জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সুরা বাকারার ১৯৭ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اَلۡحَجُّ اَشۡهُرٌ مَّعۡلُوۡمٰتٌ ۚ فَمَنۡ فَرَضَ فِیۡهِنَّ الۡحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَ لَا فُسُوۡقَ ۙ وَ لَا جِدَالَ فِی الۡحَجِّ ؕ وَ مَا تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ یَّعۡلَمۡهُ اللّٰهُ ؕؔ وَ تَزَوَّدُوۡا فَاِنَّ خَیۡرَ الزَّادِ التَّقۡوٰی ۫ وَ اتَّقُوۡنِ یٰۤاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿۱۹۷﴾
হজের সময় নির্দিষ্ট মাসসমূহ। অতএব এই মাসসমূহে যে নিজের উপর হজ আরোপ করে নিল, তার জন্য হজে অশ্লীল ও পাপ কাজ এবং ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়। আর তোমরা ভাল কাজের যা কর, আল্লাহ তা জানেন এবং পাথেয় গ্রহণ কর। নিশ্চয় উত্তম পাথেয় তাকওয়া। আর হে বিবেক সম্পন্নগণ, তোমরা আমাকে ভয় কর।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ গুলি হলোঃ-
» সেলাইযুক্ত কাপড় বা জুতা ব্যবহার করা।
» মাথা ও মুখ ঢাকা।
» চুল কাটা বা ছিঁড়ে ফেলা।
» নখ কাটা।
» ঘ্রাণযুক্ত তেল বা আতর লাগানো।
» স্ত্রী সহবাস করা, যৌন উত্তেজনামূলক কোনো আচরণ করা।
» শিকার বা ঝগড়া-বিবাদ ও যুদ্ধ করা।
» চুল-দাড়িতে চিরুনি বা আঙুল চালনা করা, যাতে ছেঁড়ার আশঙ্কা থাকে।
» শরীরে সাবান লাগানো।
» উকুন, ছারপোকা, মশা, মাছিসহ কোনো জীবজন্তু হত্যা করা।
» যেকোনো ধরনের গুনাহের কাজ করা।
ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ কাজ গুলি হলোঃ-
*সুগন্ধি ব্যবহার করা।
*নখ কাটা, শরীরের কোনো স্থানের চুল, পশম কাটা-উপড়ানো নিষেধ
আতা, তাউস ও মুজাহিদ রাহ. প্রমুখ বিখ্যাত তাবেয়িগণ বলেন, ‘মুহরিম তার বগলের নিচের পশম উপড়ালে বা নখ কাটলে তার উপর ফিদয়া দেওয়া ওয়াজিব হবে। ’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং: ১৩৬০৪)
*স্বামী-স্ত্রীর সহবাস।
*যৌন কামনার সঙ্গে চুম্বন দেওয়া, স্পর্শ করা কিংবা জড়িয়ে ধরা।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, আমি ইহরাম অবস্থায় কামভাবের সঙ্গে নিজ স্ত্রীকে চুম্বন করেছি। এখন আমার করণীয় কী? তিনি উত্তরে বললেন, তুমি একটি কোরবানি করো। (কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, পৃষ্ঠা নং: ৫৩)
*বিবাহ সংক্রান্ত আলোচনা করা যাবেনা।
*পশু শিকার করা যাবেনা।
*মাথার চুল মুণ্ডন করা বা ছোট করা কিংবা উঠিয়ে ফেলা।
*কাপড় বা শরীরের উকূন মারা নিষিদ্ধ।
*ঝগড়া-বিবাদ করা যাবেনা।
*অলঙ্কার ও সাজ-সজ্জা প্রকাশ করা যাবে না।
*মুখমণ্ডলের উপর নিকাব বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে আবৃত করবে না।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
