আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

উস্তাজ আমার কিছু প্রশ্ন:-

০১- আমি কিছু মানুষ কে বলতে শুনেছি যে আমাদের ফ্যামিলির কোনো মেয়েই ফেলনা নয়। এটা দ্বারা খুব সম্ভবত বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের কথা বুঝানো হয়েছে। এখন কথা হচ্ছে যে ফেলনা টার্ম টা কেমন!? কারো চেহারা কি কখনো ফেলনা হয়!? আল্লহ তা'আলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং সরাসরি বলে দিয়েছেন ""নিশ্চয়ই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম আকৃতিতে""। যার চেহারা যেমনই হোক তারা আল্লহর সৃষ্টি। যেই বিষয়ে স্বয়ং আল্লহ পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছেন সেই বিষয়ে আমাদের মতামত জানানো অধিকার কি আদৌ আছে।এটা কি অনধিকার চর্চা হয়ে গেল না!?

০২- এই প্রশ্নটাও আগের টার মতোই অনেকটা। যেসব ব্যাপারে আল্লহ তা'আলার সুস্পষ্ট বিধান আছে সেগুলোর ব্যাপারে কি নিজের মতামত দেওয়ার অনুমতি আছে ? যেমন:- চুরি করার শাস্তি হাত কেটে দেওয়া। এটার ব্যাপারে কেউ কি বলতে পারবে যে এটা ঠিক না বা এমন কিছু।

০৩- ভূল বশত নিষিদ্ধ ওয়াক্তে সালাত আদায় করে ফেললে কি করবো? ফজরের শেষে নিষিদ্ধ ওয়াক্ত শেষ হয় ৫:৩৮ এ। আমি এই কয়েকদিন আগে ও দেখলাম ৫:৩০ এর আগে এই ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী আমি ইশরাক এর সলাত আদায় করে ফেলেছি নিষিদ্ধ ওয়াক্ত পার হওয়ার আগেই। এর আগেও এমন একবার দুইবার হয়েছিল যে যোহরের আগের নিষিদ্ধ ওয়াক্তে চাশত পড়ে ফেলেছিলাম। এখন কি করবো আমি। আমি খুব বোকার মতো কাজ করে ফেলেছি আমি সাধারণত ওয়াক্ত দেখে নামাজ আদায় করার চেষ্টা করি। কিন্তু আজকে আর দেখিনি। এখন কি করবো।?

০৪- আমার চেয়ে বয়েসে ছোট আমার এক কাজিন আছে। সে সম্প্রতি এমন কিছু কথা আমার সাথে শেয়ার করেছে যা আমার দৃষ্টিতে মনে হয়েছে যে ব্যাপারটা খুব খারাপ। কিন্তু আমি তাকে সুন্দর ভাবে নসিহা করতে পারিনি। কিভাবে নসিহা করলে সে মন ও খারাপ করবেনা আবার আমার দায়িত্ব ও পালন করা হবে আমাকে একটু দয়া করে উপদেশ দিন।

০৫- কোনো একটা আমল যেমন তাহাজ্জুদ এর ব্যাপারে আমরা জানি যে এটার কী ব্যাপক ফজিলত বা তাহাজ্জুদ গুজার ব্যক্তির আল্লহর সাথে সম্পর্ক কেমন হয়। এখন আমার কথা হচ্ছে যে কেউ যদি এমন হয় যে সে মাঝে মাঝে তাহাজ্জুদ পড়ে মাঝে মাঝে পড়ে না। সেও কি এই ফজিলতের অন্তর্ভূক্ত হবে!? কি আমল করলে তাহাজ্জুদ নিয়মিত পড়তে পারবো?

০৬- ফেসবুকে ঢুকলেই বেপর্দা মেয়েদের ছবি চোখে পড়ে। তাদের সবাইকে কি আমার দাওয়াত দিতে হবে? আমার দায়িত্ব? নাকি যাদেরকে আমি চিনি তাদেরকে দাওয়াত দেবো শুধু?

