আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমা ওয়া বারাকাতুহ
শাইখ,আমি বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ।যেমন:পাক-নাপাক,অজু ভাঙন,লাহনে জলি,মাসয়ালা নিয়ে অতিরঞ্জিত চিন্তা ভাবনা,সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগা।
আমি প্রত্যেকটা বিষয় বিস্তারিত বলছি ইন শা আল্লাহ।
ক.পাক-নাপাক:এই বিষয়টা নিয়ে ২০২২ সালে আমাকে অনেক ভুগতে হয়েছে।আমার প্রশ্নের ধরণ এবং বারবার প্রশ্ন করা দেখে দুইজন আলিম (সতন্ত্রভাবে আমাকে বলেছিলেন পাক পবিত্রতা বিষয়ে মাথায়-ই না ঘামাতে।পরবর্তীতে উনাদের কথার উপর আমল করে আস্তে আস্তে কমাতে পেরেছি,আলহামদুলিল্লাহ।
খ.লাহনে জলি:কিরাতের বিশুদ্ধতা নিয়েও আমার কনফিউশান তৈরি হয়।এমনও হয়েছে এক নামায ২-৩ বার ও ভাঙা লাগছে।এটার মাত্রা কখনো বেশি থাকে তো কখনো কম।
গ.মাসয়ালা নিয়ে অতিরঞ্জিত চিন্তা ভাবনা :কোনো একটা মাসয়ালা(জটিল) জানার পর ওই মাসয়ালা থেকে খুটিনাটি অনেক প্রশ্ন মনে আসে।এরকম একবার একটা মাসয়ালা নিয়ে অনেক খুটিনাটি প্রশ্ন করায় একজন আলিম এবং আরেকজন আলিমা বলেছিলেন আমি ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ।
ঙ.সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগা:এই বিষয়টা এখনো তেমন প্রকট আকার ধারণ করেনি।তবে কয়েকটা বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দেখলাম আমি সিদ্ধান্তে স্থির হতে পারছি না।সারাক্ষণ চিন্তা ভাবনা লেগেই থাকে।বিভিন্ন সূক্ষ বিষয় মাথায় আসে যা চিন্তা আরো বাড়িয়ে দেয়।
অজু ভাঙন:এই পয়েন্টটা বেশিই গুরুতর।আমার লিউকোরিয়া সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে।তবে স্রাব যে বেশি যায় এমনটাও না।মাঝারি ধরনের যায়।কিন্তু বিষয়টা আমাকে খুব-ই পেরেশান করে।যেমন,বারবার চেক করা।নামাযে পূর্ণ একাগ্রতা ধরে রাখতে পারিনা।সমস্যাটা যখন বেশি থাকে তখন গড়ে ২ দিনে একবার হলেও এই সংক্রান্ত কারণে নামায কাযা হয়ে যায়।এটার কারণে বেশিরভাগ সময়েই নামাযের পরে সুকূন অনুভব করিনা।
তবে এইখানে আরো একটা বিষয় আছে।আমি কয়েকমাস এভাবে।মেইনটেইন করেছিলাম যে:অজুর আগে ভালোভাবে প্রাইভেট পার্ট ধুয়ে নামাযে দাড়ালে ৩০ মিনিট (+-) আমি শিওর থাকতাম যে স্রাব নির্গত হবে না।এটা আমি বেশ কয়েকবার টেস্ট করছিলাম দেখি যে আসলেই নির্গত হয়না।এটা এইজন্য হতে পারে আমার মন এটাতে সেট হয়ে গিয়েছিলো বলে স্রাব যেতো না যেহেতু আমাদের শরীরের সাথে মনের কানেকশান আছে।তো ওই কয়েকমাস ভালোভাবেই সালাত আদায় হতো কিন্তু হঠাত আবার মনে হলো যে,এটার তো কোনো প্রমাণ নেই যে ধোয়ার পরে এমন আধা ঘন্টা স্রাব যায় না।তো আবারো শুরু হলো আগের অবস্থা।তারপর আবারো আগের ৩০ মিনিট হ্যাকে ফিরে গেলাম।আবারো কয়েকমাস এভাবে চলার পরে হঠাত একদিন মনে হলো যে ধোয়ার পরেই বের হয়ছে তখন আবারো আগের ওয়াসওয়াসা শুরু।
শাইখ,আপনার নিকট আমার প্রশ্ন:আমাকে কি শরীয়ত মাযুর হিসেবে বিবেচনা করে এইসব ক্ষেত্রে ছাড় দিবে?যেমন,আমি এমনটা মনে করবো নামাযে যদি লাহনে জলি হয় কিংবা আসলেই যদি স্রাব নির্গত হয় তবুও আমি ভ্রুক্ষেপ করবো না।মানে একপ্রকার এগুলোকে জায়েজ(কথার কথা)মনে করে এগুলো সাথে নিয়েই নামায কন্টিনিউ করবো?
একবার এক বোন আমাকে বলেছিলেন,স্রাব নিয়ে কোনোই ফিকির না করতে তো তখন আমি স্রাব যুক্ত কাপড় নিয়েই,স্রাব বের হওয়া নিয়ে তীব্র ধারণা হলেও নামায পড়ে ফেলতাম।
১.আমার জন্য এমন ছাড় আছে?একটা বিষয় বলে রাখি,আমি খেয়াল করেছি যখন আমার ইমানী হালত স্ট্রং থাকে তখন ওয়াসওয়াসাও বাড়ে।দোনোটা পরস্পর সমান্তরাল। ইমানী হালাত ভালো থাকলে আল্লাহর ভয় অন্তরে বেশি ঢুকে যায় বলে তখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করতাম কিভাবে নিখুত করা যায়।যেমন:স্রাব বের হলে তো নামায হবে না তখন পেরেশানি আরো বেড়ে যেতো।চেক করার পরিমাণ আরো অনেক বেড়ে যেতো।আমি মনে করি আমার বর্তমান ইমানী করুন হালাতের কারণ এইসকল ওয়াসওয়াসাই।এটা আমি অনেকটাই নিশ্চিত। বাদ বাকী আল্লাহ ভালো জানেন।