আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
355 views
in সালাত(Prayer) by (39 points)
আস-সালামু আলাইকুম
১) বিতর সালাতে তৃতীয় রাকআতে রুকুতে যাওয়ার আগে একটা তাকবির দিতে হয় এবং কুনুত পড়তে হয়। ওই তাকবির টা আর কুনুত না পড়ে যদি ভুলে রুকুতে চলে যাই, আর তখন যদি মনে পড়ে বা রুকু থেকে উঠে যদি মনে পড়ে যে ভুল হয়েছে। তখন কি ওই তাকবির টা দিয়ে কুনুত পড়ে সিজদাহ্ এ গেলে কি আমার সালাত হবে? নাকি সাহু সিজদাহ্ দিতে হবে? রসূল (ﷺ) নাকি রুকু থেকে উঠেও কুনুত পড়তেন?

২) সালাতে কোনো ভুল হলে যে সাহু সিজদাহ্ করতে হয় সেটা কি সালাম ফিরানোর পর করা যাবে। আমি দুই সালাম ফিরানোর পর সাহু সিজদাহ্ করি। এটা কি ঠিক আছে? দুই সালাম ফিরানোর পর সাহু সিজদাহ্ করার বিষয় টা আমি প্রিয় (মিজানুর রহমান আজহারি) এর একটা ভিডিও থেকে জেনেছি?
৩) সালাতের তিনটি যে নিষিদ্ধ সময় আছে সেটা জানি। এর সময় সিমা কত মিনিট আনুমানিক ১০/২০?

৪) ফজর, মাগরিব, এশা এই তিন ওয়াক্তে মসজিদে গিয়ে যদি জামআত না পাই, তাহলে কি আমার মসজিদে একা উচ্চস্বরে  কিরাত করে সালাত আদায় করা লাগবে? নাকি যোহর, আসরের মত করে পড়লে হবে?

৫) হাই আসালে রসূল (ﷺ) যে কাজটি করতে বলেছেন সেটা সম্পর্কে জানতে চাই?

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
বিতিরের নামাযে কুনুত করা বিশুদ্ধ মতানুযায়ী ওয়াজিব।
কুনুত হচ্ছে,তৃতীয় রা'কাতে কিরাত থেকে ফারিগ হওয়ার পর রাফে ইয়াদাঈন করে বিশুদ্ধ মতানুযায়ী আবার হাতে বেধে একটি দু'আ পড়া।
وليس في القنوت دعاء مؤقت. كذا في التبيين والأولى أن يقرأ " اللهم إنا نستعينك " ويقرأ بعده " اللهم اهدنا فيمن هديت " ومن لم يحسن القنوت يقول: {ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار} [البقرة: ٢٠١] . كذا في المحيط أو يقول: اللهم اغفر لنا ويكرر ذلك ثلاثا وهو اختيار أبي الليث. كذا في السراجية.
তবে কোন দু'আ পড়তে হবে সেটা নির্দিষ্ট নয়।(তাবয়ীন)উত্তম হল,"আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাইনুকা"তথা প্রচলিত দু'আ শেষ পর্যন্ত পড়া।এবং শেষে "আল্লাহুম্মাহদিনা ফি মান হাদাইতা"শেষ পর্যন্ত পড়া।অর্থাৎ এই দু'আ পড়া।
اللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيمَنْ هَدَيْتَ ، وَعَافِنَا فِيمَنْ عَافَيْتَ ، وَتَوَلَّنَا فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ ، وَبَارِكْ لَنَا فِيمَا أَعْطَيْتَ ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ ، إِنَّكَ تَقْضِى وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ ، إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ (سنن البيهقى الكبرى، رقم الحديث--2960)
যে ব্যক্তি উপরোক্ত দু'আ গুলোকে ভালভাবে পড়তে জানে না,সে যেন সূরা বাকারা ২০১নং আয়াত "রাব্বা আতিনা " দু'আ শেষ পর্যন্ত পড়ে নেয়।(মুহিত)অথবা 'আল্লাহুম্মাগফির-লানা" তিনবার পড়ে নেয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১১১)  বিতির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2027

