আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)
আমার পরিচিত একজনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন । তিনি বলেন
আসসালামু আলাইকুম।
আমি অস্ট্রেলিয়াতে লেখা পড়া করতে এসেছি। আমার ভিসার শর্ত অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারব না। এখানে আসার পুর্বে আমি এই নিয়মটি সম্পর্কে অবগত ছিলাম কিন্তু হালাল হারাম এর বিষয় এমন সময় মাথায় আসে যখন পিছিয়ে যাওয়ার উপায় ছিলো না। এটি একটি অমুসলিম দেশ।
প্রশ্ন ১ : প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টার বেশি কাজ করা কি হারাম হবে। নাকি আমার লেখা পড়া ঠিক রেখে যত ইচ্ছা তত ঘন্টা কাজ করতে পারব এবং কখনও যদি ২৪ ঘন্টার চেয়ে ১, ২,  বা ৩ ঘন্টা বেশি হয় তাহলে কি অতিরিক্ত সময়ের উপার্জন হারাম হবে ?
প্রশ্ন ২ : যদি যত ইচ্ছা কাজ করা হারাম না হয় তাহলে আমাকে হ্যান্ড-ক্যাশ জব করতে হবে। বাংলাদেশে দিনমজুররা যেভাবে বেতন পায় অর্থাৎ কোনো রেকর্ড থাকে না এবং টাক্সও দিতে হয় না। কারন ট্যাক্স জবে সপ্তাহে ২৪ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারব না।  তাই এই পদ্ধতি। এইভাবে ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কাজ করা কি হালাল হবে ? ( ট্যাক্স বলতে সরাসরি বেতন থেকে টাকা কেটে নেয়)
এই মুহুর্তে আমি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা কাজ করি এবং তারা বেতন দেওয়ার সময় ট্যাক্স কেটে রাখে।  এখানে ট্যাক্স কাটার নিয়ম নিছে দেওয়া হল :
অস্ট্রেলিয়ায় ট্যাক্স কীভাবে কাটা হয়?
✅ যেকোনো চাকরিজীবী বা বেতনভুক্ত কর্মীর নিয়োগকর্তা (employer) তাদের বেতন থেকে অগ্রিম ট্যাক্স কেটে রাখে — একে PAYG withholding বলা হয় (Pay As You Go)।

✅ নিয়োগকর্তা প্রতিটি বেতন পর্বে (মাসিক/সাপ্তাহিক) Australian Tax Office (ATO)-তে সেই টাকা জমা দেন।

✅ অর্থবছর শেষে (30 জুন পর্যন্ত) আপনি ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করলে মোট আয়ের ভিত্তিতে আপনার আসল ট্যাক্স হিসাব হয় — বেশি কেটে থাকলে টাকা ফেরত (refund), কম কেটে থাকলে বাকি টাকা দিতে হয়।

 কত হারে ট্যাক্স কাটা হয়?
 আপনার Tax File Number (TFN) জবের সময় দিতে হয় — না দিলে সর্বোচ্চ হারে ট্যাক্স কেটে নেবে।

 কত হারে ট্যাক্স কাটবে, সেটা আপনার বার্ষিক আয়ের অনুমান (income estimate) এবং ATO-এর tax table-এর ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ (2024–25 অর্থবছরের হার):

$18,200 পর্যন্ত কোনো ট্যাক্স নেই (tax-free threshold)।

$18,201–45,000 পর্যন্ত 19% হারে।

$45,001–120,000 পর্যন্ত 32.5% হারে।

এর বেশি আয় হলে উচ্চ হারে প্রগতিশীল ট্যাক্স প্রযোজ্য হয়।

 সুপার্যানুয়েশন (Superannuation)
ট্যাক্সের পাশাপাশি নিয়োগকর্তা আপনার রিটায়ারমেন্ট ফান্ডে (super fund) সুপার্যানুয়েশন গ্যারান্টি (Super Guarantee) হিসাবে অতিরিক্ত টাকা জমা দেন — 2024–25 এ হার 11.5%।

1 Answer

0 votes
by (639,720 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলাম মানুষকে যেসব উন্নত চরিত্রের শিক্ষা দেয়, তন্মধ্যে অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি ও চুক্তির বাস্তবায়ন। যেকোনো ভালো কাজের অঙ্গীকার পূরণ করা ওয়াজিব।

 পবিত্র কোরআনে ওয়াদার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ হয়েছে, 
يا ايها الذين امنوا اوفوا بالعقود
'হে ইমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করবে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১)
الا الذين عاهدتم من المشركين.....

তবে যেসব মুশরিকের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, পরে তারা চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, আর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সেই চুক্তি তোমরা মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ দায়িত্বনিষ্ঠদের ভালোবাসেন। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
,
ওয়াদা (চুক্তি) পালনকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। যেমন তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ওয়াদা পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)। 
.
ইসলামে অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘন করা থেকেও নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, '(অমুহাজির মুসলমানরা) তোমাদের সাহায্য চাইলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্যকর্তব্য, তবে সে সাহায্য যদি এমন কোনো (অমুসলিম) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হয়, যাদের সঙ্গে তোমাদের কোনো চুক্তি আছে, তবে নয়।' (সুরা আনফাল, আয়াত : ৭২)
.
চুক্তি মোতাবেক কাজ করা ইমানের একটি অপরিহার্য বিষয়। প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি কখনো তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও তাঁরা ওয়াদা রক্ষা করেন।

নবীজি (সা.) ওয়াদা করলে যেকোনো মূল্যে তা পালন করতেন। ইসলামে ওয়াদা পালনের ব্যাপারে শত্রু-মিত্র, মুসলিম-অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হুদায়বিয়ার সন্ধি। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও কুরাইশদের মধ্যে এ সন্ধিচুক্তি ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু কুরাইশরা যখন এ সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ করে, তখন মহানবী (সা.) অগত্যা এ সন্ধি নাকচ করে দেন। এ ছাড়া কাফিরদের সঙ্গে আরো বহু চুক্তি হয়েছে। যেসব কাফির চুক্তি ভঙ্গ করেনি, এই আয়াতে তাদের সঙ্গে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
.
ওয়াদা,চুক্তি ভঙ্গ কারীকে হাদীস শরীফে মুনাফিক বলা হয়েছেঃ  
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ "

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকের আলামত বা নিদর্শন তিনটি। সে (১) কথা বললে মিথ্যা বলে; (২) ওয়াদাহ করলে তা ভঙ্গ করে এবং (৩) তার নিকট আমানাত রাখা হলে সে তার খিয়ানাত করে।
(তিরমিজি ২৬৩১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টার বেশি কাজ করলে তাহা চুক্তি ভঙ্গ হবে।
বিধায় এতে ওয়াদা খেলাফির গুনাহ হবে।

তবে প্রশ্নের বিবরন মতে কোনো হালাল কাজ করলে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময়ের উপার্জন হারাম হবেনা।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে হ্যান্ড-ক্যাশ জব যদি সরকারী ভাবে অনুমোদিত হয়,কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকে,সেক্ষেত্রে কাজ হালাল হবে।

অন্যথায় কাজ হালাল হলেও ট্যাক্স ফাঁকির গুনাহ হবে।

কিন্তু সর্বাবস্থায় এক নং প্রশ্নের জবাব মোতাবেক সপ্তাহে ২৪ ঘন্টার বেশি কাজ করলে চুক্তি ভঙ্গের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...