আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম,
এক মহিলার ভাই তার পৈত্রিক সম্পত্তির  অংশ দিচ্ছে না প্রায় ২০ বছর হয়েছে, এবং সম্পত্তি থেকে পাওয়া  টাকা পয়সা সব তার ভাই আত্মসাৎ করত।


ভাই বাবার ভিটার অংশ না দিয়ে মহিলাকে খুব সামান্য টাকা দিয়ে জমিটা নিয়ে নিতে  চায়। মহিলা  এ প্রস্তাবে রাজি ছিল না। একটা সময় মহিলার পরিবার আর্থিক সংকটে থাকায়  মহিলা বেচতে রাজি হয় । এবং  তবে শর্ত দেয় যে পুরো টাকা একসাথে দিতে হবে। ভাই জমির দাম ৪ লক্ষ টাকা দেবে বলে রাজি হয় এবং তারা একটা বায়না পত্র তৈরি করে যেটার আইন অনুযায়ী মেয়াদ তিন মাস (উল্লেখ্য যে জমির আসল দাম ৫০ লাখ বা তার উপরে)। ভাই মহিলাকে একসাথে তিন লক্ষ টাকা এবং বাকি টাকা কিছুদিনের মধ্যে দিবে জানায়। কিন্তু প্রায় এক বছর হয়ে যায় সে টাকা দেয় না। মহিলা এর মধ্যে অনেকবার তার ভাইকে সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কিন্তু তার ভাই যোগাযোগ করেনি। এই সময়ের মধ্যে তার ভাই তার জমির মধ্যে বিল্ডিং বাড়ি বানানো শুরু করে দেয় অথচ তখনো জমির টাকা পরিশোধ বাকি  এবং ভাইয়ের নামে রেজিস্ট্রি ও হয়নি।
এক বছর পরে বোনের সাথে যোগাযোগ করে বাকি টাকাটা দিতে। কিন্তু তার বোন না করে এবং জানায় সে তার কাছে জায়গা বিক্রি করবে না যেহেতু সে একবারে টাকাটা দেয়নি শর্ত অনুযায়ী। এরপর আরোও প্রায় ৩-৪  বছর পর  পুলিশের সাহায্যে দরবারের মাধ্যমে ফয়সালা হয় যে , ভাই বোনটাকে জায়গা তাকে বুঝায় দিবে। কিন্তু তার কিছু আত্মীয় মিলে শর্ত দেয় যে বোনকে আগে  ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তিন লক্ষ টাকা পাওনা এবং ২ লক্ষ টাকা ( চার বছর আগের তিন লাখ টাকা মূল্যে নাকি বর্তমান বাজারে ঊর্ধ্বগতির কারণে বেড়েছে ইত্যাদি কারণে দেখিয়ে) পুলিশ ও মহিলাকে বলে যে এটাই  করতে কারণ তার ভাই অনেক ঝগড়াটে ,স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা দের সাথে  সংযোগ আছে এবং তাকে কোনভাবেই রাজি করানো যাচ্ছিল না। পুলিশ বলে যে, ভাই কে এরেস্ট করা ছাড়া যদি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে চায় তাহলে এই রাস্তা দিয়ে আগাতে হবে এছাড়া ভাই কোনভাবেই রাজি হয় না।

‎এখন প্রশ্ন হল মহিলা এই যে তিন লক্ষ টাকার বদলে ৫ লাখ টাকা দেয় এটা কি শরীয়তে জায়েজ হচ্ছে কি না, (উল্লেখ্য যে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হলেও সম্ভবত ৩ লাখ টাকা  প্রায় ৮০ হাজার টাকা বাড়ে ,সে ক্ষেত্রে প্রায় 4 লাখ টাকা হতে পারে কিন্তু ৫ লাখ টাকা নয়)?

1 Answer

0 votes
by (650,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

মাযলুম যালিমের কাছ থেকে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত প্রতিশোধগ্রহণ করতে পারবে বা প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকতে পারবে এতে তার কোন প্রকার গুনাহ হবেনা।এ সম্পর্কে আরোও শুনুন আল্লাহর তা'আলার বাণী.....

