আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু উস্তাদ, গত ২ মাস ধরে এক পাত্রপক্ষের সাথে বিয়ের কথা বার্তা চলছিল। সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছিল শুধু আমাকে দেখা বাকি ছিল এবং আমাকে পছন্দ হলে সেদিনই বিয়ে করাবে। পাত্রপক্ষ দেখতে আসার এক সপ্তাহ আগে পাত্রের সাথে আমার ফোনে কথা হয়। পাত্র আমাকে কিছু প্রশ্ন করে আমিও পাত্রকে কিছু প্রশ্ন করি। পাত্রকে আমি ইসলামের বেসিক কিছু প্রশ্ন করি। পাত্রকে আমি আমাকে মাহরাম, নন মাহরাম মেইনটেইন করাতে পারবে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পারবে ইনশাআল্লাহ। পরদিন থেকে আমি ইস্তেখারার নামাজ আদায় করি এবং তারা দেখতে আসার আগ মুহুর্তেও ইস্তেখারার নামাজ আদায় করি। পাত্রের বাবা আর পাত্র দেখতে আসে। যেহেতু আমার ফ্যামিলিতে আমি আর আমার ছোট বোন ব্যতিত কেউই মাহরাম নন মাহরাম মেইনটেইন করে না, তাই আমার অসম্মতির সত্ত্বেও তারা চেয়েছিল পাত্রের বাবা যেন আমাকে দেখে। পরবর্তীতে হিজাব পরে ওনাদের সামনে যাই। কিন্তু এক পর্যায়ে পাত্রের বাবা আমার চুল দেখতে চাইলে আমি ডিরেক্ট অস্বীকৃতি জানাই। যার ফলে তারা আমার আচরণ ভালো লাগেনি এবং আমি বেশি ধার্মিক বলে বিয়ে না করিয়ে চলে যায়। আমি মনে করি, এই পাত্র আমার জন্য কল্যাণকর ছিলনা বলেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বিয়েটা হতে দেয়নি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমার আম্মু বলেন, আল্লাহ ভালোর জন্য করছেন নাকি খারাপের জন্য তা আমরা কেউই জানিনা এবং আম্মু এখনো মানতে পারছে না যে, এখানে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার জন্য কল্যাণ রয়েছেন। এরূপ চিন্তা ভাবনা করার কারণ হলো, আমার বয়স বেশি হয়ে গেছে, আমার বিয়ের ক্ষেত্রে নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছি এবং পাত্র ইঞ্জিনিয়ার ছিল।
উস্তাদ আমার প্রশ্ন হলো,

১. আমার আম্মুর কথা কি সঠিক? আর যদি সঠিক না হয় তাহলে আম্মু এই কথা বলা এবং মনে করার কারণে কি গুনাহ হয়েছে বা ঈমান নষ্ট হয়ে গিয়েছে?
২. আর আমি পাত্রের বাবার সাথে এরূপ আচরণ করায় কি আমার গুনাহ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (636,510 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

 এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2898

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পাত্রের বাবা পাত্রী দেখতে পারবেনা।
এটা নাজায়েজ।

সুতরাং চেহারা অনাবৃত রেখে পাত্রের বাবার সামনে যাওয়া জায়জ হবেনা।

গেলে অন্যান্য গায়রে মাহরামদের সামনে যাওয়ার ন্যায় হাত,পা,চেহারা সহ পুরো শরীর সম্পূর্ণ পর্দা করতে হবে।

চেহারা খুলে ফ্যামিলি সামনে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ফ্যামিলির চাপ মানা যাবেনা।
জবরদস্তি করে পাঠিয়ে দিলে সেক্ষেত্রে এর গুনাহ ফ্যামিলি ও পাত্রের বাবার হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
উক্ত বিবাহ ভেঙ্গে যাওয়া আপনার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণকর নাকি অকল্যাণকর সেটি আমরা কেহই বলতে পারিনা।

তাই আপনার আম্মুর কথা সঠিক কিনা,তাও নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না।

তবে এর দরুন আপনার আম্মুর গুনাহ হয়নি, ঈমান নষ্ট হয়ে যায়নি।

(০২)
গুরুজন হিসেবে পাত্রের বাবার সামনে হিজাব পড়ে গিয়ে চুল না দেখানোয় আপনি তাকে অপমান করেননি,তাকে ইসলামের আসল শিক্ষা শিখিয়েছেন। এতে আল্লাহ নারাজ হবেননা,বরং আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি সঠিক পথেই আছেন।

তবে আপনি যদি পাত্রের বাবাকে চেহারা দেখিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনারও গুনাহ হবে।

(পরবর্তী পাত্র গুলোর ক্ষেত্রে আপনি পাত্রের বাবাকে চেহারা+চুল কোনোভাবেই দেখাবেনন্স।

তদুপরি আপনার পরিবার যদি জবরদস্তি করে আপনাকে পাত্রের বাবার সামনে পাঠিয়ে দেয়, সেক্ষেত্রে এর গুনাহ আপনার পরিবার ও পাত্রের বাবার হবে। এমতাবস্থায় আপনিও আল্লাহর কাছে তওবা করে নিবেন।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...