আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

১। নানু বাড়ি থেকে বাসে সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরার বাসগুলোতে প্রচুর ভীর থাকে। আজ নানু বাড়ি থেকে বাসায় ফেরার সময়ও ঠিক একই অবস্থা, বাসে আমরা মোট ৩জন মেয়ে যাত্রী ছিলাম যারা দাঁড়িয়ে ছিল, আর পুরো বাস জুড়ে কয়েকটা মেয়ে ছিল যারা বসে ছিল, বাকি যব যাত্রী ছিল পুরুষ, পুরুষ বললে ভুল হবে তারা আসলে ছিল ব্যক্তিত্বহীন পঙ্গু পুরুষ! বাসে উঠার সময় অনিচ্ছাকৃত পুরুষের দেহের সাথে বেশ কয়েকবার হালকা স্পর্শ লেগেছে, ৪০ মিনিটের পুরো রাস্তাটা আমি কাঁদতে কাঁদতে এসেছি, বারবার মনে হচ্ছিল শরীরের সেসব জায়গা কেটে আগুন লাগিয়ে দেই। আমার আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন এমন না হয় তাও হয়েছে, এতে কি আমার গুনাহ হয়েছে? বাসায় এসেও কিছুতেই মন স্থির করতে পারছি না বার বার কান্না আসছে।

২। আমার মামা তামাকের বিসনেস করে, নানু বাসায় যেহুতু গিয়েছি তাই তারা না খেয়েও আসতে দিবেন না, তারউপর রোজা ছিলাম, তাই ইফতার করে ভাত না খাওয়া পর্যন্ত তারা ছাড়েন নাই। এটা তো স্পষ্ট যে তাদের ইনকাম হারাম, কিন্তু আমি তাদের মুখের উপর না করতে পারিনি, আমার বারবার মনে হচ্ছে যে আমি আমি হারাম খেয়েছি বিধায় আমার রব আমার উপর খুব নারাজ, আমার ইবাদত কবুল হবে না, এখন আমি কি করতে পারি? কিভাবে এই পাপ থেকে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন?
এমন পরিস্থিতীতে যদি আবার পড়ি তখনই বা কি করবো?
আমি কোন ভাবেই আমার মনকে শান্ত করতে পারছি না, বাসায় আসার পর থেকেই একটা অশান্ত মন নিয়ে বারবার ছটফট করছি আমাকে উত্তম পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন ইনশাআল্লাহ।

জাঝাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ।

1 Answer

0 votes
by (644,340 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://www.ifatwa.info/122138/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

হযরত আবি উসায়িদ আল-আনসারি হতে বর্ণিত,

 ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻠﻤﺔ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﻳﻌﻨﻲ ﺍﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﻴﻤﺎﻥ ﻋﻦ ﺷﺪﺍﺩ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﺣﻤﺎﺱ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﺣﻤﺰﺓ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺃﺳﻴﺪ ﺍﻷﻧﺼﺎﺭﻱ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ
ﺃﻧﻪ ﺳﻤﻊ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﻭﻫﻮ ﺧﺎﺭﺝ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻓﺎﺧﺘﻠﻂ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﻣﻊ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﺮﻳﻖ ﻓﻘﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻠﻨﺴﺎﺀ ﺍﺳﺘﺄﺧﺮﻥ ﻓﺈﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻟﻜﻦ ﺃﻥ ﺗﺤﻘﻘﻦ ﺍﻟﻄﺮﻳﻖ ﻋﻠﻴﻜﻦ ﺑﺤﺎﻓﺎﺕ ﺍﻟﻄﺮﻳﻖ ﻓﻜﺎﻧﺖ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺗﻠﺘﺼﻖ ﺑﺎﻟﺠﺪﺍﺭ ﺣﺘﻰ ﺇﻥ ﺛﻮﺑﻬﺎ ﻟﻴﺘﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﺠﺪﺍﺭ ﻣﻦ ﻟﺼﻮﻗﻬﺎ ﺑﻪ
ﺑﺎﺏ ﻓﻲ ﻣﺸﻲ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻣﻊ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﺮﻳﻖ
 হামাযাহ ইবনু আবূ উসাইদ আল-আনসারী (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দেখেন, রাস্তায় পুরুষরা মহিলাদের সঙ্গে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের বললেনঃ তোমরা একটু অপেক্ষা করো। কারণ
তোমাদের রাস্তার মাঝ দিয়ে চলাচলের পরিবর্তে পাশ দিয়ে চলাচল করা উচিৎ। সুতরাং মহিলারা দেয়ালের পাশ দিয়ে চলাচল করতো, এতে তাদের চাদর দেয়ালের সঙ্গে আটকে যেতো।(সুনানু আবি দাউদ-৫২৭২)

