আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

১. আমি যে মোবাইল ব্যাবহার করি সেটা আব্বু আমাকে কিনে দিয়েছিল ২০১৮ সালে তখন আমি ৪র্থ শ্রেণীতে পড়তাম।প্রথম প্রথম আব্বুর কাছেই মোবাইল থাকত।এখন আমার কাছেই আছে।আমি জানিনা আমার আব্বু কি আমাকে এই মোবাইলটির মালিক বানিয়ে দিয়েছে কি না। এখন শরিয়ত মোতাবেক এই মোবাইল কি আমার নাকি আব্বুর বলে গণ্য হবে?

২. আব্বু,আম্মু মাঝেমধ্যে বা প্রায়ই মোবাইলটি ব্যাবহার করে। এক্ষেত্রে তারা মিউজিকযুক্ত অনেক ভিডিও দেখে। এক্ষেত্রে আমার কি গুনাহ হবে?

৩.গুপ্তাঙ্গের লোম যদি বেশিরভাগ কাটা হয় কিন্তু কিছু লোম যদি থেকে যায়। তবে এক্ষেত্রে কি লোম কাটা সহীহ হয়েছে?

৪.রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া টাকা,বস্তু আমি পেলাম। কিন্তু আমি এর মালিককে না খুঁজে যে জায়গায় পেয়েছি সেখানেই রেখে আসলাম। এক্ষেত্রে কি আমার গুণাহ হবে?

৫.নামাজে "সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম" দোয়ার "আযীম' অংশের "যীম" বলার সময় টান না দিলে কি নামাজ ভেঙ্গে যাবে? - ফজরের ফরজ নামাজ (৪ ই জুলাই ২০২৫)

৫.জোরে কিরআত পড়ার সময় কেউ যদি সালাম দেয় বা জিজ্ঞাসা করে কেমন আছো তবে কি ইশারায় উত্তর দেওয়া যাবে? আর সালামের উত্তর যদি মনে মনে দেই আর ইশারা করি তা কি জায়েয হবে?

৬.জিবাশ্ম জ্বালানি ব্যাবহার করে কোনো কিছু আবিস্কার করা ও ঐ আবিষ্কৃত বস্তু ব্যাবহার করা কি জায়েজ? যতদূর জানি জিবাশ্ম জালানি তৈরি হয়েছে উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ থেকে।তাই প্রশ্নটি করা।

৭.কারো গাড়ির আয়নায় ,কারো সেলুনের
আয়নায় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে নিজের চেহারা দেখা কি জায়েয?

৮.কোনো ছাত্র যদি স্কুলে নিয়মিত না আসে। কিন্তু রেজাল্ট কার্ডে যদি শিক্ষকরা তাকে নিয়মিত ছাত্র বলে। এক্ষেত্রে ছাত্রের কি গুণাহ হবে? তার কি কোনো করণীয় আছে? সে এই রেজাল্ট কার্ড অন্য কাউকে প্রদর্শন এর উদ্দেশ্যে দেখাতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (644,370 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عن عثمان وابن عمر وابن عباس رضي اللّٰہ عنہم أنہم قالوا: لا تجوز صدقۃ حتی تقبض۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۴ دار الکتب العلمیۃ بیروت)

সারমর্মঃ
হযরত উসমান রাঃ ,ইবনে ওমর রাঃ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন ছদকাহ জায়েজ নেই,কবজা করার আগ পর্যন্ত।  
عن معاذ بن جبل وشریح رضي اللّٰہ عنہما أنہما کانا لا یجیزانہا حتی تقبض‘‘ اہـ۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۵ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ এবং হযরত শুরাইহ রাঃ হেবার পূর্ণ হওয়ার ইজাযত দেননা কবজা করার আগ পর্যন্ত।   

