আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
১। আমার শাশুড়ির সাথে গত ২বছর থেকে তেমন বনিবনা হয় না।আমি যতোই ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করতাম উনি আমার অগোচরে তার ছেলে মেয়ের কাছে বদনাম করতেম সাথে আমার ভাশুর ও। ২০২৩ সালে অনেক কিছু হয় উনার সাথে ছোট একটা উদাহরণ আমি ঝাল তরকারি খাই না উনি আমার জন্য রান্না করা তরকারি তার অন্য ছেলের নাতি কে দিয়ে দিছেন।বিষয়টি এমন না যে ঘরে আর কিছু ছিলো না তাদের জন্য ৩ পদের তরকারি ছিলো।
তো এইরকম অনেক ঘটনা হয় আমি বাবার বাসায় চলে আসি।তারপর বিদেশ এর ভেতর তার সাথে আমার আর কথা হয় নি।উনি একবার চেয়েছিলেন আমি আমার মনের কষ্টে র জন্য বলতে চাই নি কিন্তু আমি তাকে তখনই মাফ করে দেই।আমি চাই নি উনার সাথে কথা বলতে আর কথা বলার পর উনি আবার আমার নামে অন্যের কাছে কিছু বলুক।আর এই নিয়ে আমার ঘরে অশান্তি হোক। ইচ্ছা ছিলো কিছু বছর যাক তারপর কথা বলবো বা দেশে গেলে দেখা করবো।

তারপর আর কখনো কথা হয় নি উনি জিজ্ঞেস করতেন আমার কথা।এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ উনি মারা যান এখন সবাই একটা কথা বলছে আমি কেনো কথা বলিনি?

আমি তো ফিতনা থেকে বাচতে কথা বলিনি।উনার সাথে কথা বললেই জামেলা হবে আমি জানতাম। এইটার জন্য কি আমার গোনাহ হবে? আমি ওয়াজ য়ে শুনছিলাম যে কারো সাথে কথা বললেই জামেলা হয় অর্থাৎ মার ঝগড়াঝাটি হয় তাহলে তাকে এড়িয়ে চলা যাবে।

যদি গোনাহ হয় তাহলে কি এটা বান্দার হক নষ্টের পর্যায়ে পড়ে?তাহলে আমি কিভাবে তওবা করবো?

২।এই নিয়ে আমার স্বামীর সাথে ঝগড়া হয় ২দিন থেকে আমরা কথা বলি না।এতে কি আমার গোনাহ হবে?

৩। স্বামীর ইনকাম হারাম হলে স্ত্রী যদি হালাল কাজ করতে বলার পর ও স্বামী সেটা না ছাড়ে তাহলে কি স্বামীর ঘরের হারাম খাবার খেলে স্ত্রীর দোয়া কবুল হবে না?

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/18346/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)

আরো জানুনঃ 

দারুল উলুম  দেওবন্দ এর 178050 নং ফতোয়াতে এসেছে যে কোনো মুসলমানের সাথে হিংসা ইত্যাদির কারনে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই। 
তবে সে যদি দীনের লাইন থেকে দূরে সরে যায়,মদ খায়,জুয়া খেলে,যেনা করে,সুদ খায়।
বুঝানোর পরেও বুঝেনা,ইসলাম মানেনা।
,
তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ আছে। 
তবে  স্থায়ীভাবে নয়,সাময়িক ভাবে। 
(ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ৮/২৭০)



কোনো মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা জায়েজ নেই।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ السَّرْخَسِيُّ، أَنَّ أَبَا عَامِرٍ، أَخْبَرَهُم حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ هِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَهْجُرَ مُؤْمِنًا فَوْقَ ثَلَاثٍ، فَإِنْ مَرَّتْ بِهِ ثَلَاثٌ، فَلْيَلْقَهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ، فَإِنْ رَدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ فَقَدِ اشْتَرَكَا فِي الْأَجْرِ، وَإِنْ لَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ فَقَدْ بَاءَ بِالْإِثْمِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ঈমানদারের জন্য বৈধ নয়, সে কোনো ঈমানদারের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রাখবে। অতঃপর তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর উভয়ে দেখা হলে একজন সালাম দিলে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি তার সালামের উত্তর দিলে উভয়ই সালামের সাওয়াব পাবে। আর দ্বিতীয়জন সালামের উত্তর না দিলে গুনাহগার হবে। ইমাম আহমাদ এর বর্ণনায় রয়েছেঃ সালামদাতা সম্পর্কচ্ছেদের গুনাহ থেকে মুক্ত হবে।
(আবু দাউদ ৪৯১২)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে কথা বলা বন্ধের দরুন আপনার গুনাহ হয়েছে।
তবে প্রশ্নের বিবরন মতে এটি বান্দার হক নষ্টের পর্যায়ে পড়েনা।

আপনি আল্লাহর কাছে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে তওবা করবেন এবং ওয়াদা বদ্ধ হবেন যে আর জীবনে এরকম ভাবে কারো সাথে কথা বলা বন্ধ করবেন না এবং আপনার শাশুড়ির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন।

চাইলে তার ঈসালে ছওয়াবের জন্য কিছু দান সদকাহ করতে পারেন।

(০২)
হ্যাঁ, গুনাহ হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে স্বামীর ঘরের হারাম খাবার খেলে স্ত্রীর দোয়া কবুল হবে।

তবে প্রয়োজন অতিরিক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা,প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো কিছু নেয়া যাবেনা।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...