আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম
শায়েখ, আমি ৫ লক্ষ টাকা সুদি ঋণ নেই যা হালাল ভাবে উপার্জিত মাসিক বেতন থেকে কিস্তি হিসাবে পরিশোধ করছি,সেই সুদি ঋনের ৫ লক্ষ টাকার মাঝে ১ লক্ষ টাকা হাতে আছে। আমার  কুরবানি দেওয়ার সামর্থ্য আছে কিন্তু আমার  স্ত্রীর ৩ মাস পর ডেলিভারি ডেট তখন ৬০/৭০ হাজার টাকা লাগতে পারে, এখন যদি কুরবানী দেই তাহলে ৬০/৭০ হাজার টাকার যোগান দিতে সেই সুদি ঋনের ১ লক্ষ টাকা থেকে নিতে হবে। এমতাবস্থায়, যদি কুরবানী না দিয়ে ডেলিভারি টাইমের সম্ভাব্য খরচের জন্য বর্তমান মাসের উপার্জিত টাকা সঞ্চয় করে রাখর সিদ্ধান্ত টা শরীয়ত সম্মত কিনা দয়াকরে একট বুঝিয়ে বলবেন।

জাযাকুমুল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

ঋনগ্রস্ত ব্যক্তির যদি ঋনের টাকা ব্যতিত নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকেতাহলে তার উপরে কুরবানী আদায় করা ওয়াজিব হবেনা।

তবে ব্যবসায়ী ঋণ হলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।


ঋণ দুই ধরনের হয়ে থাকে।
 ক. প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে যে ঋণ নেওয়া হয়। 
খ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেওয়া হয়।
,
প্রথম প্রকারের ঋণ সম্পদ থেকে বাদ দিয়ে যাকাতের নিসাব বাকি থাকে কিনা তার হিসাব করতে হবে। নিসাব থাকলে যাকাত ফরয হবে, অন্যথায় নয়। 
,
কিন্তু যে সকল ঋণ উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয় যেমন কারখানা বানানো, কিংবা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং বানানো অথবা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিলে যাকাতের হিসাবের সময় সে ঋণ ধর্তব্য হবে না। অর্থাৎ এ ধরনের ঋণের কারণে যাকাত কম দেওয়া যাবে না। 
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৮৭)


বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/14383/


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
আপনি যে ৫ লক্ষ টাকা সুদি ঋণ নিয়েছেন,এটা ঋণের কোন প্রকারের?

সেই ঋণ যদি প্রথম প্রকারের হয়,তাহলে সেই ৫ লক্ষ টাকা বাদ দিয়ে যদি আপনার নিকট যদি নেসাব পরিমাণ মাল আছে,তাহলে ঋন ব্যাতিত সম্পদের উপরেই আপনার কুরবানী  ওয়াজিব হবে।

হ্যাঁ যদি সেই ৫ লক্ষ টাকা বাদ দিয়ে আপনার মালিকানায় যদি নেসাব পরিমাণ মাল না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

আর যদি দ্বিতীয় প্রকারের ঋণ হয়,তাহলে বিধান হলোঃ
আপনি যে ৫ লক্ষ টাকা সুদি ঋণ  নিয়েছেন, এর বছরান্তের আদায়যোগ্য কিস্তি ছাড়া যদি আপনার কাছে সাড়ে বায়ান্ন তোলার রূপার সমমূল্য টাকা বাকি থাকে, তাহলে আপনার উপর কুরবানী আদায় করা আবশ্যক।

অন্যথায় আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সর্বাবস্থায় টাকা সঞ্চয় করে রাখা এবং এর থেকে লাভ নেওয়া কোনক্রমেই জায়েজ হবে না, এটা স্পষ্ট সুদের অন্তর্ভুক্ত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...