আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
اسلام عليكم ورحمة الله
আমার বিয়ের প্রায় তিন বছর একটা বাচ্চা আছে। আমি এবং আমার স্বামী দুইজনই জেনারেল শিক্ষিত, দ্বীনে ফেরা। ইসলাম প্রাকটিস করি। কিন্তু আমার স্বামীর পরিবার সম্পূর্ণ বিপরীত। সমস্যা এখানেই। আমি মাহরাম নন-মাহারাম মেইনটেইন করি বিয়ের আগে থেকেই আলহামদুলিল্লাহ। তো পুরুষ মানুষের সাথে কথা বলতে কিংবা তাদের সামনে যেতে আমার আমার ইতস্তত বোধ হয় এবং হত। মনে হয় আমি আগুনের মধ্যে আছি।


যাই হোক এবার আসল ঘটনায় আসি।
️প্রথমত, স্বামীর নিকটাত্মীয় পুরুষদের সাথে আগে কথা বলতাম কিন্তু কিছু ঘটনার কারণে ফিতনার আশঙ্কা থেকে আর কথা বলিনা।

1️⃣ নন্দাই:
আমি প্রসূতি অবস্থায় হসপিটালের কাছে আমার ননদের বাসা হওয়ার কারণে সেখানে কিছুদিন থাকাকালীন সময়ে ননদের স্বামী কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই তিন বার আমার রুমে প্রবেশ করেছিলেন। একবার আমি বাথরুমে ছিলাম, আরেকবার বাবুকে ব্রেস্টফিডিং করাচ্ছিলাম, অন্যবার বাবুকে পাশে রেখে শুয়ে ছিলাম, ইনি এসে কতক্ষণ আমার মাথার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে বাবু কী করে বলে কয়ে চলে যান এসময় আমার পায়ের কিছু অংশ হয়তো উন্মুক্ত ছিল আমি অনুভব করছিলাম কিন্তু বাবু ডেলিভারী হওয়ার পরের ব্যথার কারণে আমি নড়তে পারছিলামনা, যার জন্য ঠিক করতে পারিনি। কিন্তু ইনি আগে কখনো তিনি এভাবে রুমে আসেনি, তিনি জানতেন আমি পর্দা করি এবং রুমের পর্দাও দেওয়া ছিল তবু অঘটন ঘটল। আবার আমার ননদও তারপর বলে সবই তো দেখে ফেলল শুধু মুখটাই বাকি আছে। এই পাপী বান্দাদের ভালোবাসেন তাই বেপর্দা থেকে হেফাজত করেছেন আলহামদুলিল্লাহ কারণ প্রতিবার আমার মুখ মাথাসহ শরীর আবৃত ছিল। আবার ইনি আমার বাবার সাথেও খারাপ ব্যবহার করেছে যে আমাদের বাবার বাড়ি থেকে আসবাবপত্র দেইনি তাই। আমার স্বামীও বলেন খুশি করে কিছু দিলে সেটা নাকি যৌতুক না। শুরুর দিকে নন্দাই খুব মৌখিক ইয়ার্কি মারার চেষ্টা করত যেটা আমি শুনেও এড়িয়ে যেতাম বেশিরভাগই। এনার চারিত্রিক ব্যাপারে আমি তেমন ওয়াকিবহাল নই।


2️⃣বড় ভাসুর:

ভাসুর বড় জা কে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমাতুল্লাহ এর চেহারা কেমন, দেখতে কী অমুকের থেকেও সুন্দর?

 আর একদিন মাংস রাখতে আসছিল তো বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ নাই। তিনি মা মা করে ডেকেছেন আমি তার কণ্ঠ বুঝতে পারিনি। আর শাশুড়িও বাড়ি ছিল না ফলে তিনি সামনের একটা রুমে মাংস রেখে চলে যান। আর ননদের স্বামীর কাছে ফোন দিয়ে বলেন, এমন মেয়ে বিয়ে দিয়ে নিয়ে এনেছেন ডাকলেও কথা বলে না। পর্দা করে বলে কী কথাও বলা যাবেনা ইত্যাদি...

