আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
১।একজন দাওরা পাস আলেম বলছিলেন যে অতিতের বান্দার হক মাফ চাইতে হবে না আল্লাহ পাক এর কাছে খাস দিলে তওবা করলে হবে এ নিয়ে এত পেরেশান হওয়ার কিছু নাই একথা সঠিক কিনা?

★ আর অমুসলিমদের ক্ষেত্রে কি একই উনি শুধু বলছেন বান্দার হক এর কথা?

★ আর তওবা কি এইভাবে করবো যে আল্লাহ পাক এর কাছে  মাফ চাইবো আর নিয়ত করবো যে কোনো দিন এ গুনাহ করবো না?
২।এক সা পরিমান পানি দিয়ে গোসল করা কি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না আদায় করলে কি গুনাহ হবে?
৩।সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আমল নামাজ ছাড়া আর কি কি রয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ؟» . قَالُوا: الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ. فَقَالَ: «إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَأْتِي يَوْم الْقِيَامَة بِصَلَاة وَصِيَام وَزَكَاة وَيَأْتِي وَقَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا. وَأَكَلَ مَالَ هَذَا. وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يَقْضِيَ مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرح فِي النَّار» . رَوَاهُ مُسلم

আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জানো, (প্রকৃত) গরীব কে? সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ আমরা তো মনে করি, আমাদের মধ্যে যার টাকা-পয়সা, ধনদৌলত নেই, সে-ই গরীব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি গরীব হবে, যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে সালাত, সিয়াম ও যাকাত আদায় করে আসবে; কিন্তু সাথে সাথে সেসব লোকেদেরকেও নিয়ে আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কারো অপবাদ রটিয়েছে, কারো সম্পদ খেয়েছে, কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে; এমন ব্যক্তিদেরকে তার নেকীগুলো দিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর যখন তার পুণ্য শেষ হয়ে যাবে অথচ পাওনাদারদের পাওনা তখনো বাকি, তখন পাওনাদারদের গুনাহ তথা পাপ তার ওপর ঢেলে দেয়া হবে, আর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

(মুসলিম ৫৯-(২৫৮১), তিরমিযী ২৪১৮, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৮৪৫, সহীহুল জামি‘ ৮৭, সহীহ আত্ তারগীব ২২২৩, শু‘আবুল ঈমান ৩৩, আহমাদ ৮০২৯, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৬৪১৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৪১১, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ৫৬১, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ২৭৭৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৮৩৮।)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মাওলানা সাহেবের কথা সহীহ নয়। শরীয়তের বিধান মতে বান্দার হক,এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। 

যতক্ষন পর্যন্ত হক আদায় না করা হবে অথবা ঐ বান্দা তাকে মাফ না করবে,কোনো ভাবেই বা আমলেই তাহা মাফ হবেনা।

*অমুসলিমের কোন হক নষ্ট করলেও সে হক আদায় করতে হবে।

*বান্দার হক নষ্ট করলে শুধুমাত্র তওবা দ্বারা ক্ষমা পাওয়া যাবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 
(০২)
এটি সুন্নাতে যায়েদাহ।
এমনটি না করলে গুনাহ হবেনা।

(০৩)
আযান,ইকামত, জামাতের সহিত নামাজ আদায়,সালামের প্রচলন।
সালাম দেওয়া ও জবাব দেওয়া সুন্নতে মু’আক্কাদা।
খাওয়ার আগে ও পরে দোয়া করা।
খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলা এবং খাওয়ার পরে الحمد لله বলা।

ডান হাতে খাওয়া, নিজের সামনে থেকে খাওয়া।

খাওয়ার পরে দোয়া পড়া।
ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে ওঠার দোয়া ও আমল

ঘুমানোর আগে ওজু করে ডান কাতে শোয়া — এটি সুন্নতে মু’আক্কাদা।

ঘুম থেকে উঠে বলা

 الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور

নবজাতকের কানে আজান দেওয়া।

বিবাহ করা।

বিবাহ করা নিজেই রাসূল ﷺ-এর সুন্নত এবং সুন্নতে মু’আক্কাদা।

রাসূল ﷺ বলেছেন:
"النِّكاحُ مِن سُنَّتي" — “বিবাহ আমার সুন্নত।”

কুরবানি (ঈদুল আযহায়) কিছু ইমামমন গন এটিকে সুন্মাতে মুয়াক্কাদা বলেছেন।

কুরবানী করা সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য সুন্নতে মু’আক্কাদা।

জুমার দিনের গোসল, আতর ব্যবহার, পরিষ্কার জামা পরিধান

জুমার দিন গোসল করা, আতর ব্যবহার, মিসওয়াক করা, সুন্দর পোশাক পরা।

মিসওয়াক ব্যবহার
দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য মিসওয়াক ব্যবহার করা প্রিয় সুন্নত ও মু’আক্কাদা।

দোয়ার পরে হাত তুলে দোয়া করা (বিশেষ সময়ে)

যেমন কুনুতে নাযেলাহ, ইস্তিখারায়, বিপদে, বৃষ্টির জন্য — হাত তুলে দোয়া করা সুন্নতে মু’আক্কাদা।

মৃতের জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ

জানাজা নামাজ পড়া, দাফন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া, দোয়া করা — এগুলো অনেকের মতে ফরজে কিফায়াহ, অনেকের মতে সুন্নতে মু’আক্কাদা।

ঈদের নামাজ আদায় (কেহ কেহ ওয়াজিবও বলেছেন) ও কুরবানির নিয়ম মেনে পালন

ওয়ালিমা (বিবাহ পরবর্তী ভোজ)

ছোট-বড় সকললে সালাম, হাঁচির জবাব, মুসাফাহা ইত্যাদি, ইসলামি সামাজিক আচরণ ইত্যাদি ।

★উল্লেখ্য, উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলির মধ্যে অনেক গুলি মতবিরোধ পূর্ণ বিষয়, কাহারো কাহারো মতে সুন্মাতে মুয়াক্কাদা, কারো কারো মতে সুন্মাতে গায়রে মুয়াক্কাদা ,কারো কারো মতে তাহা ওয়াজিব,কেউ কেউ অন্য মতও পোষন করে থাকেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...