পাপ কাজ এবং মারামারি সর্বত্র নিষিদ্ধ, কিন্তু যেহেতু হজ ও ওমরাহ অত্যন্ত মহান ও পবিত্র ইবাদত এবং হজ ও ওমরাহের যাত্রা সম্মান, সম্মান, দাসত্ব, ভালোবাসা, দয়া এবং আনুগত্যের যাত্রা, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে শরিয়াহ বিধি-বিধানের অলংকারে সজ্জিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেছেন যে, হাজী যেন পার্থিব বিষয়ে কারো সাথে কোন পাপ বা ঝগড়া না করে। অতএব, এই যাত্রাকে পাপ এবং যুদ্ধ দ্বারা দূষিত করা অত্যন্ত ভুল এবং অত্যন্ত অবাঞ্ছিত। তবে, যদি কেউ ইহরাম অবস্থায় মারামারি বা ঝগড়ায় লিপ্ত হয়, তাহলে তার জন্য কোন আর্থিক কাফফারা নেই, তবে সেই সময়ের মধ্যে কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা আবশ্যক। যদি দাসের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহলে তার জন্য ক্ষতিপূরণও আবশ্যক।
★সুতরাং প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ইহরাম ভঙ্গ হবেনা। দম বা সদকা ওয়াজিব হবেনা।
পরবর্তীতে আরো সতর্ক ভাবে চলবেন।
(০২)
এক্ষেত্রে হানাফি মাযহাব অনুসারে মহিলারা হোটেলে একাকী নামাজ পড়বে।
তদুপরি সেখানে নামাজ পড়লে হাত,পা,চেহারা ঢাকা সহ পূর্ণ পর্দা করে নামাজ আদায় করতে হবে।
ইহরামের কারনে চেহার খোলা রাখতে হলে সেক্ষেত্রে ক্যাপ ব্যবহার করে চেহারার সামনে পর্দা লটকিয়ে রাখতে হবে।
আরো জানুনঃ-
পুরুষদের সাথে একই কাতারে নামাজ পড়া জায়েজ হবেনা।
আরো জানুনঃ-
(০৩)
সেই নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।
মুসাফির হওয়ার ইশার নামাজ কসর অর্থাৎ দুই রাকাত আদায় করতে হবে।
(০৪)
সলাতে আপনি সালাম ফিরানোর পর তাকবীর সানা পড়ে নিয়ে থাকলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
এই নামাজ আগেই আদায় হয়ে গিয়েছে।
আর যদি আপনি ৫ম রাকাত নামাজ আদায় করে থাকেন, সেক্ষেত্রে নামাজ আদায় হয়নি।
পুনরায় আদায় করতে হবে।
আরো জানুনঃ-
(০৫)
হ্যাঁ, এটা ঠিক হয়েছে।
(০৬)
হাই কমোডে বসে ইস্তেঞ্জা করতে গিয়ে অনেক সময় কমোডের ভেতর জমে থাকা পানি ছিটে উপরের দিকে আসে। এ পানি অপবিত্র। সুতরাং শরীর বা কাপড়ের যে অংশে ঐ নাপাক পানি লাগবে, সেই অংশকে ধৌত করতে হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
ইস্তিন্জা সেরে আগে ঐ ময়লা পানিতে না শৌচন করে, পানিটা ফ্লাশ করে নিয়ে তারপর টিস্যু দিয়ে প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা মুছে ঐ পরিস্কার পানির উপর শোচন করলেও যেই ছিটা পানি শরীরে লাগে,সেটি নিশ্চিত ভাবে পাক নয়।
এক্ষেত্রে টিস্যু দিয়ে প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা মুছে নেয়ার পর সেই টিস্যু কমোডে ফেললে নাপাক টিস্যু মিশ্রিত পানি বা লজ্জাস্থান ধোয়া পানি তো নাপাক।
পাশাপাশি পানিটা ফ্লাশ করে নেয়া হলেও সব নাপাক পানি চলে গিয়েছে,ঐ খানে যেই পানি আছে,সবই পাক পানি।
একথা কিন্তু শতভাগ নিশ্চয়তার সহিত বলা যায়না।
★সুতরাং এক্ষেত্রে করনীয় হলো ইস্তিঞ্জা সেড়ে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পাক পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুয়ে নেয়া।
(০৭)
এতেও ইহরাম বাধা হবে।
সমস্যা নেই।