আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমা ওয়া বারাকাতুহ

শাইখ,আমি বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ।যেমন:পাক-নাপাক,অজু ভাঙন,লাহনে জলি,মাসয়ালা নিয়ে অতিরঞ্জিত চিন্তা ভাবনা,সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগা।
আমি প্রত্যেকটা বিষয় বিস্তারিত বলছি ইন শা আল্লাহ।
ক.পাক-নাপাক:এই বিষয়টা নিয়ে ২০২২ সালে আমাকে অনেক ভুগতে হয়েছে।আমার প্রশ্নের ধরণ এবং বারবার প্রশ্ন করা দেখে দুইজন আলিম (সতন্ত্রভাবে আমাকে বলেছিলেন পাক পবিত্রতা বিষয়ে মাথায়-ই না ঘামাতে।পরবর্তীতে উনাদের কথার উপর আমল করে আস্তে আস্তে কমাতে পেরেছি,আলহামদুলিল্লাহ।
খ.লাহনে জলি:কিরাতের বিশুদ্ধতা নিয়েও আমার কনফিউশান তৈরি হয়।এমনও হয়েছে এক নামায ২-৩ বার ও ভাঙা লাগছে।এটার মাত্রা কখনো বেশি থাকে তো কখনো কম।

গ.মাসয়ালা নিয়ে অতিরঞ্জিত চিন্তা ভাবনা :কোনো একটা মাসয়ালা(জটিল) জানার পর ওই মাসয়ালা থেকে খুটিনাটি অনেক প্রশ্ন মনে আসে।এরকম একবার একটা মাসয়ালা নিয়ে অনেক খুটিনাটি প্রশ্ন করায় একজন আলিম এবং আরেকজন আলিমা বলেছিলেন আমি ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ।
ঙ.সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগা:এই বিষয়টা এখনো তেমন প্রকট আকার ধারণ করেনি।তবে কয়েকটা বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দেখলাম আমি সিদ্ধান্তে স্থির হতে পারছি না।সারাক্ষণ চিন্তা ভাবনা লেগেই থাকে।বিভিন্ন সূক্ষ বিষয় মাথায় আসে যা চিন্তা আরো বাড়িয়ে দেয়।

অজু ভাঙন:এই পয়েন্টটা বেশিই গুরুতর।আমার লিউকোরিয়া সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে।তবে স্রাব যে বেশি যায় এমনটাও না।মাঝারি ধরনের যায়।কিন্তু বিষয়টা আমাকে খুব-ই পেরেশান করে।যেমন,বারবার চেক করা।নামাযে পূর্ণ একাগ্রতা ধরে রাখতে পারিনা।সমস্যাটা যখন বেশি থাকে তখন গড়ে ২ দিনে একবার হলেও এই সংক্রান্ত কারণে নামায কাযা হয়ে যায়।এটার কারণে  বেশিরভাগ সময়েই নামাযের পরে সুকূন অনুভব করিনা।
তবে এইখানে আরো একটা বিষয় আছে।আমি কয়েকমাস এভাবে।মেইনটেইন করেছিলাম যে:অজুর আগে ভালোভাবে প্রাইভেট পার্ট ধুয়ে নামাযে দাড়ালে ৩০ মিনিট (+-) আমি শিওর থাকতাম যে স্রাব নির্গত হবে না।এটা আমি বেশ কয়েকবার টেস্ট করছিলাম দেখি যে আসলেই নির্গত হয়না।এটা এইজন্য হতে পারে আমার মন এটাতে সেট হয়ে গিয়েছিলো বলে স্রাব যেতো না যেহেতু আমাদের শরীরের সাথে মনের কানেকশান আছে।তো ওই কয়েকমাস ভালোভাবেই সালাত আদায় হতো কিন্তু হঠাত আবার মনে হলো যে,এটার তো কোনো প্রমাণ নেই যে ধোয়ার পরে এমন আধা ঘন্টা স্রাব যায় না।তো আবারো শুরু হলো আগের অবস্থা।তারপর আবারো আগের ৩০ মিনিট হ্যাকে ফিরে গেলাম।আবারো কয়েকমাস এভাবে চলার পরে হঠাত একদিন মনে হলো যে ধোয়ার পরেই বের হয়ছে তখন আবারো আগের ওয়াসওয়াসা শুরু।

শাইখ,আপনার নিকট আমার প্রশ্ন:আমাকে কি শরীয়ত মাযুর হিসেবে বিবেচনা করে এইসব ক্ষেত্রে ছাড় দিবে?যেমন,আমি এমনটা মনে করবো নামাযে যদি লাহনে জলি হয় কিংবা আসলেই যদি স্রাব নির্গত হয়  তবুও আমি ভ্রুক্ষেপ করবো না।মানে একপ্রকার এগুলোকে জায়েজ(কথার কথা)মনে করে এগুলো সাথে নিয়েই নামায কন্টিনিউ করবো?
একবার এক বোন আমাকে বলেছিলেন,স্রাব নিয়ে কোনোই ফিকির না করতে তো তখন আমি স্রাব যুক্ত কাপড় নিয়েই,স্রাব বের হওয়া নিয়ে তীব্র ধারণা হলেও নামায পড়ে ফেলতাম।

১.আমার জন্য এমন ছাড় আছে?একটা বিষয় বলে রাখি,আমি খেয়াল করেছি যখন আমার ইমানী হালত স্ট্রং থাকে তখন ওয়াসওয়াসাও বাড়ে।দোনোটা পরস্পর সমান্তরাল। ইমানী হালাত ভালো থাকলে আল্লাহর ভয় অন্তরে বেশি ঢুকে যায় বলে তখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করতাম কিভাবে নিখুত করা যায়।যেমন:স্রাব বের হলে তো নামায হবে না তখন পেরেশানি আরো বেড়ে যেতো।চেক করার পরিমাণ আরো অনেক বেড়ে যেতো।আমি মনে করি আমার বর্তমান ইমানী করুন হালাতের কারণ এইসকল ওয়াসওয়াসাই।এটা আমি অনেকটাই নিশ্চিত। বাদ বাকী আল্লাহ ভালো জানেন।

1 Answer

0 votes
by (668,790 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি মা'যুর নন।
আপনার জন্য এমন ছাড় নেই।

নামাজের মধ্যে স্রাব বের হওয়া সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা আসলে নামাজের পর চেক করবেন। যদি সত্যিই স্রাব বের হওয়া পান,সেক্ষেত্রে অযু করে এসে পুনরায় উত্তর নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি সাদাস্রাব না পান সেক্ষেত্রে সে নামাজ পুনরায় আদায় করবেন না।

নামাজের মধ্যে যদি আপনি নিশ্চিত হন যে সাদা স্রাব নির্গত হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আপনি নামাজ ভেঙ্গে দিয়ে অযু করতে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 366 views
0 votes
1 answer 16 views
...