আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আস সালামু আলাইকুম,
গত ০৮  নভেম্বর আমার বিয়ে হয়।

বিয়ের পর আমি আমার পুরনো প্রেমিককে বিয়ে করতে চাই এই মর্মে আমার পরিবার ও আমার স্বামীকে আবদার করলে তারা অসীকৃতি জানায়। তারপর বিয়ের দেড় মাস পর আমি পালিয়ে পুরনো প্রেমিকের কাছে আশ্রয় নিই। পুরনো প্রেমিক আর আমি আলোচনা করে ১ম স্বামীকে আদালত নোটিশের মাধ্যমে ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর করে দেই। এবং তার চারমাস পর আমি আর আমার প্রেমিক দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করি।  এখন বিয়ের ১৫ দিন সংসারের পর ২য় স্বামী আমার সাথে সংসার করতে ইচ্ছুক না।
বি:দ্র:

১. ১ম বিয়ের কাবিনে ১৮ নং কলামে স্ত্রী কর্তৃক তালাকের অধিকার দেওয়া হয় নি।

২. প্রথম স্বামী ডিভোর্স পেপার রিসিভ করে সাইন করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে (সাইন করে দিলে অথবা মনে মনে এ তালাক মেনে নিলেও কি তালাক কার্যকর হবে)


প্রশ্ন ১. আমার দ্বিতীয় বিবাহ কি বৈধ হয়েছে? দ্বিতীয় বিবাহ বৈধ করতে কি করনীয়?
প্রশ্ন ২. যদি বৈধ না হয় তবে ১ম স্বামীর নিকট ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে ইসলাম কতটুকু সমর্থন করে এবং কিভাবে?


প্রশ্ন ৩: এক্ষেত্রে আমার ভুল/অপরাধ /পাপের ক্ষমা কিভাবে পাওয়া যায়?

1 Answer

0 votes
by (647,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।    

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি স্বামী কর্তৃক তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত হননি, পাশাপাশি আপনি আপনার স্বামীকে তালাক দিয়েছেন, সুতরাং উল্লেখিত ছুরতে তালাক পতিত হয়নি। আপনি এখনো প্রথম স্বামীর বৈধ স্ত্রী হিসেবেই বহাল রয়েছেন।

আপনার দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ হয়নি, দ্বিতীয় স্বামীর সাথে ঘর সংসার সম্পূর্ণ যেনার অন্তর্ভুক্ত।

(০২)
আপনি এখনো প্রথম স্বামীর বৈধ স্ত্রী হিসেবেই বহাল রয়েছেন।

সুতরাং তার কাছে দ্রুত ফিরে যেতে হবে।
এক্ষেত্রে কোনো কিছু করতে হবেনা।

(০৩)
যেহেতু আপনার দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ হয়নি, দ্বিতীয় স্বামীর সাথে ঘর সংসার সম্পূর্ণ যেনার অন্তর্ভুক্ত।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেনায় লিপ্ত হওয়ার দরুন আপনার মারাত্মক গুনাহ হয়েছে।

আল্লাহর কাছে এই মারাত্মক গুনাহ থেকে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে তওবা করতে হবে। ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ করবেনা বলে আল্লাহর কাছে ওয়াদা বদ্ধ হতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
হুজুর, 
২য় বিয়ে করার ফলে আমি এবং আমার ২য় স্বামী দুইজনেই যদি যেনার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকি তবে এই যেনার জন্য  আমরা দুইজনের জন্যই পাথর মেরে হত্যার (রজম) মত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়েছে ? 
by (647,730 points)
আপনার দ্বিতীয় স্বামী যদি বিবাহিত হয় সেক্ষেত্রে আপনাদের উভয়ের শাস্তি প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড হবে। আর যদি আপনার দ্বিতীয় স্বামী বিবাহিত না হয় সেক্ষেত্রে শুধু আপনার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে, আপনার দ্বিতীয় স্বামীর শাস্তি ১০০টি বেত্রাঘাত হবে।

★ উল্লেখ্য যে আমাদের দেশে শরীয়াহ আইন না থাকায় এদেশে এ শাস্তি কার্যকর হবে না।

এক্ষেত্রে করনীয় হলো উক্ত গুনাহ থেকে ফিরে এসে  মহান আল্লাহতালার কাছে খালেস দিলে তওবা করতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...