عن إبراہیم قال: الہبۃ لا تجوز حتی تقبض، والصدقۃ تجوز قبل أن تقبض۔ (المصنف لعبد الرزاق / باب الہبات ۹؍۱۰۷، التعلیقات علی الہدایۃ / کتاب الہبۃ ۶؍۲۳۸ مکتبۃ البشری کراچی)
সারমর্মঃ
হযরত ইবরাহীম রহঃ বলন জায়েজ নেই,কবজা করার আগ পর্যন্ত।
ছদকাহ জায়েজ আছে কবজার আগেই।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
যেহেতু প্রশ্ন উল্লেখিত ফোন আপনার বাবা আপনাকে ক্রয় করে দিয়েছিল এবং সেটি আপনার কবজায় দিয়ে দিয়েছে।
সুতরাং সেই ফোনটির মালিক এখন আপনি।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
আপনি তাদেরকে নিষেধ করবেন এবং এগুলো যে হারাম সেটি তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন। বুঝানোর পরেও যদি তারা আপনার কথা না মানে এবং মিউজিক যুক্ত ভিডিও দেখে বা নাজায়েজ কিছু দেখে,সেক্ষেত্রে তাদের গুনাহ আপনার উপর বর্তাবে না।

(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
সাহাবী আনাস রাযি. বলেন,

وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ، وَنَتْفِ الإِبِطِ، وَحَلْقِ الْعَانَةِ، أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ يَوْماً.

অর্থাৎ, গোঁফ ছোট রাখা , নখ কাঁটা, বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নিচের লোম চেঁছে ফেলার জন্যে আমাদেরকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যেন, আমরা তা করতে চল্লিশ দিনের অধিক দেরী না করি। (মুসলিম ২৫৮)

وفى الدر المختار- والأفضل يوم الجمعة وجاز في كل خمسة عشرة وكره تركه وراء الأربعين (رد المحتار على الدر المختار، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/582-583

উত্তম হলো প্রতি জুমআয় পরিস্কার করা,প্রত্যেক পনের দিন পর পরেও পরিস্কার করা জায়েজ আছে,তবে চল্লিশ দিন অতিক্রম করলে মাকরুহ হবে। 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  নাভীর নীচের অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা হলোঃ-

পায়ের পাতার উপর ভর করে বসা অবস্থায় নাভী থেকে চার পাঁচ আঙ্গুল পরিমাণ নীচে যে ভাঁজ বা রেখা সৃষ্টি হয় সেখান থেকেই অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা শুরু। ঐ ভাঁজ থেকে দুই উরু পর্যন্ত ডান বামের লোম, গোপনাঙ্গের চার পাশের লোম, অণ্ডকোষ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত উদগত লোম এবং প্রয়োজনে মলদ্বারের আশ-পাশের লোম অবাঞ্ছিত লোমের অন্তর্ভুক্ত।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
চেষ্টার পরেও যদি মলদ্বারের আশ-পাশের কিছু লোম থেকে যায়,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৪)
বিলম্ব না করে যদি সেই টাকা/বস্তু আপনি সেখানে রেখে আসেন,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

(০৫)
এক্ষেত্রে উক্ত সালামের জবাব ইশারায় দেয়াও জায়েজ হবেনা।

(০৬)
জায়েজ আছে।
তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে পরিবেশ বিপর্যয় হয়,এমনটি করা যাবেনা।
হারাম কাজে ব্যবহার করা যাবেনা।

(০৭)
মালিকের পক্ষ নিষেধাজ্ঞা না থাকলে সেক্ষেত্রে এটি নাজায়েজ হবেনা।

সাধারণত এক্ষেত্রে অনুমতি নিয়ে আয়না দেখার পরামর্শ থাকবে। 

(০৮)
এক্ষেত্রে ছাত্র তো কোনো মিথ্যা বলেনি,বা শিক্ষকদের এমনটি করতেও বলেনি,সুতরাং এতে ছাত্রের গুনাহ হবেনা।

এই রেজাল্ট কার্ড অন্য কাউকে প্রদর্শন এর উদ্দেশ্যে দেখাতে পারবে।
তবে এর দ্বারা কাউকে ধোকা দেয়া যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...