বিতির নামায পড়ার সময়ে কেউ দু'আ য়ে কুনুত না পড়ে রু'কুতে চলে গেলে,সে রুকুতেই দু'আয়ে কুনুত পড়বে। যদি রুকুতেও না পড়ে তবে,যেহেতু দু'আয়ে কুনুত ওয়াজিব,তাই নামাযের শেষে সাহু সেজদা দিয়ে দিবে।সাহু সেজদা না দিলে ওয়াক্তের ভিতর হলে নামাযকে আবার দোহরাতে হবে। রুকু থেকে উটে আবার পড়ার কোনো নিয়ম নাই । যদি কোনো হাদীসে এভাবে রুকু থেকে উঠে কুনুত পড়ার কথা পাওয়া যায়,তাহলে তখন ঐ হাদীসের অর্থ হবে, রাসূলুল্লাহ কুনুত ওয়াজিব হওয়াকে বুঝানোর জন্য মূলত পরে পড়িয়েছেন।

(২)
এক সালামের পর এবং দুই সালামের পর উভয়ভাবে সিজদায়ে সাহু দেওয়া অনুমোদিত রয়েছে।তবে হানাফি ফিকহ মতে একদিকে সালাম ফিরানোর পর সিজদায়ে সাহু দেওয়া উত্তম। 

(৩)
সূর্যোদয়ের পর থেকে সতর্কতা মূলক ২৪মিনিট পর্যন্ত নামায পড়া মাকরুহ।এবং সূর্যাস্তের পূর্বে ২৪ মিনিট নামায পড়া মাকরুহ। আর দ্বি-প্রহর মানে বর্তমান জোহর শুরুর পূর্বে ৬ মিনিট পর্যন্ত সময় নামায পড়া মাকরুহ।


(৪)
আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ উক্ত ইবারতের ব্যাখায় লিখেন,
مطلب في الكلام على الجهر والمخافتة 
(قوله ويخافت المنفرد إلخ) أما الإمام فقد مر أنه يجهر أداء وقضاء (قوله في وقت المخافتة) قيد به لأنه إن قضى في وقت الجهر خير كما لا يخفى ح (قوله بعد طلوع الشمس) لأن ما قبلها وقت جهر فيخير فيه، لكن في بعض نسخ الهداية بعد طلوع الفجر (قوله كما في الهداية) قال فيها لأن الجهر مختص، إما بالجماعة حتما أو بالوقت في حق المنفرد على وجه التخيير ولم يوجد أحدهما 
ভাবার্থ- জাহরি কা'যা নামাযকে সির্রি সময়ে জামাতের সাথে আদায় করলে ইমাম সাহেব তখন উচ্ছস্বরে ক্বেরাত পড়বেন।তবে মুনফারিদ সির্রি সময়ে জাহরি নামাযকে কা'যা করার ইচ্ছাপোষণ করলে অত্যাবশ্যকীয় ভাবে তখন ক্বেরাতকে নিম্নস্বরে পড়বেন।কেননা উচ্ছস্বরে কুরআন তেলাওয়াত হয়তো জামাতের সাথে সীমাবদ্ধ নতুবা জাহরি সময়ের সাথে সীমাবদ্ধ। অবশ্য জাহরি সময়ে মুনফারিদকে এখতিয়ার দেয়া হবে।সে চাইলে উচ্ছস্বরে তেলাওয়াত করতে পারবে অথবা নিম্নস্বরেও তেলাওয়াত করতে পারবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1725

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ফজর, মাগরিব, এশা এই তিন ওয়াক্তে মসজিদে গিয়ে যদি কেউ জামআত না পায়, এবং সে মসজিদে গিয়ে একা নামায পড়ে,তাহলে তার এখতিয়ার থাকবে, চাইলে সে উচ্ছস্বরে তেলাওয়াত করতে পারবে আবার নিম্নস্বরেও তেলাওয়াত করতে পারবে। তবে নিম্নস্বরে তেলাওয়াত করাই তার জন্য উত্তম ও মুস্তাহব।

(৫) মুখে হাত দিতেন। সেজ্ন্য মুখে হাত দেওয়া সুন্নত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

–1 vote
1 answer 551 views
...