আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
43 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আমাকে ইউনিভার্সিটি অপশন দেওয়া হলেও, সেটিতে ভর্তির করাবে না,, প্রাইভেট নার্সিং কলেজে পরাবে,, ড্রেস কোড কালো পায়জামার সাথে জলপাই রং এর  কামিজের সাথে সামনে ওড়না আছে (গার্লস স্কুল মেয়েদের ড্রেস যেমন হয়) , বেল্ট ও আছে,,হিজাব পড়া যায়,, আর মাথায় ক্যাপ পড়তে হয়,, নার্সিং মেয়েদের নিকাব পড়তে দেই না,,সে ক্ষেত্রে মাস্ক পড়লে এন্ড অনেক বড় হাতা করে নিয়ে অনেক ঢিলা করে কামিজ বানিয়ে পড়লে,,এসব ড্রেস কোড ফলো করলে কি আমার পর্দার হবে??
আমি নার্সিং পড়ার জন্য মানা করসিলাম,,কিন্ত বাবা মা এতে অনেক রাগ করেন,, টাকা ও দিবেন না কোনো ইসলামিক পড়া শুনা আর জন্য,,কোনো রকমে দ্বীন নেই এমন পরিবার এ বিয়ের চাপ দিচ্ছে,,, আমার এ পরিস্থিতিতে নার্সিং পড়া জায়েজ হবে??

যদি জায়েজ না হয় সে ক্ষেত্রে আমার কী করা উচিত?? আমি তো সব কিছুর জন্য তাদের উপর নির্ভরশীল।

1 Answer

0 votes
by (75,360 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/96926/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়।

,

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

,

রাসূলুল্লাহ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

,

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّতাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

পর্দা রক্ষা করা ফরজ।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

,

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

,

অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের  জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন। তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা জায়েজ আছে। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)

,

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটি)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে,

قد تجد الطبيبة حرجا وصعوبات في تغطية وجهها عن غير المحارم أثناء عملها، فهل هذا يعتبر من الضرورة لكشفه؟

মহিলা ডাক্তার তার কর্মস্থলে ডিউটি করার সময় পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখতে সমস্যা ও কষ্ট হয়। সুতরাং চেহারা খোলা রাখার জন্য এটাকে জরুরত হিসেবে গণ্য করা যাবে কিনা?

,

তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,

يحرم على المرأة كشف وجهها لغير محارمها، وليس هناك ضرورة لكشف الوجه في العمل

নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখা হারাম। আর ডিউটি করার সময় প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চেহারা খুলে রাখার জরুরত বিদ্যমান নেই। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৭/২৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ 

https://ifatwa.info/7003/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

নারীদের নার্স হওয়া জায়েজ আছে। তবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে।

ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। শুধুমাত্র নারীদের সেবা করতে হবে। 

সহকর্মীদের সাথে পর্দা মেইনটেইন করে কথা বলবে,অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে হেফাজতে থাকবে।

,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত ড্রেস কোড মেনে ড্রেস পড়ে গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে যাওয়া স্পষ্ট নাজায়েজ।

এটা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।

সুতরাং আপনি অন্য বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করবেন।

যদি পরিবার থেকে বিষয়টি মেনে না নেয়,আপনাকে নার্সিং এ পড়াশোনা করতে বাধ্য করে,সেক্ষেত্রে ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করবেন।

হাত মোজা পা মোজা পরিধান করবেন।

চেহারা ঢেকে থাকবেন।

যদি চেহারা/হাত/পা ঢাকতে নিষেধাজ্ঞা থাকে, সেক্ষেত্রে  পূর্ণ পর্দা রক্ষা না করার দরুন আপনার জন্য বেপর্দার গুনাহ হবে।

,

এভাবে হাত মোজা পা মোজা পরিধান না করে, পূর্ণ ভাবে চেহারা না ঢেকে কোনো পুরুষ এর সামনে যাওয়া শরীয়তে কোনো ভাবেই জায়েজ নেই। হারাম।

হ্যাঁ যদি সেখানে শুধুমাত্র নারীরা থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...