আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আমার এই বিষয়ে এইটায় শেষ প্রশ্ন ইনশাআল্লাহ। অনুগ্রহ করে আমাকে উত্তরগুলো দিবেন যেন আমি মানসিক স্বান্তনা পাই। কেননা আই ফতোয়া ছাড়া উত্তম নসীহত দেওয়ার মতো কেউ নেই আমার। ওস্তাদগণ, অনুগ্রহ করে আমাকে উত্তরগুলো দিন।
https://ifatwa.info/118792/
https://ifatwa.info/123899/?show=123965#a123965
এই দুইটি প্রশ্ন আমার আগে করা। দুটি প্রশ্নে আমাকে সবর ও দোয়া করতে বলা হয়েছে, স্বামীকে বুঝাতে বলতে হয়েছে। কিন্তু আমি মূলত বুঝাতে গিয়ে ক্লান্ত। আবার বুঝাতে গেলেই অশান্তি সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় এক আঘাতের উপর আরেক আঘাত আমার জন্য কষ্টদায়ক। ওস্তাদ আমাকে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন অনুগ্রহ করে।
১. বিয়ের পর থেকে যে স্বামীকে সেভাবে কাছে পাওয়া হলো না, তারপর যখন ১৫ দিন করে পালি হলো এতে যেসব মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হলো, (আমার জীনের সমস্যা ছিলো), শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে হলো, আমি কি ধরে নিবো স্বামী দিয়ে এটা আমার পরীক্ষা নিচ্ছেন আল্লাহ? এবং আল্লাহ তাআ'লা এই কষ্টের বিনিময়ে অগণিত প্রতিদান দিবেন আখিরাতে! নাকি এটা আমার কোনো পাপের আযাব...
২. আমার তাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় এটা ঠিক কতবার বলেছি, বুঝিয়েছি আমি জানি না। তারপরও তার যার সাথে থাকতে ভালো লাগে তার সাথেই অধিকাংশ সময় কাটায়। তিনি যখন দ্বিতীয় স্ত্রীর পালিতে থাকতেন, আমি ওনাকে কলে খুব কম সময়ই পেতাম। যেদিন বিয়ে করলেন সেদিন আমি জানতাম না যে বিয়ে করেছেন। আমি তার খোঁজ না পেয়ে সারাদিন পাগলের মতো কল করে গেছি, কিন্তু পাত্তা পাইনি। ওদিন থেকে মূলত আমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এরপর যখন আমার পালিতে ১৫ দিনের জন্য আসতো, ফোনে অনেক সময় কাটাতো। আমাকে তেমন করে সময় দিলে আমার এতে খারাপ লাগতো না। কিন্তু আমি শুরু থেকেই নোটিশ করে আসছি তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে অধিক সময় দেন। অথচ আমিও তার থেকে সময় আশা করি। আমার বিয়ের নয়মাস পর বিয়ে করলেন। মাসে মাসে ছুটিতে থাকতেন। দুইমাস একটানা একসাথে থাকা হয়েছে। টোটাল নয়মাস পর দ্বিতীয় বিয়ে, দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে পালি শুরু করা (আমার মানসিকভাবে খারাপ অবস্থায়ও), ওই পালিতে থাকাবস্থায় ফোন কলেও তেমন সময় না দেওয়া। আবার আমার পালিতে আসলে তাকে সময় দেওয়া, এতে আমার মন খারাপ হলে আমাক চার্জ করা, তালাক পাওয়া ইত্যাদি বিষয় আমাকে মানসিকভাবে অস্বাভাবিক করে দিয়েছে। আমার প্রোডাক্টিভিটি কমিয়ে দিয়েছে, মাথা কাজ করে না। এসব তাকে বুঝালেও লাভ হয় না।
এতদিন দুই স্ত্রী আলাদা ছিলাম। এখন একসাথে। এখন আমার পালি চলার কথা। অথচ প্রায় সারাদিন দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে থাকে, আমার সাথে রাতে ঘুমায়। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে তো এমন হয়নি, তাকে তার পালির সম্পূর্ণ সময় তাকেই দেওয়া হয়েছে।
আবার এখানে আসার আগে আমাকে বলে নিয়ে এসেছে যে দুপুরে স্ত্রীর সাথে যেই সময়গুলো কাটান তিনি একসাথে থাকাবস্থায় এমন হবে না।৷ যার যার রুমে সেই সেই থাকতে হবে, উনি ওনার অফিস রুমে। কিন্তু দুপুর তিনি তার সাথে কাটান। আমার সাথে একদিন কাটিয়েছেন।
যাইহোক আমি ফিল করতেছি এগুলো আমার সাথে ঠিক হয়নি। ওস্তাদ আদৌ কি এগুলো আমার সাথে ঠিক হয়নি নাকি এটা আমার ওয়াসওয়াসা? আমার সাথে শুধু রাত্রিযাপনের সমতা করলেই নাকি সমতা হয়ে যাবে, তাহলে আমার এমন মনে হওয়া কি অবাঞ্ছনীয় নাকি সত্যি এটা ঠিক হচ্ছে না আমার সাথে?
(তিনি ১০০% দায়িত্বশীল স্বামী। কিন্তু ভাত কাপরের চেয়েও যেইটা তার থেকে বেশি চেয়েছি, পাইনি; সময়)
এমতাবস্থায় আমি তাকে আর বুঝানোর ইচ্ছেশক্তি পাচ্ছি না। আমি তার জন্য দোয়া করবো, আমার একাকীত্বের সময়গুলো কুরআনের সাথে কাটাবো। এইযে স্বামীকে মিস করেও সবর করবো, এর বিনিময়ও নিশ্চয়ই দিবেন আল্লাহ! আর আমি যদি ওনাকে বুঝানো বন্ধ করি, তাতে আমার স্বামী সময় নিয়ে ইনসাফ যদি না করে তাতে কি আমিও দায়বদ্ধ থাকবো? মানে সে কি আমাকে কিয়ামাতে ধরতে পারবে এ নিয়ে যে কেন আমি তখন বুঝাইনি? আমি বুঝিয়েছি, কিন্তু এখন ক্লান্ত।
৩. আমাকে একটি পরামর্শ দিন যে কিভাবে আমি সারাদিন প্রোডাক্টিভ থাকবো (মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে আমি এগুলো ঠিকমতো করতে পারি না) কিন্তু এখন আমি কাজের মধ্যে মনযোগ দিতে চাচ্ছি সম্পূর্ণ। আমার কাজগুলো সাধারণত রান্নাবান্না, ঘর গুছানো, গোসল, ইবাদাত, কুরআন তিলাওয়াত, ব্যবসার জন্য কাপর সেলাই ইত্যাদি। এসব কাজ নিয়ে আমি কিভাবে আরও প্রোডাক্টিভ হবো এবং সেল্ফ হ্যাপিনেস কাজ করবে + স্বামী নিয়ে যেই পরীক্ষায় পতিত হয়েছি তা আমার উপর মানসিক প্রেসার ফেলবে না, পরামর্শ দিন। আমি আমার বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে চাই আল্লাহর ইচ্ছায় নিজের ফুল সাপোর্টে, অন্যের সাপোর্টে নয়।