০৭- ইউটিউবে সেলাই বা ভাষা শিক্ষার যেমন আরবী ভাষা শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ভিডিও আছে। সেগুলো কি দেখা যাবে? শেখার নিয়ত নিয়ে।

জাযাকুমুল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (649,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
যেই বিষয়ে স্বয়ং আল্লহ পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছেন, সেই বিষয়ে আমাদের মতামত জানানোর অধিকার নেই।

এটি অবশ্যই অনধিকার চর্চা। 

(০২)
যেসব ব্যাপারে আল্লহ তা'আলার সুস্পষ্ট বিধান আছে, সেগুলোর ব্যাপারে নিজের মতামত দেওয়ার অনুমতি নেই। 

(০৩)
হাদীস সূত্রে জানা যায়, তিন সময়ে নামাজ পড়া নিষেধ।  

উকবা বিন আমের জুহানী রাযি. বলেন,
ثَلاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ الشَّمْسُ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ

তিনটি সময়ে রাসুল ﷺ আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়। (সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: لَا يَتَحَرّى أَحَدُكُمْ فَيُصَلِّيَ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلَا عِنْدَ غُرُوبِهَا وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتّى تَبْرُزَ. فَإِذا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتّى تَغِيْبَ وَلَا تَحَيَّنُوا بِصَلَاتِكُمْ طُلُوْعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوْبَهَا فَإِنَّهَا تطلع بَين قَرْنَيِ الشَّيْطَانِ.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার সময় সলাত আদায়ের জন্য অন্বেষণ না করে।

একটি বর্ণনার ভাষা হলো, তিনি বলেছেন, ‘‘যখন সূর্য গোলক উদিত হয় তখন সলাত  ত্যাগ করবে, যে পর্যন্ত সূর্য বেশ স্পষ্ট হয়ে না উঠবে। ঠিক এভাবে আবার যখন সূর্য গোলক ডুবতে থাকে তখন সলাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে, যে পর্যন্ত সূর্য সম্পূর্ণভাবে ডুবে না যায়। আর সূর্য উঠার ও অস্ত যাওয়ার সময় সলাতের ইচ্ছা করবে না। কারণ সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদয় হয়।

(বুখারী ৫৮৫, ৩২৮৩, মুসলিম ৮২৮,মিশকাতুল মাসাবিহ ১০৩৯)

অন্য হাদীসে আরো দুই সময়ে নামাজ পড়ার নিষেধাজ্ঞা এসেছে। 

আবু সাঈদ খুদরী রাযি. বলেন, আমি রাসুল ﷺ -কে বলতে শুনেছি,
لا صَلاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ وَلا صَلاةَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ
ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। (বুখারী ৫৫১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে সেই নামাজ গুলি পুনরায় আদায় করতে হবে।

(০৪)
এ ব্যাপারে আপনি কুরআনের আয়াত ও হাদিস হতে অনুবাদ তাকে জানিয়ে প্রজ্ঞার সহিত নসিহত করতে পারেন। আদেশ বা নিষেধ কোনটি না কোনোটি না করে শরীয়তের বিধান তাকে বলে দিতে পারেন।

অথবা এই বিষয়ে বই বা ওয়াজ এর লিংক তার নিকট শেয়ার করতে পারেন।

(০৫)
সে পরিপূর্ণ ভাবে সেই ফজিলতের অন্তর্ভূক্ত হবেনা।

তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়মিত আদায়ের জন্য কিছু বিষয় অনুসরণ করা যেতে পারে। 

প্রথমত ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ত নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া উত্তম। 

এর সবচেয়ে চমৎকার তাৎপর্য হলো, কোনো কারণে তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠতে না পারলে সওয়াব পাওয়া যাবে। 

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার বিছানায় এলো এবং যার নিয়ত ছিল রাতে উঠে নামাজ আদায় করা, কিন্তু তার ঘুম প্রবল হলো; তার নিয়ত অনুযায়ী তার জন্য পুরস্কার লেখা হবে এবং তার ঘুম আল্লাহর জন্য সদকাস্বরূপ।’

দ্বিতীয়ত অহেতুক কাজ থেকে বিরত থেকে ঈশার পর দ্রুত ঘুমাতে হবে,এবং দিনের বেলা বাদ জোহর বা অন্য কোনো সময়ে কিছুক্ষন  ঘুমাতে হবে।  এতে কিয়ামুল লাইল ও ফজরের শক্তি সঞ্চয় হয়। 

তৃতীয়ত তাহাজ্জুদের নামাজকে সহজভাবে নিতে হবে। ফজরের নামাজের ২৫-৩০ মিনিট আগে উঠে এ অভ্যাস রপ্ত করা যায়। এরপর আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যায়।

চতুর্থত ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমের আদবগুলো রক্ষা করা প্রয়োজন। যেমন ওজুসহ ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুমের দোয়া পাঠ করা।

আরো জানুনঃ- 

(০৬)
সবাইকে দাওয়াত দেয়া আবশ্যক নয়।
যাদেরকে আপনি চিনে,আপনার আত্মীয়, প্রতিবেশি, তাদেরকে দাওয়াত দিবেন।

(০৭)
মিউজিক বা শরীয়াহ বিরোধী কিছু না থাকলে দেখা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 492 views
...