আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। হুজুর, আমি বিয়ে করেছি অল্প দিন হলো। সমস্যা হলো স্ত্রীর সাথে ইন্টারকোর্সের সময় যদি শুধু স্ত্রীকেই চিন্তা করি, তাহলে আমার পেনিস সহজে শক্ত হতে চায় না। অনেক চেষ্টার পর শক্ত হলেও বেশিক্ষণ শক্ত থাকে না, দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যায়। অন্যদিকে যদি স্ত্রীর জায়গায় বিভিন্ন নারী চরিত্র কল্পনা করি (নির্দিষ্ট কোনো নারী নয়), তাহলে খুব দ্রুত লিঙ্গ শক্ত হয় ও দীর্ঘ সময় শক্ত থাকে। আমার প্রশ্ন হলো, ইন্টারকোর্সের সময় এভাবে নিজের স্ত্রী ব্যতিরেকে অন্য নারী চরিত্র কল্পনা করলে কি গুনাহ হবে? এক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (70,950 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

স্ত্রী সহবাসের সময় অন্য নারীর প্রতিচ্ছবি কল্পনা করা, অনুরূপভাবে নিজ স্বামীর সাথে সহবাসের সময় অন্য পুরুষের কল্পনা করার বিষয়টিকে প্রত্যেক সুস্থ বিবেকমান মুমিনই মন্দ ও নিন্দার চোখেই দেখে থাকে। আর হাদিসে আছে,

ما رأى المسلمونَ حسنًا فهوَ عندَ اللهِ حَسَنٌ وما رَأَوا سيِّئًا فهو عندَ اللهِ سيئٌ

মুসলিমরা (ঈমানি বিবেক নিয়ে) যে জিনিস ভালো চোখে দেখে তা আল্লাহর কাছে ভালো। আর মুসলিমরা যে জিনিস মন্দ চোখে দেখে সেটা আল্লাহর কাছে মন্দ। ( মুসনাদে আহমাদ ৫/২১১)

অপর হাদিসে এসেছে,

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ الْمَرْأَةَ تُقْبِلُ فِي صُوْرَةِ شَيْطَانٍ وَتُدْبِرُ فِي صُوْرَةِ شَيْطَانٍ إِذَا أَحَدُكُمْ أَعْجَبَتْهُ الْمَرْأَةُ فَوَقَعَتْ فِي قَلْبِهِ فَلْيَعْمِدْ إِلَى إِمْرَأَتِهِ فَلْيُوَاقِعْهَا فَإِنَّ ذَلِكَ يَرُدُّ ماَ فِي نَفْسِهِ.

জাবির রাযি. বলেন, রাসূল বলেছেন, নিশ্চয়ই মহিলারা শয়তানের আকৃতিতে আসে আর শয়তানের আকৃতিতে যায়। যদি কোন নারীকে তোমাদের কাউকে ভাল লাগে এবং সে অন্তরে গেঁথে যায়, তাহলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট চলে যায় এবং তার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়। নিশ্চয়ই এ মিলন অন্তরের মন্দ পরিকল্পনা দূর করে দিবে। (মুসলিম ৩৪৭৩)।

এই হাদিস থেকেও বোঝা যায়, কোনো নারীকে দেখার পর অন্তরে যা জন্ম নেয় সেটা মনের মধ্যে ধরে রাখা নাজায়েয। কেননা হাদিসটিতে রাসুলুল্লাহ নারীকে দেখার পর অন্তরে যা জন্ম নেয় তা দূর করার পন্থা শিখিয়ে দিয়েছেন। আর নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাসের সময় অন্য নারীর প্রতিচ্ছবি কল্পনা করা মানে এই উক্ত নাজায়েয কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হওয়া।

যার কারণে ইবনু আবিদীন শামি রহ. বলেন,

ولم أر من تعرض للمسالة عندنا (يعني الحنفية)

আমাদের (হানাফি মাজহাবের) কেউ মাসআলাটিতে আপত্তি করেছেন বলে আমি দেখি নি। (হাশিয়াতু ইবনু আবিদীন ৬/৩৭২)

ইবনুল হাজ আল মালিকি রহ. বলেন,

ويتعين عليه أن يتحفظ على نفسه بالفعل ، وفي غيره بالقول من هذه الخصلة القبيحة التي عمت بها البلوى في الغالب ، وهي أن الرجل إذا رأى امرأة أعجبته ، وأتى أهله جعل بين عينيه تلك المرأة التي رآها ، وهذا نوع من الزنا

বাস্তবে নিজেকে এবং কথার মাধ্যমে অন্যকে এই মন্দ অভ্যাস যা ব্যাপকভাবে সমাজে প্রচলিত তা থেকে বিরত রাখা আবশ্যক। আর তা হলো একজন ব্যক্তি যখন কোনো নারীকে দেখার পর সেই নারী তাকে আকর্ষণ করে তখন সে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করার সময় সেই নারীকে তার চোখের সামনে দৃশ্যমান রাখে যাকে সে দেখেছিলো। এটা এক প্রকার ব্যভিচার। ( আল মাদখাল ২/ ১৯৫ )

ইবনু মুফলিহ আল হাম্বালি রহ. বলেন,

  لو استحضر عند جماع زوجته صورة أجنبية محرمة أنه يأثم

যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে সহবাসের সময় অন্য নারীর অবয়বকে কল্পনা করে তাহলে সে গুনাহগার হবে। (আল আদাব ৯৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

জ্বী নিজের স্ত্রীর সাথে সহবাসকালে অন্য মহিলার চিন্তা করা গোনাহের কাজ। তাই এহেন চিন্তা দূর করা এবং তওবা করা আবশ্যক। তবে আপনার শারীরিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...