হযরত ইবনু উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، نَهَى أَنْ يَمْشِيَ يَعْنِي الرَّجُلَ بَيْنَ الْمَرْأَتَيْنِ»

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো পুরুষকে দুই মহিলার মধ্যবর্তী হয়ে হাটাহাটি বা চলাচল করতে নিষেধ করেছেন।(সুনানু আবি দাউদ- ৫২৭৩)

নারী-পুরুষের পৃথক পৃথক যানবাহন হওয়াই উচিৎ ছিলো। যে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছিলো শাসক মহলের।সে জন্য এর জবাবদিহিতা শাসকের করতে হবে।

সেটা যখন সম্ভব হয়নি, তাই অন্তত যানবাহনে মহিলার জন্য সিট ছেড়ে  দেয়ার কাজটা পালন করা পুরুষ দায়িত্ব ও একান্ত কর্তব্য।

তাছাড়া শারিরিক গঠন হিসেবেও যানবাহনে পুরুষের জন্য দাড়িয়ে যাওয়াটা যুক্তিসংগত।
মহিলাদের দাঁড়িয়ে যাওয়া তেমন যুক্তিসঙ্গত নয়।

গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে  ঘষাঘষি করে গায়ে গায়ে মিলিত অবস্থায় বাসে বসা,দাঁড়ানো বা নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা আবশ্যক ।

তবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও গায়রে মাহরাম পুরুষ এর সাথে স্পর্শ লাগলে আপনাকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন।
তবে এভাবে নিয়মিত যাতায়াত করা যুক্তিসঙ্গত হবেনা।

তাই অন্য কোনো উপায় না থাকলে এ অবস্থা থেকে  নিজেকে নাজাত দিতে নিয়মিত যাতায়াত ছেড়ে দিয়ে বাসায় পড়াশোনা করাই একান্ত কর্তব্য বলে মনে হচ্ছে।
শুধু পরীক্ষার সময় গিয়ে যুক্ত হবেন।
অথবা সম্পূর্ণ ভাবে নিরাপদ হলে মহিলা হোস্টেলে থাকতে পারেন।

আরো জানুনঃ- 

সিএনজিতে পুরুষের পাশে নারীর প্রয়োজনে বসতে হলে এভাবে মাঝে মাঝে যাতায়াত করতে পারবে।

তবে শর্ত হলো যাতায়াত নিরাপদ হওয়া, ফিতনার আশংকা না থাকা।
যাতায়াত দিনের বেলা হতে হবে, এলাকা,স্থান,কাল হিসেবে যাতায়াত শতভাগ নিরাপদ হতে হবে।

হাত,পা চেহারা সহ পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে যাতায়াত করতে হবে,আকর্ষনীয় বোরকা পরিধান করা যাবেনা।

সবচেয়ে ভালো হবে সম্ভব হলে ২ সিট ভাড়া করে যাওয়া।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু জানতেন যে নানু বাড়ি থেকে বাসে সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরার বাসগুলোতে প্রচুর ভীর থাকে। 

সুতরাং সেই সময় বাসে উঠা ঠিক হয়নি।
অন্য কোনো যানবাহনে উঠতে হতো,অথবা দিনের বেলা বাসে যখন ভীর কম থাকে,তখন উঠতে হতো,অথবা যে বাসে সিট পাওয়া যাবে,দেড়িতে হলেও সেই বাসে উঠতে হতো।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করে নিবেন।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার দোয়া ইবাদত কবুল হবে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...