কুরআনের একটি আয়াতকে অস্বীকার করলে,আল্লাহর আকাট্য ভাবে প্রমানীত যেকোনো ফরজ বিধান অস্বীকার করলে ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে।
সুরা আল-বাকারাহ : ২/৩৯ ,২/৪১
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِـَٔايٰتِنَآ أُولٰٓئِكَ أَصْحٰبُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خٰلِدُونَ
আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী ; অন্তকাল সেখানে থাকবে।
وَءَامِنُوا بِمَآ أَنزَلْتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمْ وَلَا تَكُونُوٓا أَوَّلَ كَافِرٍۭ بِهِۦ ۖ وَلَا تَشْتَرُوا بِـَٔايٰتِى ثَمَنًا قَلِيلًا وَإِيّٰىَ فَاتَّقُونِ
আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ ।
সূরা আন-নিসা : ৪/৫৬, ৪/১৪০
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِـَٔايٰتِنَا سَوْفَ نُصْلِيهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُم بَدَّلْنٰهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُوا الْعَذَابَ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيمًا
এতে সন্দেহ নেই যে, আমার আয়াত সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী ।
الَّذِينَ يَتَرَبَّصُونَ بِكُمْ فَإِن كَانَ لَكُمْ فَتْحٌ مِّنَ اللَّهِ قَالُوٓا أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْ وَإِن كَانَ لِلْكٰفِرِينَ نَصِيبٌ قَالُوٓا أَلَمْ نَسْتَحْوِذْ عَلَيْكُمْ وَنَمْنَعْكُم مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ ۚ فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ۗ وَلَن يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكٰفِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلًا
আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফিক ও কাফিরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন ।
সূরা আল মু’মিনুন :২৩/১০৪, ১০৫, ১০৬
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كٰلِحُونَ
আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।
أَلَمْ تَكُنْ ءَايٰتِى تُتْلٰى عَلَيْكُمْ فَكُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
(বলা হবে)তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে।
قَالُوا رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَآلِّينَ
তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি ।
সূরা আল আনকাবুত : ২৯/২৩, ৪৭, ৪৯
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِـَٔايٰتِ اللَّهِ وَلِقَآئِهِۦٓ أُولٰٓئِكَ يَئِسُوا مِن رَّحْمَتِى وَأُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাতকে অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
وَكَذٰلِكَ أَنزَلْنَآ إِلَيْكَ الْكِتٰبَ ۚ فَالَّذِينَ ءَاتَيْنٰهُمُ الْكِتٰبَ يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۖ وَمِنْ هٰٓؤُلَآءِ مَن يُؤْمِنُ بِهِۦ ۚ وَمَا يَجْحَدُ بِـَٔايٰتِنَآ إِلَّا الْكٰفِرُونَ
এভাবেই আমি আপনার প্রতি কিতাব অবর্তীণ করেছি। অতঃপর যাদের কে আমি কিতাব দিয়েছিলাম, তারা একে মেনে চলে এবং এদেরও (মক্কাবাসীদেরও) কেউ কেউ এতে বিশ্বাস রাখে। কেবল কাফেররাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।
সূরা আহকাফ :৪৬/২৬
وَلَقَدْ مَكَّنّٰهُمْ فِيمَآ إِن مَّكَّنّٰكُمْ فِيهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَأَبْصٰرًا وَأَفْـِٔدَةً فَمَآ أَغْنٰى عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَلَآ أَبْصٰرُهُمْ وَلَآ أَفْـِٔدَتُهُم مِّن شَىْءٍ إِذْ كَانُوا يَجْحَدُونَ بِـَٔايٰتِ اللَّهِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
আমি তাদেরকে এমন বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলাম, যে বিষয়ে তোমাদেরকে ক্ষমতা দেইনি। আমি তাদের দিয়েছিলাম, কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়, কিন্তু তাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তাদের কোনো কাজে আসল না, যখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করল এবং তাদেরকে সেই শাস্তি গ্রাস করে নিল, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত।
সূরা আত তাগাবুন : ৬৪/১০
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِـَٔايٰتِنَآ أُولٰٓئِكَ أَصْحٰبُ النَّارِ خٰلِدِينَ فِيهَا ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তথায় অনন্তকাল থাকবে। কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল এটা।
সূরা আল বালাদ : ৯০/১৯
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِـَٔايٰتِنَا هُمْ أَصْحٰبُ الْمَشْـَٔمَةِ
আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা।
ویکفر إذا أنکر آیةً من القرآن". ( البحر الرائق : باب أحکام المرتدین : 5/205)
সারমর্মঃ
যখন কেহ এক আয়াতকে অস্বীকার করে,সে কাফের হয়ে যাবে।
"أنکر آیةً من القرآن کفر". ( شرح الفقه الأکبر لملا علي القاری ص: 167)(وكذا في الفتاوى الهندية، 2/266 رشیدیه)
কুরআনের এক আয়াতকে অস্বীকার করা,সে কুফরী।
,
★কুরআনের একটি আয়াত অস্বীকার করলে পুরো কোরআন অস্বীকার করা হয় এটা সম্পর্কে কোনো আয়াত/হাদীস পাইনি।
.
(০২)
শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে।
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি।
. الشرك في عبادة الله তথা আল্লাহর ইবাদতে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করা। আল্লাহর সাথে শিরক বিভিন্নভাবে হ’তে পারে।
ইবাদত পাওয়ার একমাত্র উপযুক্ত সত্তা আল্লাহ তা‘আলাকে না মেনে তাঁর সাথে আরো কাউকে যোগ্য বলে মনে করা।
,
আরো জানুনঃ
,
শিরকে জলি করলে ঈমান চলে যায়।
সে মুরতাদ,যদি সে মুসলিম হতে চায়,তাহলে তাকে নতুন করে কালেমা পড়তে হবে।
মুরতাদ ব্যাক্তি মুসলমান হলে তাকে গোসল করতে হবে কিনা,বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০৩)
কুফরী দুই প্রকারঃ
১. বড় কুফরীঃ যা মানুষকে দ্বীন থেকে বের করে দেয়। যেমনঃ আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামকে গালি দেওয়া অথবা ইসলামের রুকনসমূহ সহ আল্লাহ কর্তৃক ফরযকৃত দ্বীনের অন্যান্য যরূরী বিষয়ের কোনো কিছুকে অস্বীকার করা। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ﴾ [التوبة: ٦٥، ٦٦]
“আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্র সাথে, তাঁর আয়াতের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করতে? ওযর পেশ করো না, নিশ্চয় তোমরা ঈমান আনার পর (ঠাট্ট-বিদ্রূপের কারণে) কাফের হয়ে গেছ” (তাওবাহ ৬৫-৬৬)।
২. ছোট কুফরীঃ যেমনঃ আল্লাহত নিয়ামত অস্বীকার করা অথবা কোনো মুসলিম ব্যক্তির সাথে অন্যায়ভাবে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ»
“মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া ফাসেক্বী এবং তার সাথে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা কুফরী” (বুখারী)।
,
(০৪)