আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার মা বাবা উভয়েই ব্যাংক এর চাকরি করতেন। পরবর্তীতে তারা যখন বুঝতে পারেন যে এর উপার্জন হারাম তখন চাকরি ছেড়ে দেন। সেই চাকরি থেকে পাওয়া পেনশন দিয়ে আমার বাবা একটা পাইকারি ওষুধের দোকান দেন। আমার মা ও পেনশন পেয়েছিলেন। আমার মা এর তীব্র ইচ্ছা তিনি হালাল উপার্জন করবেন। কারণ সুদি ব্যাংক থেকে তো তিনি পেনশন পেয়েছেন । এটা হালাল তো হবার কথা না। আমার বাবা আমাদের ভরণ পোষণ যেই উৎস থেকে  দেন তা হালাল নয়। সেই জন্য আমার মা পর্দার নিয়ম মেনে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যাতে হালাল উপার্জন করতে পারেন। কিন্তু আমাদের কাছে তো হালাল টাকা নেই। যেই টাকা আছে সেটা ওই ব্যাংক এর চাকরি ছাড়ার পর পেনশন এর টাকা। আর আমরা এমন কোনো আত্মীয় বা অন্য কারো কাছে থেকে সাহায্য পাচ্ছি না।
প্রশ্ন 1: আমার মা যে পেনশন পেয়েছেন সেটা কি হালাল? যেহেতু ব্যাংক এর চাকরিতে শুদ আছে।

প্রশ্ন2: আমরা যদি হালাল উপার্জনের নিয়তে ওই পেনশন এর টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি এবং পরবর্তীতে লাভ হলে সেই সমপরিমাণ টাকা যদি সদাকা করে দেই তাহলে কী হবে? যেহেতু আমাদের কোনো উপায় নাই। আমরা কোথাও থেকে টাকা যোগাড় করতে পারি নাই। আর আমার বাবা আমাদের ভরণ পোষণ দেন না । বিষয়টি আমার জন্য  জানা খুবই জরুরি

1 Answer

0 votes
ago by (645,900 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/25087/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হারাম টাকায় ব্যবসা করাও নাজায়েজ। 
,
তবে কঠিন প্রয়োজন বশত এমনটি হলে উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ ব্যবহারের অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।   তারা বলেছেন যে এটি সেই ব্যবসায় তার পরিশ্রমের বিনিময়। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ قَالَ : ابْتَعْتُ غُلَامًا فَاسْتَغْلَلْتُه ثُمَّ ظَهَرْتُ مِنْهُ عَلٰى عَيْبٍ فَخَاصَمْتُ فِيهِ إِلٰى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَقَضٰى لِىْ بِرَدِّه وَقَضٰى عَلَىَّ بِرَدِّ غَلَّتِه فَأَتَيْتُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ : أَرُوْحُ إِلَيْهِ الْعَشِيَّةَ فَأُخْبِرُه أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْنِىْ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَضٰى فِىْ مِثْلِ هٰذَا : أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ فَرَاحَ إِلَيْهِ عُرْوَةُ فَقَضٰى لِىْ أَنْ اٰخُذَ الْخَرَاجَ مِنَ الَّذِىْ قَضٰى بِه عَلَىِّ لَه

মাখলাদ ইবনু খুফাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দাস কিনেছিলাম এবং তার মাধ্যমে কিছু উপার্জনও করিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তার মধ্যে একটি দোষ সম্পর্কে অবগত হলাম এবং শাসনকর্তা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে আমি তার বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তিনি বিচার করলেন যে, আমি তাকে ফেরত দিতে পারবো, তবে অবশ্যই তার দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই আমাকে ফেরত দিতে হবে। আমি ‘উরওয়াহ্ (রহঃ)-এর নিকট এ রায় জানালাম। তিনি বললেন, আমি সন্ধ্যাকালেই শাসনকর্তার নিকট যাবো এবং তাঁকে অবহিত করবো। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় ঘটনায় রায় দিয়েছেন যে, উপার্জিত আয় তার তত্ত্বাবধান ব্যয় বলে সাব্যস্ত হবে। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) সন্ধ্যাকালেই ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বিচার করলেন যে, উক্ত উপার্জিত আয় তিনি পূর্বে (প্রথমে) যাকে দেয়ার জন্য আদেশ করেছিলেন তার কাছ থেকে আমি যেন তা ফেরত নেই।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ২৮৭৯)

উক্ত সম্পদ দ্বারা ব্যবসা করে যে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছে বা হবে,তাহা গ্রহন করা জায়েজ নেই,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত।

★তবে ইমাম শাফেয়ী ও মালেক রহঃ এর মতে সে ব্যাক্তি লভ্যাংশ নিজের পরিশ্রমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে  (নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৫১)। 
তবে তাদের মতেও এহেন ব্যবসার লাভ পরিত্যাগ করাই অধিকতর নিরাপদ ও তাক্বওয়াপূর্ণ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবা মার হারাম টাকায় ব্যবসা করা জায়েজ হবেনা।
সবই হারাম হবে।

সেই লভ্যাংশ এর  টাকা আর বিনিয়োগের টাকা কোনোটাই ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হারাম টাকা গুলো হালাল করা পদ্ধতি হলোঃ
আপনার বাবা মা যেই পরিমান হারাম টাকায় ব্যবসা করবেন,সেই পরিমান হারাম টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া পরবর্তীতে গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।         
এরপর হতে সেই ব্যবসা হালাল হবে, সেটির লভ্যাংশ ব্যবহার জায়েজ হবে।
নতুবা নয়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
সেই পেনশন হারাম।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে পরবর্তীতে লাভ হলে সেই সমপরিমাণ টাকা যদি সদাকা করে দেন, তাহলে এরপর হতে ব্যবসা হালাল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...