যারা আলেম ওলামা তথা আল্লাহ ওয়ালাদের সঙ্গে শত্রুতা রাখে, আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। অতএব আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শত্রুর সঙ্গে ভালোবাসা নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ كَرَامَةَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ حَدَّثَنِي شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا وَإِنْ سَأَلَنِي لأُ×عْطِيَنَّهُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لأعِيذَنَّهُ وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَيْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ
আবূ হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন ওলীর সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব। আমি যা কিছু আমার বান্দার উপর ফরয করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ‘ইবাদাত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমন কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি কোন কাজ করতে চাইলে তা করতে কোন দ্বিধা করি-না, যতটা দ্বিধা করি মু’মিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৫০২
উবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ওই ব্যক্তি আমার আদর্শের ওপর নাই, যে আমাদের বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না এবং আমাদের আলেমদের প্রাপ্য মর্যাদা প্রদান করে না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২১৪৩, মুস্তাদরাকে হাকেম : ৩৮৪)
আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বৃদ্ধ মুসলমান, কোরআনের আদব রক্ষাকারী ও কোরআন অনুযায়ী আমলকারী হাফেজ এবং ন্যায়পরায়ণ বাদশার সম্মান করা মহান আল্লাহর সম্মান করার অন্তর্ভুক্ত।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৫৩)
আবু দারদা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আবিদের ওপর আলেমের ফজিলত এরূপ, যেরূপ পূর্ণিমার রাতে চাঁদের ফজিলত সব তারকারাজির ওপর। আর আলেমরা হলেন নবীদের ওয়ারিশ এবং নবীরা দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) ও দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) মিরাস হিসেবে রেখে যান না, বরং তাঁরা রেখে যান ইলম। কাজেই যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করল, সে প্রচুর সম্পদের মালিক হলো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৪২, জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৬৪৬)
ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি উলামায়ে কেরামকে অবজ্ঞা করবে তার আখিরাত ধ্বংস হবে। যে ব্যক্তি রাজা-বাদশাদের অবজ্ঞা করবে তার দুনিয়া ধ্বংস হবে। যে ব্যক্তি নিজের ভাইকে অবজ্ঞা করবে তার মানবিকতা ধ্বংস হবে। (সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৮/৪০৮)
ইমাম আহমদ ইবনে আজরায়ি (রহ.) বলেন, উলামায়ে কেরামের কুৎসা রটনা করা, বিশেষ করে পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরামের, এটা কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি উলামায়ে কেরামের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব রাখবে, এর দ্বারা তার নিজেরই ক্ষতি হবে। (আররদ্দুল ওয়াফের : ১৯৭)