পরে স্বামীর কাছ থেকে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানি। শাশুড়ি ননদ তো সেই বকাবকি। আমি ভুল স্বীকার করেছিলাম যে আমি কণ্ঠ বুঝতে পারিনি। এর রেশ ধরে আমার স্বামী আমার মাকে ফোন করে যা তা বলে। তবে স্বামীর কাছে প্রশ্ন করেছিলাম এ অবস্থায় আমার যাওয়া কী যায়েজ ছিল যেহেতু বাড়িতে কেউ ছিল না। সে উত্তর দিল গেলে কী আমার ভাই তোমাকে খেয়ে ফেলত! মাংস দিয়েই চলে যেত। অথচ সে তার বড় ভাইয়ের চরিত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিল। মাদকাসক্ত, পর্ণাসক্ত আর পরকীয়ার লিপ্ত একজন মানুষ। কিছুদিন আগেও জেল খেটে আসল মাদক কারবারিতে ধরা পড়ে।
3️⃣মেজ ভাসুর
আমার বিয়ে তোলার দিন আমি স্বর্ণ + সিটিগোল্ডের চুড়ি পরেছিলাম অনেক গুলো। তবে বোরখা + সাত পর্দা পরে থাকার কারণে মানুষের নজরে কম আসছিল। তো শ্বশুর বাড়ি গিয়েই আমি এক রুমে বসেছি শাশুড়ি+ স্বামী আছে দরজা খোলা সেখানে আমার মেজ ভাসুর আমার বরাবর ডাইনিং এ দাড়িয়ে লুঙ্গি চেঞ্জ করতে করতে জিজ্ঞেস করছে আমাতুল্লাহর হাতের সব চুড়িগুলো স্বর্ণের নাকি। আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম হাটু নিচ পর্যন্ত হিজাব আর বোরখার হাতার নিচে থাকা চুড়িগুলো ভাসুরের চোখে কিভাবে পড়ল! এনার চারিত্রিক অবস্থা বড় ভাসুরের মতই। ইনি বিয়ে করার পরও পরকিয়া করত। ইভেন বড় ভাসুরের বউয়ের সাথে নাকি তার পরকিয়া সম্পর্ক ছিল। পরে ওই ভাবী অন্য জনের সাথে পরকিয়া করে চলে গেছে।
4️⃣ ননদের ছেলে: বর্তমানে অনার্স করছে। সে আমার রুমে উকি দিয়ে নাকি আমাকে দেখেছে একথা শুনেছি শাশুড়ির থেকে। আবার আমার ননদের ছেলে তো আমার উপর পুরুষ ঘটিত মিথ্যা অপবাদ রটানোর চেষ্টা করেছিল আউজুবিল্লাহ। অথচ আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ।
একবার খাবার বেড়ে দিতে হয়েছিল স্বামীর চাপে। খাবার বাড়ার সময় হঠাৎ খেয়াল করেছিলাম আমার হাতের দিকে ননদের ছেলের নজর কারণ ভুলবশত হাতমোজা পরেছিলাম না, আমার হাত যেদিকে যায় চোখও সেদিকে দেয় আসতাগফিরুল্লাহ। আর কখনো দিই নাই এরপর। ননদের ছেলেরও নারী ঘটিত কেলেঙ্কারি আছে, মাদকাসক্ত, পর্ণাসক্ত।


যেহেতু নন-মাহারামদের সাথে কথা বলতে আমার অস্বস্তি লাগত আর উপরোক্ত কারণ সমূহের জন্য ফিতনার আশঙ্কা থেকে আমি তাদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিই।


এরপর আমার স্বামীর পরিবার থেকে আমার ব্যপারে দুইটা অভিযোগ আসতে থাকে।
️১. আমি কোনো নন-মাহারাম পুরুষ মানুষের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাত করিনা, আসা যাওয়ার সময় কথা বলিনা। তারা আসলে তাদের সামনে গিয়ে সালাম দিয়ে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করিনা। চলে আসার সময় বলিনা যে, চলে গেলাম, আপনারা আমাদের বাসাতে যেয়ে ঘুরে এসেন ইত্যাদি।


