আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

১.কারো নাম নুরনবী থাকলে তাকে নুরনবী বলে সম্বোধন করা কি জায়েয?

২.কেউ কোনো গান গাওয়ার পর এর জন্য তার বন্ধুরা তাকে খাবার দিল।তার গান শরীয়ত সম্মত কি না জানিনা আর গানের সময় মিউজিক বাজানো হয়েছিল কি না জানি না (তবে আমার প্রবল ধারণা মিউজিক ছিল না)।সে খাবার যদি সে আমাকে দেয় তবে তা খাওয়া কি জায়েয?

৩.পানিতে গন্ধ পাওয়া গেছে কিন্তু তা নাপাকির গন্ধ না।এটা দিয়ে ওযু করা যাবে?

৪.দৈনন্দিন জিবনে, পড়াশোনার সময় "জল' শব্দটি উচ্চারণ করতে হয়।যেমন:জলবায়ু, জলপ্রপাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে।এখন জল তো হিন্দুরা বলে থাকে।এই শব্দ ব্যবহার কি জায়েয?

৫.মেসওয়াক করার সময় সময় রক্ত বের হল কিন্তু রক্ত গড়িয়ে পড়ল না।এক্ষেত্রে ওযু কি ভেঙ্গে যাবে? ও রক্তটি কি নাপাক?

৬.মেসওয়াক করার সময় সময় রক্ত বের হল কিন্তু রক্ত একটু গড়িয়ে থেমে পড়ল।এক্ষেত্রে ওযু কি ভেঙ্গে যাবে? ও রক্তটি কি নাপাক?

৭.ফ্রি-ল্যান্সিং এ টিশার্ট ও লোগো ডিজাইন এর কাজ করা কি জায়েজ?

৮. ফ্রিল্যান্সিং এ টিশার্ট ও লোগো ডিজাইন এর ক্ষেত্রে আমি যদি chatgpt এর সাহায্যে যদি ডিজাইন তৈরি করে তা ক্লায়েন্টকে দেই। তবে কি তা জায়েয হবে?

https://youtu.be/Jml3b1eyGE8?feature=shared

(আপনার সুবিধার্থে আমি টিশার্ট ও লোগো ডিজাইন বিক্রি করার নিয়মটি দিয়েছি।)

৯.ভুল করে কারো জুতায় পা লাগলে কি গুনাহ হবে এবং ব্যাক্তির হক কি নষ্ট হবে?

১০. গণিত বিষয়ে একটা লেখা ছিল।যে

"গণিত কোনো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী (যেমন পুরোহিত) আবিষ্কার করেনি; এটি বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার যৌথ প্রয়োজনে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে, যদিও পুরোহিতরা এর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।"

এছাড়াও আরো লেখা ছিল যে,

"পুরোহিতদের অবদান গণিতের প্রাথমিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, বিশেষ করে প্রাচীন সভ্যতায়। তাদের অবদানগুলো ছিল:

1. জ্যোতিষ ও ক্যালেন্ডার গণনা: তারা দিন-তারিখ, উৎসব নির্ধারণ ও গ্রহ-নক্ষত্রের চলন বোঝার জন্য গণিত ব্যবহার করতেন।

2. মন্দির নির্মাণে জ্যামিতি: মন্দির বা ধর্মীয় স্থাপনা তৈরি করতে মাপজোক ও জ্যামিতির ব্যবহার করতেন।

3. আচার-অনুষ্ঠান নির্ধারণ: নির্দিষ্ট সময়ে আচার-অনুষ্ঠান করতে তারা সময় গণনা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান জানতেন, যা গণিতের ওপর নির্ভরশীল।

4. শিক্ষা ও প্রচার: পুরোহিতরা অনেক সময় জ্ঞান রক্ষক ও শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন, ফলে গণিতের ধারণা ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করতেন।

সংক্ষেপে: প্রাচীন কালে গণিতের ব্যবহার ও বিকাশে পুরোহিতদের অবদান ছিল বাস্তব প্রয়োগ ও শিক্ষার মাধ্যমে।"

এখন এগুলো সত্যি হয়ে থাকলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে অঙ্ক করা ও অঙ্ক শেখানো কি জায়েয?(যেহেতু গণিত আবিস্কারে পুরোহিত দের অবদান রয়েছে। পুরোহিতরা তো তার ধর্ম মোতাবেক গণিত প্রচলন করার কথা)

1 Answer

0 votes
by (632,940 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নূর নবী অর্থ নবীর নূর এবং নূর মুহাম্মাদ অর্থ মুহাম্মাদের নূর। যদি এর মাধ্যমে উদ্দেশ্য নেয়া হয় যে, নবী-মুহাম্মাদ ﷺ নূরের তৈরি; তাহলে এ নাম রাখা জায়েয হবে না। কেননা, কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ কথা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, সকল আদমসন্তানের মতই তিনিও একজন মাটির তৈরি মানুষ ছিলেন, পিতা-মাতার থেকেই তাঁর জন্ম। তবে নবুওত, রিসালাত ও ওহী তাঁকে অন্যান্য আদমসন্তান থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,

قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ٠

হে রাসূল! (আপনার উম্মাতকে) আপনি বলে দিন যে, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি ওয়হী নাযিল হয় যে, নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ বা উপাস্য একজনই। (সূরা কাহাফ ১১০)

পক্ষান্তরে নূর শব্দের আরেকটি অর্থ হল, হেদায়েত। সুতরাং নূর নবী এবং নূর মুহাম্মাদ অর্থ তাঁর প্রদর্শিত হেদায়েত। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاتَّبَعُوا النُّورَ الَّذِي أُنزِلَ مَعَهُ

এবং ওই নূরের অনুসরণ করেছে যা তাঁর সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে। (সূরা আ’রাফ ১৫৭)

সুতরাং এই বিবেচনায় নূর নবী এবং নূর মুহাম্মাদ নাম রাখার অবকাশ আছে। তবে যেহেতু এ জাতীয় নামে ভুল ও সঠিক–উভয় ব্যখ্যার সুযোগ থাকে তাই এই জাতীয় নাম না রাখাই উত্তম। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيبُكَ.

সে জিনিস বর্জন কর যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে এবং তা অবলম্বন কর যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না। (আহমদ, তিরমিযী, নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত ২৭৭৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এই নাম রাখা অনুচিত। এ নামে কাউকে সম্বোধন করাও অনুচিত।

কারন এক্ষেত্রে আকীদাগত বিভ্রান্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

অনেকে বিশ্বাস করে থাকেন যে নবী ﷺ আলো থেকে সৃষ্টি, যা কুরআন ও সহীহ হাদীসে নেই।

এই ধরনের নাম ভ্রান্ত আকীদার লোকজনের ধারণা প্রচারে ভূমিকা রাখতে পারে।


এতে নবীকে নূর (আলো) বলা আকীদার বিচ্যুতি হতে পারে:

রাসূল ﷺ ছিলেন মানবজাতির মধ্য থেকে একজন।

নাম যেন আকীদা বা শিরকীয় চিন্তাধারা প্রচার না করে,সেদিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

(০২)
এ খাবার বিনিময় হিসেবে দিলে তা গ্রহণ করা এবং আপনার তা খাওয়া জায়েজ হবে না।

হ্যাঁ যদি তাদের মাঝে আগে থেকেই হাদিয়া আদান-প্রদানের প্রচলন থাকে, এমনিতেই একে অপরকে খাওয়ায়,বিনিময় হিসেবে না দেয়,বিষয়টি এমন হয় যে গান না শুনালেও খাবার দিতো,তাহলে সেক্ষেত্রে উক্ত খাবার গ্রহণ জায়েজ হবে।

(০৩)
এমতাবস্থায় সেই পানির রং ও পানির স্বাদ ঠিক থাকলে সে পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
এতে সমস্যা নেই।

(৫-৬)
এক্ষেত্রে থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হলে অযু ভেঙ্গে যাবে।
অন্যথায় অযু ভেঙ্গে যাবেনা। 

এ রক্ত নাপাক।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنِ الْحَسَنِ فِي رَجُلٍ بَزَقَ فَرَأَى فِي بُزَاقِهِ دَمًا، أَنَّهُ لَمْ يَرَ ذَلِكَ شَيْئًا حَتَّى يَكُونَ دَمًا غَلِيظًا، يَعْنِي فِي الْبُزَاقِ

হাসান বসরী রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার উপর অযু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩৩০)

عَنْ إِبْرَاهِيمَ فِي الرَّجُلِ يَبْزُقُ فَيَكُونُ فِي بُزَاقِهِ الدَّمُ، قَالَ: إِذَا غَلَبَتِ الْحُمْرَةُ الْبَيَاضَ تَوَضَّأَ، وَإِذَا غَلَبَ الْبَيَاضُ الْحُمْرَةَ لَمْ يَتَوَضَّأْ

ইবরাহীম নাখয়ী রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে, তাহলে সাদার উপর লাল রঙ বেশি থাকে, তাহলে অযু করবে, আর যদি লালের উপর সাদার আধিপত্য থাকে, তাহলে অযু লাগবে না। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩৩২)

(০৭)
শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে কাজ করা হলে তাহা জায়েজ হবে।

(০৮)
এটা ধোকার আশ্রয়  
তবে এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি থাকলে ক্লাইন্টকে বিষয়টি জানিয়ে তাহা ক্লাইন্টকে দেয়া যাবে।

তবে শরীয়াহ নীতিমালা বিরোধী কোনো কিছুর ডিজাইন হওয়া যাবেনা।

(০৯)
না,এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা এবং ব্যাক্তির হক নষ্ট হবেনা।

(১০)
এগুলো সত্যি হয়ে থাকলেও পড়াশোনার ক্ষেত্রে অঙ্ক করা ও অঙ্ক শেখানো জায়েয হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...