আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
352 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
1.জনাব, শবে মেরাজ কি বিশেষ ইবাদতের দিন। মানে অন্যান্য সাধারণ দিনের ইবাদত  এর তুলনায় সেদিন  ইবাদত করলে কি  শবে কদরের মতো বিশেষ কোন ফজিলত আছে ।

2. তাহলে সেদিন কি কি করা যেতে পারে। মানে কি কি আমল করা যেতে পারে। অর্থাৎ যা রাসূল সাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবীরা করতেন।

3.তেমনি ভাবে  শবে বরাত ও সবে কদর  এ কি কি আমল করা যেতে পারে।

 অনুগ্রহ করে একটু বলবেন প্লিজ।
by (22 points)
1. আমাদের এই দিকে প্রচলিত যে, শবে মেরাজের রাত্রে সারারাত জেগে ইবাদত করতে হয়  এতে বিশেষ  নেকি  আছে। তেমনি শবে বরাতও। রাত জাগার বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওআসসালাম এর কোন নির্দেশনা ছিল কি???
 অনুগ্রহ করে বলবেন প্লিজ

1 Answer

0 votes
by (697,760 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
রজব মাসে রোজা রাখা বা রজব মাসের কিছু অংশে রোজা রাখার ব্যাপারে কোন সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়নি। কিছু কিছু মানুষ রজব মাসের বিশেষ ফজিলত রয়েছে মনে করে এ মাসের বিশেষ কিছু দিনে যে রোজা রাখে এ ধরণের বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই।

তবে হারাম মাসসমূহে (রজব একটি হারাম মাস) রোজা রাখা মুস্তাহাব মর্মে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণিত আছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখ; এবং রোজা ভঙ্গও কর”[আবু দাউদ, হাদিস নং- ২৪২৮, আলবানী হাদিসটিকে যয়ীফ বা দুর্বল বলেছেন]

এ হাদিসটি যদি সাব্যস্ত হয় তাহলে হারাম মাসে রোজা রাখা মুস্তাহাব প্রমাণ হবে। অতএব, যে ব্যক্তি এ হাদিসের ভিত্তিতে রজব মাসে রোজা রাখে এবং অন্য হারাম মাসেও রোজা রাখে এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে রজব মাসকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে রোজা রাখা যাবে না।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) মাজমুউল ফাতাওয়া (২৫/২৯০) গ্রন্থে বলেন:
পক্ষান্তরে রজব মাসে রোজা রাখা সংক্রান্ত সবগুলো হাদিস দুর্বল; বরঞ্চ মাওযু (বানোয়াট)। আলেমগণ এর কোনটির উপর নির্ভর করেন না। ফজিলতের ক্ষেত্রে যে মানের দুর্বল হাদিস বর্ণনা করা যায় এটি সে মানের নয়। বরং এ সংক্রান্ত সবগুলো হাদিস মাওজু (বানোয়াট) ও মিথ্যা।

মুসনাদে আহমাদ ও অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি হারাম মাসসমূহে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হারাম মাসগুলো হচ্ছে- রজব, যুলক্বদ, যুলহজ্জ, মুহাররম। এটি চারটি মাসের ব্যাপারেই এসেছে। বিশেষভাবে রজব মাসের ব্যাপারে নয়। সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত

ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:
“রজব মাসে রোজা রাখা ও নফল নামায পড়ার ব্যাপারে যে কয়টি হাদিস বর্ণিত হয়েছে সব ক’টি মিথ্যা”[আল মানার আল-মুনিফ, পৃষ্ঠা- ৯৬]

ইবনে হাজার (রহঃ) ‘তাবয়িনুল আজাব’ (পৃষ্ঠা- ১১) বলেন:
রজব মাসের ফজিলত, এ মাসে রোজা রাখা বা এ মাসের বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা রাখার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন কিছু বর্ণিত হয়নি। অথবা এ মাসের বিশেষ কোন রাত্রিতে নামায পড়ার ব্যাপারে সহিহ কোন হাদিস নেই। সমাপ্ত

শাইখ সাইয়্যেদ সাবেক (রহঃ) “ফিকহুস সুন্নাহ’ গ্রন্থে (১/৩৮৩) বলেন:
অন্য মাসগুলোর উপর রজব মাসের বিশেষ কোন ফজিলত নেই। তবে এটি হারাম মাসসমূহের একটি। এ মাসে রোজা রাখার বিশেষ কোন ফজিলত কোন সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়নি। এ বিশেষ যে ক’টি বর্ণনা রয়েছে এর কোনটি দলিল হিসেবে গ্রহণ করার উপযুক্ত নয়। সমাপ্ত

শাইখ উছাইমীনকে ২৭ শে রজব সিয়াম ও কিয়াম পালনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন: “সবিশেষ মর্যাদা দিয়ে ২৭ শে রজব সিয়াম ও কিয়াম পালন- বিদআত। আর প্রত্যেকটি বিদআতই ভ্রান্তি।” সমাপ্ত [মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ উছাইমীন, (২০/৪৪০)]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসুল (সা.)-এর জন্য সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত্রি ছিল এই শবে মেরাজ। কিন্তু এ রাতে উম্মতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো আমল সাব্যস্ত হয়নি। যদি সুনির্দিষ্ট কোনো আমল সাব্যস্ত হতো, তাহলে অবশ্যই রাসুল (সা.)-এর সহিহ হাদিসের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হতো। কিন্তু আল্লাহর বান্দারা মনে করে থাকেন যে, রজব মাসের ২৭ তারিখ রাত্রিতে তারা ব্যক্তিগত ইবাদত করবেন, তাহলে এতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। যেহেতু আমরা ভালো কাজগুলো যেকোনো সময় করতে পারি। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/11911

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
অন্যান্য সাধারণ দিনের ইবাদত এর তুলনায় মেরাজের দিন বেশী  ইবাদত করলে  শবে কদরের মতো বিশেষ কোন ফজিলত আছে নাই। জরুরী মনে না করলে করা যেতে পারে।

(২)
জরুরী মনে না করে সেদিন, নফল নামায ,কুরআন তেলাওয়াত, উমুরী কাযার নামায ইত্যাদি পড়া যেতে পারে।

(৩)
 নফল নামায ,কুরআন তেলাওয়াত, উমুরী কাযার নামায ,তাসবীহ তাহলীল সবকিছূই করা যেতে পারে।
শা'বানের মধ্যরাত্র( শবে বরাত)এর ফযিলত সম্ভলিত হাদীস বর্ণিত রয়েছে। যেমন আমরা উপরে দেখতে পারলাম। তবে শা'বানের মধ্যরাত্র কে উপলক্ষ্য করে কিছু বিদ'আতের উপদ্রব ও হয়েছে। যেমন সম্মিলিতভাবে বিশেষ কোনো নামায কে জামাতের সাথে আদায় করা,আতশবাতি প্রজ্বলন করা। কিংবা শিরণি-পোলাও ইত্যাদিকে জরুরী মনে করা।এসব বিদ'আত। এগুলোকে অবশ্যই বিসর্জন দিতে হবে।পরিহার করতে হবে। হ্যা সারা রাত্র বা রাতের অধিকাংশ অংশজুড়ে নিজেকে ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত রাখা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। এবং ইহা মুস্তাহাবও বটে। শবে বরাতের আলাদা বিশেষ কোনো নামায বা তাসবীহ নেই।তবে এ রাতে রাসূলুল্লাহ সাঃ কবর যিয়ারত করেছেন, তাই বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পৃথক পৃথকভাবে কবর যিয়ারত করা যেতে পারে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1163


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...