আসসালামু আলাইকুম
আমার স্বামীর বর্তমান আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ যাচ্ছে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত। শুধু কোন রকম খেয়ে পড়ে বেচে থাকার মত। স্বামীর আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আত্মীয় স্বজনরাসহ নিজের আপন মা বাবাও তেমন যোগাযোগ রাখেনি। আমার একজন নিকটাত্মীয় তিনি প্রতি মাসে আমাদেরকে কিছু আর্থিক সাহায্য করে থাকে। কিন্তু তার উপার্জন মিশ্র হারামের অংশ বেশি। এটা আমি সম্প্রতি জানতে পেরেছি। তার মিশ্র উপার্জন জানার পর থেকে আমি তাকে সরাসরি টাকা দিতে বা বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী কিনে দিতে মানা করেছি কিন্তু সে আমাকে তার উপার্জনের হালাল অংশ থেকে আর্থিক সাহায্যের কথা বললেও সেই কথা সে রাখেনা সে একপ্রকার জোর করে তার হারাম উপার্জন থেকে আমাদেরকে আর্থিক সাহায্য করে। আমি তার সাহায্য নিতে চাই না কিন্তু সে বাসায় এসে বসে থাকে বাজার করে দেয়ার জন্য বা অনেক সময় বাসায় খাবার নিয়ে আসে। তার উপার্জন মিশ্র এই বিষয়টি আমার স্বামীকে জানানোর পর সে বলেছে খুব প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া তার কাছ থেকে কোনকিছু নিতে না। আর সে আমাদেরকে আর্থিক যে সহায়তা করেছেন সেটার প্রতিটা টাকা আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থা ভালো হলে তাকে সব টাকা ফেরত দেয়া হবে যেহেতু সে আমাদেরকে আর্থিক সাহায্য করেছে এবং এখনও করছেন। তার দেয়া আর্থিক সাহায্যের হিসেব একটা খাতায় লিখে রাখি যেন আল্লাহ তায়ালা আমাদের অবস্থা ভালো করলে নিকট আত্মীয়কে যেন তার সব মিশ্র উপার্জনের টাকা ফেরত দিতে পারি।
১.এখন আমার প্রশ্ন হলো, নিকট আত্মীয়ের মিশ্র উপার্জনে হারামের অংশ বেশি হওয়ার কারনে সে যেই আর্থিক সাহায্য আমাদেরকে করছে সেই টাকাটা আমরা যদি ভবিষ্যতে আমাদের অবস্থা উন্নতি হলে তাকে ফেরত দেই তাহলে কি সেটা জায়েজ হবে? নাকি এই আর্থিক সাহায্যের হারাম টাকা গরীবদেরকে দিয়ে দিবো?
২.আমার একটা ছেলে সন্তান আছে আল্লাহ চাহেন তো ওকে দ্বীনের পথে পড়ানোর নিয়ত আছে এজন্য আমি চাই সকল হারাম থেকে নিজেকে মা হিসেবে বাচিয়ে রাখতে কিন্তু কেন জানি মনে হয় হারাম থেকে আমি যতই বাচতে চাচ্ছি শয়তান মনে হয় আমাকে হারামে জড়ানোর নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থায় খারাপ এর পিছনে কারন হলো সে না জেনে সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়েছিল এখন সুদের টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংক এনজিপ থেকে টাকা লোন নিয়েছে এখন সে মুদি দোকান চালায় আর কিস্তির মাধ্যমে লোন শোধ করে এই অবস্থায় কি স্বামীর ইনকাম হালাল বলা যাবে?
৩. স্বামীর ইনকাম পুরোপুরি হালাল কিনা এটা নিয়ে মনের মধ্যে সন্দেহ চলে আর অন্যদিকে নিকট আত্মীয়ের জোর করে হারাম টাকায় আর্থিক সাহায্যের দয়া দেখানো এই ২ জিনিস থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই, আমি আর আমার বাচ্চা নিরুপায় আমাদের কি করা উচিত বলে দিন দয়া করে? নিকট আত্মাীয়কে অনেকবার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেছি সাহায্য লাগবেনা কিন্তু ওনি শোনেনা,ওনি আমাদেরকে দয়া দেখাচ্ছে সেটা আমি বুঝি,কিন্তু হারাম উপার্জনের দয়া নিতে চাইনা। তার সাথে কঠোরও হতে পারছিনা তাহলে সে কষ্ট পাবে আর হয়ত বলবে এতদিন আমি খাওয়াইছি সাহায্য করেছি আর এখন আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ আচরন করে। কিন্তু দুনিয়ার সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে আমার আল্লাহকে আমি হারিয়ে ফেলছি। কারো কাছ থেকে টাকা ধার কিংবা আর্থিক সাহায্য নিলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার গোলামি করতে হয়, নিকট আত্মীয়কে না কিছু বলতে পারছি আর না সহ্য করতে পারছি। সারাক্ষণ মনের মধ্যে নিজের সাথে দ্বন্দ্ব করে যাচ্ছি
আমি চিন্তা করেছি নিকটআত্মীয় জোর করে আর্থিক সাহায্য করলে সেই টাকা গুলো জমিয়ে তাকেই ফেরত দিবো নয়ত সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবকে দান করবো। আমার চিন্তা গুলোকি জায়েজ হবে?
আর স্বামী বলছে তার দেয়া আর্থিক সাহায্য গুলো খাতায় হিসেব রাখতে স্বামীর অবস্থার উন্নতি হলে তখন সবটাকা তাকে ফেরত দিবে এটা কি জায়েজ হবে?
আমাকে একটু মুক্তির পথ বলে দিন,হারাম থেকে বাচার উপায় বলে দিন। এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার পথ বাতলে দিন।