ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মাসবুক ব্যক্তি যদি ভুলে গিয়ে ইমাম সাহেবের সাথে সালাম ফিরিয়ে নেয়, এবং পরক্ষণে সাথে সাথেই স্বরণ আসা মাত্র দাড়িয়ে যায়, এবং অবশিষ্ট নামাযকে সমাপ্ত করে নেয়, তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত মাসবুকের উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে কি না? সে সম্পর্কে মূলনীতি হল,
(ক) যদি মাসবুক ভুলে গিয়ে ইমাম সাহেবের সালামের সাথে সাথেই সালাম ফিরিয়ে নেয়, অর্থাৎ ঐ ব্যক্তির সালাম ইমাম সাহেবের সালামের সাথে সাথেই হয়, সালাম বলতে গিয়ে ইমাম সাহেব থেকে সামান্যও পিছপা না হয়( যদিও এটা প্রায় অসম্ভব) তাহলে এমন পরিস্থিতিতে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।
(খ) তবে যদি মাসবুক ব্যক্তি ইমাম সাহেবের সাথে সাথে সাথেই সালাম না ফিরায়, অর্থাৎ সালাম ফিরাতে গিয়ে ইমামের সাহেবের সালামের কিছুক্ষণ পর সালাম ফিরানো হয়ে থাকে, (যেটা স্বাভাবিক হয়ে থাকে) তাহলে এমতাবস্থায় সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।
বিঃদ্রঃ
যদি মাসবুক ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে ইমাম সাহেবর সাথে সলাম ফিরিয়ে নেয়, অথবা এমন মনে করে সালাম ফিরিয়ে নেয় যে, ইমামের সাথে সালাম ফিরানো জরুরী। তাহলে এমতাবস্থায় মাসবুকের ঐ নামায ফাসিদ বলেই গণ্য হবে। দ্বিতীয়বার ঐ নামাযকে পড়তে হবে।
যেই পদ্ধতিতে ভুলে মাসবুক ব্যক্তি সালাম ফিরিয়ে নিয়েছিলো, যদি ঐ ব্যক্তি সাহু সিজদা না করে,বরং নামাযকে সমাপ্ত করে ফেলে , তাহলে ওয়াক্তের ভিতরে ঐ নামাযকে দোহড়িয়ে নিতে হবে।
لما في الفتاوی الشامیة:
"(قَوْلُهُ: وَالْمَسْبُوقُ يَسْجُدُ مَعَ إمَامِهِ) ... فَإِنْ سَلَّمَ فَإِنْ كَانَ عَامِدًا فَسَدَتْ وَإِلَّا لَا، وَلَا سُجُودَ عَلَيْهِ إنْ سَلَّمَ سَهْوًا قَبْلَ الْإِمَامِ أَوْ مَعَهُ؛ وَإِنْ سَلَّمَ بَعْدَهُ لَزِمَهُ لِكَوْنِهِ مُنْفَرِدًا حِينَئِذٍ، بَحْرٌ، وَأَرَادَ بِالْمَعِيَّةِ الْمُقَارَنَةَ وَهُوَ نَادِرُ الْوُقُوعِ، كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. وَفِيهِ: وَلَوْ سَلَّمَ عَلَى ظَنِّ أَنَّ عَلَيْهِ أَنْ يُسَلِّمَ فَهُوَ سَلَامُ عَمْدٍ يَمْنَعُ الْبِنَاءَ". ( باب سجود السهو، ٢/ ٨٢ - ٨٣)
وفي الدر المختار :
"وَلَوْ سَلَّمَ سَاهِيًا إنْ بَعْدَ إمَامِهِ لَزِمَهُ السَّهْوُ وَإِلَّا لَا".
رد المحتار میں ہے:
"(قَوْلُهُ وَلَوْ سَلَّمَ سَاهِيًا) قَيَّدَ بِهِ لِأَنَّهُ لَوْ سَلَّمَ مَعَ الْإِمَامِ عَلَى ظَنِّ أَنَّهُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَعَهُ فَهُوَ سَلَامٌ عَمْدٌ، فَتَفْسُدُ كَمَا فِي الْبَحْرِ عَنْ الظَّهِيرِيَّةِ، (قَوْلُهُ: لَزِمَهُ السَّهْوُ)؛ لِأَنَّهُ مُنْفَرِدٌ فِي هَذِهِ الْحَالَةِ ح. (قَوْلُهُ: وَإِلَّا لَا) أَيْ وَإِنْ سَلَّمَ مَعَهُ أَوْ قَبْلَهُ لَايَلْزَمُهُ لِأَنَّهُ مُقْتَدٍ فِي هَاتَيْنِ الْحَالَتَيْنِ". ( شامي، قبيل باب الاستخلاف، ١ / ٥٩٩) فقط واللہ اعلم
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) ইমামের সাথে ভুলে সালাম ফেরানোর সাথে সাথেই যদি মাসবুকের অবশিষ্ট নামাযের কথা মনে পড়ে, তাহলে সে উক্ত অবশিষ্ট নামাযকে সম্পর্ণ করে নেবে। ব্যাখা এই যে,ইমাম সাহেবের আসসালমু এর মিম পর্যন্ত পৌছার পূর্বে যদি মাসবুক মুক্তাদির অবশিষ্ট নামাযের কথা স্বরণে চলে আসে, এবং সাথে সাথেই মুক্তাদি সালাম ফিরানো থেকে বিরত থাকে, তাহলে মুক্তাদির জন্য সাহু সিজদা ওয়াজিব হবেনা। আর যদি ইমাম সাহেবের আসসালমু এর মিম পর্যন্ত পৌছার পর মুক্তাদির অবশিষ্ট নামাযের কথা স্বরণে আসে ,তাহলে তখন মুক্তাদি অবশিষ্ট নাময পড়ার পর সাহু সিজদা দেবে। ইমাম সাহেবের সাথে যদি মাসবুক মুক্তাদি দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নেয়, তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত বুক কিবলার দিক থেকে না ফিরবে,ততক্ষণ পর্যন্ত অবশিষ্ট নামাযকে সাহু সিজদার সাথে পূর্ণ করা যাবে। বুক কিবলার দিক থেকে না ফিরার মধ্যে শর্ত এই যে, এমতাবস্থায় নামাযের মুনাফি তথা নামায বিরোধী কোনো কাজ সংগঠিত হতে পারবে না।
(২) ঐ জায়গায় বসে মাসনূন অজিফা করা অবস্থায় মনে পড়লে, নামাযের মুনাফি যেমন কথাবার্তা ইত্যাদি না পাওয়া গেলে উক্ত নামাযের অবশিষ্ট রাকাত কে পূর্ণ করা যাবে। তবে শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে।
(৩)সালাতের স্থান ত্যাগ করার পর মনে পড়লে, আর উক্ত নামাযকে বিনা করা যাবে না। অর্থাৎ অবশিষ্ট রাকাত আদায় করে নামাযকে সমাপ্ত করা যাবে না। বরং এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নামাযকে আবার নতুন করে পড়তে হবে।
(৪)সালাতের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর মনে পড়লে, উক্ত নামাযকে আবার নতুন করে পড়তে হবে।
(বিস্তারিত ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৬/৫৫০)