️২. আমার মেহমানদের সেবা যত্নে ঘাটতি আছে, মানুষের সাথে মেলামেশাতে ঘাটতি আছে। অর্থাৎ পুরুষ মানুষের থেকে আড়ালে থাকি। আমি নন-মাহারাম পুরুষদের খাবার বেড়ে দিইনা। একগ্লাস পানি পর্যন্ত ঢেলে খাওয়াই না।

উল্লেখিত দুইটা কাজই আমি মহিলাদের সাথে করি কিন্তু নন-মাহারামদের সাথে নয়। নন-মাহারাম পুরুষদের সাথে আমি ফ্রি না। কিন্তু অনেক সময় বাধ্য হয়ে কথা বলতে হয়েছিল। রীতিমত প্রচুর পরিমাণ অস্বস্তি নিয়ে স্বামীর নিকটাত্মীয়দের সাথে গ্রুপকলে কথা বলা লাগত। আবার আমি দরজার পর্দার ওপাশ থেকে সালাম+ ভালোমন্দ জিজ্ঞাসা করলেও তাদের সমস্যা শুরু হয়ে যেত। তাদের সামনে কেন গেলাম না এটা নিয়ে।

আমি বলি পুরুষদের খাবার তাদের মাহরাম মহিলা কিংবা পুরুষ দিবে। কিন্তু তা তারা মানতে নারাজ।


আমার স্বামী বলেন, যদি মা আর আপুর কথামত চলো তবে আমার চেয়ে ভালো স্বামী আর কেউ হবে না। আমার বোন আমার বউয়ের উপর ছড়ি ঘুরাবে। আর তোমার উপর স্বামীর আনুগত্য করা ফরজ। তোমার জন্য আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করে আমি জাহান্নামী হতে পারবোনা। অথচ তার সাথে তাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ঠিক আছে এখন। আমার স্বামীর নারী আত্মীয়দের কাছে আমিই কল দেই, খোঁজ খবর নিই, তারা দেইনা। তবে ইদানীং আমি কল দিলে ওনারা আমার কল রিসিভও করেননা। স্বামীর কথা তাদের থেকেই তাদের কোনো কথা তোমার কাছে খারাপ লাগলেও আমাকে বলা যাবেনা। তুমি স্বামীর হুকুম মানছোনা দেখো হাশরে আবার ঠেকে না যাও।
তুমি যদি আমার পুরুষ আত্মীয়দের সাথে কথা না বলো তবে তুমি আমাদের বাড়ি যাবা না আর আমি তোমাদের বাড়ি যাব না। তুমি একঘরে হয়ে থাক। আমার নারী আত্মীয়দের সাথেও তোমার কথা বলা লাগবেনা। মনে কর তোমার শ্বশুরবাড়ি নেই, সেখানকার আত্মীয়ও নেই। তুমি শুধু আমাকে চিনবা আর আমার পরিবারের কোনো পুরুষ মেম্বারকে চিনবা না, কথা বলবা না, এটা আমি মেনে নিতে পারবো না। অথচ বিয়ের আগে নাকি সেই বলেছিল মেয়ে(আমি) কারো সামনে যায় না। আবার একসময় সেই বলেছে আমার বউ কোনো নন-মাহারাম এর সাথে কথা বলবে না। কিন্তু এখন পুরাই পাল্টে গেছে। আমি বলি আমি ফিতনার ভয়ে কথা বলি না। সে বলে ফিতনার কিছু নেই। আরো বলে ইখতেলাফি মাসআলা এটা ফাতওয়া যা খুশি মানতে পারবো।


আমি আমার কন্যা সন্তান ও আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
যাই হোক, আমাকে ফাতওয়া দিবেন দয়া করে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উপরোক্ত ব্যক্তিদের সাথে পর্দা করে কথা বলা, খেদমত করা যাবে কী?

