আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
405 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (13 points)
আসসালামু 'আলাইকুম।
আমার এক বন্ধু বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চায়, মজুতদারি ব্যবসা জায়েজ। এটা শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রে যেমন : আলু, পেঁয়াজ, ছোলা ইত্যাদি। সে কম দামে কিনবে, বেশি দামো সময়মতো বিক্রি করবে---বিষয়টা এই।
কিন্তু আমি মনে করি, এই ব্যবসাটা আসলে কোনো ব্যবসাই নয়, বরং এটা শেয়ারবাজারের নীতির মতো। আমি শুনেছিলাম, শেয়ারবাজারের ব্যবসা জায়েজ নয়। এখন আমার প্রশ্ন
১/ এজাতীয় সিন্ডিকেট/মজুতদারি ব্যবসা আর শেয়ারবাজারের মূলনীতি কি আসলেই এক?
২/ এসকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মজুতদারি ব্যবসা কি জায়েজ আছে?
জাঝাকাল্লাহু খইর...

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শেয়ার বাজারে অনেক ধোকা আছে,ক্ষতির প্রবল আশংকা রয়েছে,সূদের মিশ্রণ রয়েছে।
যাহা মজুতদারি ব্যবসায় নেই।
,
শেয়ার বাজার সংক্রান্ত  জানুনঃ 

শেয়ার বাজারে টাকা ইনভেস্ট করার বিধান জানুনঃ 

(০২)
অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে খাদ্য-শস্য বা সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্য অধিক পরিমাণে আটকে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা শরীয়তে নিষিদ্ধ।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ.

যে ব্যক্তি (প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী) আটকে রাখে সে গুনাহগার। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬০৫

ফকীহগণ বলেন, উপরোক্ত হাদীস এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য হাদীস ঐ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাতে মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্য গুদামজাত করে আটকে রাখার দরুন বাজারে সংকট সৃষ্টি হয় এবং মানুষ অভাব অনটনের শিকার হয় এবং দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের গুদামজাত করা নাজায়েয। সরকারের  কর্তব্য এ ধরনের গুদামজাতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে তাদের পণ্য বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য করা।

আর যদি খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী জমা করে রাখার বিষয়টি স্বাভাবিক পর্যায়ের হয়, মানুষের ক্ষতি ও অনটনের আশঙ্কা না থাকে এবং বাজারে ঐ পণ্যের সঙ্কট দেখা না দেয় তাহলে এ জাতীয় সাধারণ গুদামজাত করা নাজায়েয নয়।
,
রাসুল (সা.) বলেছেন, জনগণের জীবিকা সংকীর্ণ করে যে ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করবে, সে বড় অপরাধী। আর জেনে রাখো, সে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে। (মুসলিম : ১৬০৫, তিরমিজি : ১২৬৭) 

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ৪০ দিন খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করে রাখবে (এর দ্বারা মানুষকে কষ্ট দেবে), সে এ সম্পদ দান করে দিলেও তার গুনাহ মাফের জন্য যথেষ্ট হবে না। (মেশকাত : ২৭৭২) 

অন্য এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমদানি করবে, সে রিজিকপ্রাপ্ত হবে। আর যে গুদামজাত করবে, সে অভিশপ্ত হবে। (ইবনে মাজাহ : ২১৪৪, সুনানে দারেমি : ২৪৬৪)
,
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ لَا حُكْرَةَ فِي سُوقِنَا لَا يَعْمِدُ رِجَالٌ بِأَيْدِيهِمْ فُضُولٌ مِنْ أَذْهَابٍ إِلَى رِزْقٍ مِنْ رِزْقِ اللَّهِ نَزَلَ بِسَاحَتِنَا فَيَحْتَكِرُونَهُ عَلَيْنَا وَلَكِنْ أَيُّمَا جَالِبٍ جَلَبَ عَلَى عَمُودِ كَبِدِهِ فِي الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ فَذَلِكَ ضَيْفُ عُمَرَ فَلْيَبِعْ كَيْفَ شَاءَ اللَّهُ وَلْيُمْسِكْ كَيْفَ شَاءَ اللَّهُ 

মালিক (রহঃ) বলেন, তাহার নিকট রেওয়ায়ত পৌছিয়াছে যে, উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) বলিয়াছেন, আমাদের বাজারে কেহ ইহতিকার করিবে না। যেইসকল লোকের হাতে অতিরিক্ত মুদ্রা রহিয়াছে সেই সব লোক যেন আল্লাহ প্রদত্ত জীবিকাসমূহ হইতে কোন জীবিকা (খাদ্যশস্য) ক্রয় করিয়া আমাদের উপর মজুতদারী করার ইচ্ছা না করে। আর যে ব্যক্তি শীত মৌসুমে ও গ্রীষ্মকালে নিজের পিঠে বোঝা বহন করিয়া (খাদ্যশস্য) আনিবে সে উমরের মেহমান, সে যেরূপ ইচ্ছা বিক্রয় করুক, যেরূপ ইচ্ছা মজুত করুক।
(মুয়াত্তা মালিক ১৩৪১)

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...