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺻَﺎﺑَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺒَﻐْﻲُ ﻫُﻢْ ﻳَﻨﺘَﺼِﺮُﻭﻥَ

যারা আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।(৪২সূরা আশ শূরা-৩৯)
ﻭَﺟَﺰَﺍﺀ ﺳَﻴِّﺌَﺔٍ ﺳَﻴِّﺌَﺔٌ ﻣِّﺜْﻠُﻬَﺎ ﻓَﻤَﻦْ ﻋَﻔَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠَﺢَ ﻓَﺄَﺟْﺮُﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ

আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই।(৪২/৪০)

ﻭَﻟَﻤَﻦِ ﺍﻧْﺘَﺼَﺮَ ﺑَﻌْﺪَ ﻇُﻠْﻤِﻪِ ﻓَﺄُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﺳَﺒِﻴْﻞٍ ، ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞُ ﻋَﻠَﻰْ ﺍﻟّﺬِﻳْﻦَ ﻳَﻈْﻠِﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻭَﻳَﺒْﻐُﻮﻥَ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟْﺤَﻖّ ، ﺃُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ

নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(৪২/৪১-৪২)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মহিলাটি যদি তিন লক্ষ টাকার বদলে ৫ লাখ টাকা দেয় এটা শরীয়তে জায়েজ আছে।

প্রশ্নের বিবরন মতে মহিলাটি যদি জমিটির ন্যায্য দাম অনুসারে জমিটির রিয়েল দাম ৫০ লক্ষ টাকাও নেয়,এবং ২০ বছর অন্যায় ভাবে ব্যবহারের দরুন আরো ৩/৪ লক্ষ টাকা বেশি নেয়,তবুও জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ, পাঁচ লাখ টাকা ভাই দাবি করতেছে( যিনি বোনকে সম্পদ দিচ্ছে না, এবং এত বছর ধরে আত্মসাৎ করছে)। ভাই তার বোনকে চাপ দিতেছিল বাবার সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত একটা  জমি স্বল্প দামে  তার কাছে বিক্রি করতে। বোন শর্ত দেয়, যদি সম্পূর্ণ টাকা একবারে দেয় তাহলে জমিটা ভাইয়ের কাছে বিক্রি করবে। কিন্তু ভাই ৩ লাখ টাকা দিয়ে আর বাকি টাকা দেয় না। এক বছর পরে বাকি টাকা দিতে আসে। পরে বোন বাকি টাকা নেয়না এবং জানায় তিনি জমি বিক্রি করবে না  (যেহেতু ভাই তাকে  সম্পূর্ণ  টাকা একেবারে দেয়নি,) এবং  আরও জানায় , ভাই যে তিন লাখ টাকা দিয়েছিল  তিনি সেটাও ফেরত দিয়ে দিবেন। ভাই এটা মেনে নিতে চায় না এবং অনেক ঝামেলা করে। 
শেষে ৩-৪ বছর পর দরবারের মাধ্যমে মীমাংসা হয় যে, মহিলার ওয়ারিশ প্রাপ্ত জমিটা তার ভাইয়ের কাছে বিক্রি করতে হবে না বরং ভাই ওই মহিলাকে তার প্রাপ্ত পৈতৃক সম্পত্তি বুঝিয়ে দিবে , আর ভাই যে ৩ লাখ টাকা ওই মহিলাকে দিয়েছিল  মহিলার জমিটা কিনতে বা বায়না করতে তার বদলে মহিলা তার ভাইকে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে (তিন চার বছর আগের তিন লাখ টাকার নাকি দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্ব গতির কারণে দাম বেড়ে গিয়েছে এখন) । এখন ওই মহিলা যদি তার ভাইকে ওই তিন লাখ টাকার পরিবর্তে ৫ লাখ টাকা দেয় এটা কি জায়েজ হবে? 
ago by (650,730 points)
এখন ওই মহিলা যদি তার ভাইকে ওই তিন লাখ টাকার পরিবর্তে ৫ লাখ টাকা দেয়, এটা মহিলার উপর জুলুম হবে,তবে এতে মহিলার কোনো গুনাহ হবেনা। 

বরং  জুলুম করে আরো ২ লাখ টাকা বেশি নেয়ায় ভাইয়ের মারাত্মক গুনাহ হবে। 

পাশাপাশি এতোদিন বোনের প্রাপ্ত পৈতৃক সম্পত্তি বুঝিয়ে না দিয়ে ভোগ করার কারনেও ভাইয়ের মারাত্মক গুনাহ হবে।
 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...