আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (25 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ

আমার এই বিষয়ে এইটায় শেষ প্রশ্ন ইনশাআল্লাহ। অনুগ্রহ করে আমাকে উত্তরগুলো দিবেন যেন আমি মানসিক স্বান্তনা পাই। কেননা আই ফতোয়া ছাড়া উত্তম নসীহত দেওয়ার মতো কেউ নেই আমার। ওস্তাদগণ, অনুগ্রহ করে আমাকে উত্তরগুলো দিন।

https://ifatwa.info/118792/
https://ifatwa.info/123899/?show=123965#a123965

এই দুইটি প্রশ্ন আমার আগে করা। দুটি প্রশ্নে আমাকে সবর ও দোয়া করতে বলা হয়েছে, স্বামীকে বুঝাতে বলতে হয়েছে। কিন্তু আমি মূলত বুঝাতে গিয়ে ক্লান্ত। আবার বুঝাতে গেলেই অশান্তি সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় এক আঘাতের উপর আরেক আঘাত আমার জন্য কষ্টদায়ক। ওস্তাদ আমাকে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন অনুগ্রহ করে।

১. বিয়ের পর থেকে যে স্বামীকে সেভাবে কাছে পাওয়া হলো না, তারপর যখন ১৫ দিন করে পালি হলো এতে যেসব মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হলো, (আমার জীনের সমস্যা ছিলো),  শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে হলো, আমি কি ধরে নিবো স্বামী দিয়ে এটা আমার পরীক্ষা নিচ্ছেন আল্লাহ? এবং আল্লাহ তাআ'লা এই কষ্টের বিনিময়ে অগণিত প্রতিদান দিবেন আখিরাতে! নাকি এটা আমার কোনো পাপের আযাব...

২. আমার তাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় এটা ঠিক কতবার বলেছি, বুঝিয়েছি আমি জানি না। তারপরও তার যার সাথে থাকতে ভালো লাগে তার সাথেই অধিকাংশ সময় কাটায়। তিনি যখন দ্বিতীয় স্ত্রীর পালিতে থাকতেন, আমি ওনাকে কলে খুব কম সময়ই পেতাম। যেদিন বিয়ে করলেন সেদিন আমি জানতাম না যে বিয়ে করেছেন। আমি তার খোঁজ না পেয়ে সারাদিন পাগলের মতো কল করে গেছি, কিন্তু পাত্তা পাইনি। ওদিন থেকে মূলত আমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এরপর যখন আমার পালিতে ১৫ দিনের জন্য আসতো, ফোনে অনেক সময় কাটাতো। আমাকে তেমন করে সময় দিলে আমার এতে খারাপ লাগতো না। কিন্তু আমি শুরু থেকেই নোটিশ করে আসছি তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে অধিক সময় দেন। অথচ আমিও তার থেকে সময় আশা করি। আমার বিয়ের নয়মাস পর বিয়ে করলেন। মাসে মাসে ছুটিতে থাকতেন। দুইমাস একটানা একসাথে থাকা হয়েছে। টোটাল নয়মাস পর দ্বিতীয় বিয়ে, দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে পালি শুরু করা (আমার মানসিকভাবে খারাপ অবস্থায়ও), ওই পালিতে থাকাবস্থায় ফোন কলেও তেমন সময় না দেওয়া। আবার আমার পালিতে আসলে তাকে সময় দেওয়া, এতে আমার মন খারাপ হলে আমাক চার্জ করা, তালাক পাওয়া ইত্যাদি বিষয় আমাকে মানসিকভাবে অস্বাভাবিক করে দিয়েছে। আমার প্রোডাক্টিভিটি কমিয়ে দিয়েছে, মাথা কাজ করে না। এসব তাকে বুঝালেও লাভ হয় না।

এতদিন দুই স্ত্রী আলাদা ছিলাম। এখন একসাথে। এখন আমার পালি চলার কথা। অথচ প্রায় সারাদিন দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে থাকে, আমার সাথে রাতে ঘুমায়। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে তো এমন হয়নি, তাকে তার পালির সম্পূর্ণ সময় তাকেই দেওয়া হয়েছে।