যেভাবে স্বামীর পরিবার চায়।

এই সমস্ত কারণে আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্টকারী হিসেবে বিবেচিত হব কী? যেহেতু নারী আত্মীয়রা নিজ থেকেই আমার সাথে দুরত্ব বজায় রাখতে চাইছে।
উত্তর জানালে উপকৃত হই ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

★গ্রহনযোগ্য মতানুসারে যেহেতু মহিলাদের কন্ঠও সতরের অন্তর্ভুক্ত। 
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

তাই অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে মহিলা মাদ্রাসায় পুরুষ উস্তাদ বালেগাহ শিক্ষার্থীদের পড়া শুনতে পারবেনা। এত গুনাহ হবে।
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি রয়েছে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের বিধান হলো গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে কথা বললে সেক্ষেত্রে কর্কশ ভাষায় কথা বলবে।

কর্কশ ভাষায় কথা বলা সমস্যাকর বা বিরক্তিকর মনে হলে বা এভাবে কথা বলতে না পারলে সেক্ষেত্রে মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলবে।

উল্লেখ্য, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কোনো ভাবেই কথা বলা জায়েজ নেই। এতে সেই মহিলারও গুনাহ হবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ 
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

 হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে বিনম্র হয়ে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে পৌরষত্ব আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে। {সূরা আহযাব-৩২}

★পরপুরুষের (গায়রে মাহরামের) সঙ্গে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলার সময় কণ্ঠস্বর কঠোর রাখবে, সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়।

হযরত আয়েশা (রা) এর নিকট মাসয়ালা বা হাদিসের প্রয়োজনে অন্যান্য সাহাবীগণ আসলে, তিনি মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতেন যেন কারো অন্তর ব্যাধিগ্রস্থ না হয়। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

নারীদের জন্য গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলতে গিয়ে কর্কশ ভাষায় কথা বলা সবচেয়ে ভালো। 
সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়।

তবে এক্ষেত্রে কর্কশ ভাষায় কথা বলা সমস্যাকর বা বিরক্তিকর মনে হলে বা এভাবে কথা বলতে না পারলে সেক্ষেত্রে মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি পরিপূর্ণ ভাবে ইসলাম মানার চেষ্টা করেছেন,আলহামদুলিল্লাহ। 

মূলত এমনই প্রত্যেক নারীর হওয়া উচিত।

এখন যেহেতু পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে,আবার আপনার বাচ্চাও আছে,তাই সংসারকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হিকমতের পন্থা অবলম্বন করে চলতে পারেন।

এমতাবস্থায় আপনি এমনটি করতে পারেন যে, আপনি শশুর বাড়িতে যাবেন।

সেখানকার গায়রে কোনো পুরুষ আত্মীয় কথা বললে আপনি পর্দার আড়ালে থেকে তার জবাব দিবেন।

অপ্রয়োজনীয় কথা হলে জবাব না দেয়ার চেষ্টা করবেন,অগত্যা জবাব দিতে হলে কম কথায় শেষ করবেন। 
ননমাহরাম আত্মীয়দের খাবার বেড়ে না দিলে সেক্ষেত্রে সমস্যা বেড়ে গেলে 
পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে কিছুটা দূর থেকে (ফিতনার আশংকা না থাকলে) খাবার বেড়ে দিবেন।

আসা যাওয়ার সময় পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে নন মাহরাম পুরুষ আত্মীয়ের জরুরী কথা বলবেন। তারা আসলে পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে তাদের সামনে গিয়ে  সালাম দিয়ে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করতে পারবেন। চলে আসার সময় বলতে পারবেন, চলে গেলাম, আপনারা আমাদের বাসাতে যেয়ে ঘুরে এসেন ইত্যাদি।

তবে এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলা।

তবুপরি অপ্রয়োজনীয় কথা হয়ে গেলে এর দরুন মহান আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার পাঠ চালিয়ে যাবেন।

★উল্লেখ্য,উপরোক্ত কোনো কাজই আপনার উপর আবশ্যক নয়।

মূলত শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে থাকাও আপনার জন্য আবশ্যক নয়।

বিবাহের পরপরই আপনার জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক ছিল।

এমতাবস্থায় খাবার বেড়ে দেয়া তো দূরের কথা, তাদের খাবার রান্নার দায়িত্বও আপনার উপর ছিল না।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

তদুপরি স্বামী আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা না করলে সংসার বাঁচাতে আপনি উপরে উল্লেখিত হিকমতের পথ অবলম্বন করে চলতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...