে কেউ হাদিয়া দিলে, তার হাদিয়া সদকাহ করে দিতে হবে। নিজে সদকাহ গ্রহণের উপযুক্ত হলে, নিজে গ্রহণ করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...