আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,911 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
edited by
মারা যাওয়া ব্যক্তি কি তাকে কবরে শোয়াবার আগ পর্যন্ত তার চারপাশের মানুষ দের কে দেখতে পায়? বা তারা কি বলছে তা কি শুনতে পায়?

এই ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?

২ নাবালক এতিমের উপর জাকাত কি ফরজ? কেউ যদি নাবালাক এতিমের জাকাত আদায় করে এতিম এর সম্পদ থেকে তাহলে সে কি এতিমের হক নষ্ট করলো?

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
কবরস্থ করার পর মৃত ব্যাক্তি দুনিয়ার কোনো কিছু দেখতে পারে কিনা, তারা দুনিয়ার কারো কথা শুনতে পারে কিনা,এই বিষয়ে খোদ ছাহাবায়ে কেরামদের মাঝেই মতবিরোধ রয়েছে। 

সুতরাং এই বিষয় নিয়ে আমদের চিন্তা করা উচিত নয়।
না এই বিষয় সম্পর্কে আমাদের প্রশ্ন করা হবে, না এটি আমাদের নাজাতের উসিলা হবে,না এর সাথে আমাদের দ্বীনি আমলের কোনো সম্পর্ক রয়েছে।

পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন হাদীস আছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما من مسلم يمر بقبر أخيه كان يعرفه في الدنيا فَيُسَلم عليه، إلا رد الله عليه روحه، حتى يرد عليه السلام».

“যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তি দুনিয়াতে পরিচিত তার কোনো মৃত্যু ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে গমন করে এবং তাকে সালাম দিলে তখন তার সালামের উত্তর দেওয়ার জন্য আল্লাহ তার রূহকে ফেরত দেন।”

(ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসটি ইবন আব্দুল বার রহ. তার সনদে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। দেখুন, আল-ইসতিযকার, ১/১৮৫; আর-রূহ ফিল কালাম ‘আলা আরওয়াহিল আমওয়াতি ওয়াল আহইয়াই বিদ-দালায়িলি মিনাল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, ইবনুল কাইয়্যিম রহ. পৃষ্ঠা ৫।)
,
বিস্তারিত জানুনঃ   

★দারুল উলুম দেওবন্দ এর 38875 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে এক্ষেত্রে তারা চারপাশের মানুষদের দেখতে পারে কিনা,আওয়াজ শুনতে পারে কিনা এই বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত নয়।
এটা সম্পর্কে আমাদের চিন্তা করা যাবেনা।
আল্লাহই ভালো জানেন।     

(০২)
যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত। কুরআন মজীদে বহু স্থানে সালাত-যাকাতের আদেশ করা হয়েছে।

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰

 ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْن
‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲
‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’

অন্য আয়াতে যাকাতের গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّیْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَیْهِمْ ؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ۱۰٣
‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দুআ করবেন। আপনার দুআ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’-সূরা তাওবা : ১০৩
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    
যাকাত ইসলামের একটি অপরিহার্য ইবাদত। এজন্য শুধু মুসলিমগণই যাকাত আদায়ের জন্য সম্বোধিত হন। সুস্থমস্তিষ্ক, আযাদ, বালেগ মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে যাকাত আদায় করা তার ওপর ফরয হয়ে যায়। -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯ বাদায়েউস সানায়ে ২/৭৯,৮২
 
কাফির যেহেতু ইবাদতের যোগ্যতা রাখে না তাই তাদের ওপর যাকাত আসে না।
এছাড়া অসুস্থমস্তিষ্ক মুসলিমের ওপর এবং নাবালেগ শিশু-কিশোরের ওপরও যাকাত ফরয নয়। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৪৬১-৪৬২; রদ্দুল মুহতার ২/২৫৯ রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮

★সুতরাং যেহেতু নাবালেগের উপর যাকাত ফরজ নয়,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এতিমের হক নষ্ট হবে।
এর জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
,   
আরো জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (0 points)
সমাধান জানতে পেরে ভাল লাগলো। মহান আল্লাহ প্রশ্নকারী ও উত্তর দাতাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...