আবার এখানে আসার আগে আমাকে বলে নিয়ে এসেছে যে দুপুরে স্ত্রীর সাথে যেই সময়গুলো কাটান তিনি একসাথে থাকাবস্থায় এমন হবে না।৷ যার যার রুমে সেই সেই থাকতে হবে, উনি ওনার অফিস রুমে। কিন্তু দুপুর তিনি তার সাথে কাটান। আমার সাথে একদিন কাটিয়েছেন।

যাইহোক আমি ফিল করতেছি এগুলো আমার সাথে ঠিক হয়নি। ওস্তাদ আদৌ কি এগুলো আমার সাথে ঠিক হয়নি নাকি এটা আমার ওয়াসওয়াসা? আমার সাথে শুধু রাত্রিযাপনের সমতা করলেই নাকি সমতা হয়ে যাবে, তাহলে আমার এমন মনে হওয়া কি অবাঞ্ছনীয় নাকি সত্যি এটা ঠিক হচ্ছে না আমার সাথে?
(তিনি ১০০% দায়িত্বশীল স্বামী। কিন্তু ভাত কাপরের চেয়েও যেইটা তার থেকে বেশি চেয়েছি, পাইনি; সময়)

এমতাবস্থায় আমি তাকে আর বুঝানোর ইচ্ছেশক্তি পাচ্ছি না। আমি তার জন্য দোয়া করবো, আমার একাকীত্বের সময়গুলো কুরআনের সাথে কাটাবো। এইযে স্বামীকে মিস করেও সবর করবো, এর বিনিময়ও নিশ্চয়ই দিবেন আল্লাহ! আর আমি যদি ওনাকে বুঝানো বন্ধ করি, তাতে আমার স্বামী সময় নিয়ে ইনসাফ যদি না করে তাতে কি আমিও দায়বদ্ধ থাকবো? মানে সে কি আমাকে কিয়ামাতে ধরতে পারবে এ নিয়ে যে কেন আমি তখন বুঝাইনি? আমি বুঝিয়েছি, কিন্তু এখন ক্লান্ত।

৩. আমাকে একটি পরামর্শ দিন যে কিভাবে আমি সারাদিন প্রোডাক্টিভ থাকবো  (মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে আমি এগুলো ঠিকমতো করতে পারি না) কিন্তু এখন আমি কাজের মধ্যে মনযোগ দিতে চাচ্ছি সম্পূর্ণ। আমার কাজগুলো সাধারণত রান্নাবান্না, ঘর গুছানো, গোসল, ইবাদাত, কুরআন তিলাওয়াত, ব্যবসার জন্য কাপর সেলাই ইত্যাদি। এসব কাজ নিয়ে আমি কিভাবে আরও প্রোডাক্টিভ হবো এবং সেল্ফ হ্যাপিনেস কাজ করবে + স্বামী নিয়ে যেই পরীক্ষায় পতিত হয়েছি তা আমার উপর মানসিক প্রেসার ফেলবে না, পরামর্শ দিন। আমি আমার বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে চাই আল্লাহর ইচ্ছায় নিজের ফুল সাপোর্টে, অন্যের সাপোর্টে নয়।

1 Answer

0 votes
by (712,680 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
একাধিক স্ত্রী থাকলে, তাদের মধ্যকার অন্ন বস্র বাসস্থান ও রাত্রিযাপন এর মধ্যে বরাবরি ওয়াজিব। সবার মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যদিও সন্ধ্যার পর থেকে ফজর পর্যন্ত সময়কে পালাক্রমে স্ত্রীদের মধ্যে বন্টন করা ওয়াজিব তথাপি কাজ না থাকরে দিনের অংশকেও বরাবরি করে বন্টন করা উচিত। এক স্ত্রীর ঘরে সন্ধ্যার পর এবং অন্য স্ত্রীর ঘরে এশার পর গেলে বরাবরি হবে না।  

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আল্লাহ আপনার পুরুস্কার দেওয়ার নিমিত্তে পরীক্ষা করছেন।
(২) আপনি যদি তাকে না বুঝান, এজন্য আপনাকে জবাবদিহিতা করতে হবে না।
(৩) আল্লাহর ইবাদতে সময়কে ব্যয় করুন। স্বামীর ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিন। দেখবেন মনের মধ্যে আলাদা একটা শান্তি চলে এসেছে।

مأخَذُ الفَتوی
مشکوٰۃ المصابیح: (280/2، ط: قدیمی)
عن أبي هريرة عن النبي صلي الله عليه وسلم قال: إذا كانت عند رجل إمرأتان فلم يعدل بينهما جاء يوم القيامة و شقه ساقط". رواه الترمذي و أبو داؤد و النسائي و ابن ماجه و الدارمي".

مرقاۃ المفاتیح: (384/6، ط: رشیدیة)
"قال رسول الله صلي الله عليه وسلم: من كانت له إمرأتان فمال إلى أحدهما جاء يوم القيامة و شقه مائل أي مفلوج".


مشکوٰۃ المصابیح: 
"عن عائشة: أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يقسم بين نسائه فيعدل ويقول: «اللهم هذا قسمي فيما أملك فلاتلمني فيما تملك ولاأملك». رواه الترمذي وأبوداود.  (باب القسم، الفصل الثاني، ص: 279، ط: قديمي)


رد المحتار مع الدر المختار: (207/3، ط: دار الفکر)
(ويقيم عند كل واحدة منهن يوما وليلة) لكن إنما تلزمه التسوية في الليل، حتى لو جاء للأولى بعد الغروب وللثانية بعد العشاء فقد ترك القسم۔

وايضا في ردالمحتار مع الدر المختار:
"(يجب) وظاهر الآية أنه فرض، نهر (أن يعدل) أي أن لايجور  (فيه) أي في القسم بالتسوية في البيتوتة (وفي الملبوس والمأكول) والصحبة (لا في المجامعة) كالمحبة بل يستحب. ويسقط حقها بمرة ويجب ديانةً أحيانًا. ولايبلغ الإيلاء إلا برضاها، ويؤمر المتعبد بصحبتها أحيانًا، وقدره الطحاوي بيوم وليلة من كل أربع لحرة، وسبع لأمة، ولو تضررت من كثرة لم تجز الزيادة على قدر طاقتها، والرأي في تعيين المقدار للقاضي بما يظن طاقتها، نهر بحثًا.

(قوله: لا في المجامعة)؛ لأنها تبتني على النشاط، ولا خلاف فيه. قال بعض أهل العلم: إن تركه لعدم الداعية والانتشار عذر، وإن تركه مع الداعية إليه لكن داعيته إلى الضرة أقوى فهو مما يدخل تحت قدرته ... (قوله: بل يستحب) أي ما ذكر من المجامعة ح. أما المحبة فهي ميل القلب وهو لايملك. قال في الفتح: والمستحب أن يسوي بينهن في جميع الاستمتاعات من الوطء والقبلة ...  (قوله: ويسقط حقها بمرة) قال في الفتح: واعلم أن ترك جماعها مطلقًا لايحل له، صرح أصحابنا بأن جماعها أحيانًا واجب ديانة، لكن لايدخل تحت القضاء والإلزام إلا الوطأة الأولى، ولم يقدروا فيه مدةً. قال في البحر: وحيث علم أن الوطء لايدخل تحت القسم، فهل هو واجب للزوجة؟ وفي البدائع: لها أن تطالبه بالوطء؛لأن حله لها حقها، كما أن حلها له حقه، وإذا طالبته يجب عليه ويجبر عليه في الحكم مرةً، والزيادة تجب ديانةً لا في الحكم عند بعض أصحابنا، وعند بعضهم تجب عليه في الحكم". (باب القسم 3/201، 202، ط: سعيد)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...