আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (8 points)
ইদানিং বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনলাইনে কুরবানি দেওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ, যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব সে কেবল টাকা দিয়ে একটি ফর্ম ফিল আপ করবে। কুরবানির সময় ওই প্রতিষ্ঠান নিজেই পশু কিনে, জবাই দিয়ে, জবাইকৃত পশু যথাযথ প্রসেস করে হোম ডেলিভারি দিয়ে যাবে। এই পুরো সার্ভিসের জন্য তারা পশুর মূল্যের বাইরে কিছু সার্ভিস চার্জ নিবেন।  আমার প্রশ্ন হলো -
১।  এভাবে কুরবানি দিলে তা আদায় হবে কি না?
২। উত্তম/অনুত্তমের বিষয় হলে যাদের পরিবারে শারীরিকভাবে সক্ষম পুরুষ নেই বা কম তাদের জন্য এভাবে কুরবানি দেওয়াটা ঠিক হবে কি না?

৩। একান্তই অনুচিত হলে কুরবানির ২/১ দিন আগে সেই প্রতিষ্ঠানে যেয়ে নিজের কুরবানির পশু দেখে আসার সুযোগ থাকলে সেটা দেখে আসলে ওয়াজিব আদায় হবে কি না?

1 Answer

0 votes
by (623,190 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

হযরত আবু হুরাইরা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

من كان له سعة ولم يضح فلا يقربن مصلانا

‘যার সামর্থ্য আছে, অথচ সে কুরবানী করলনা, সে যেনো আমাদের ঈদগাহে না আসে’-সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩১২৩

হযরত জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من ذبح قبل أن يصلي فليعد مكانها أخرى، ومن لم يذبح فليذبح.

‘যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পূর্বে কুরবানী করল, সে যেনো ঐ পশুরু স্থানে আরেকটি পশু কুরবানী করে। আর যে কুরবানী করেনি, সে যেনো কুরবানী করে নেয়’-সহীহ বুখারী, ৫৫৬২

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

رد المحتار: (326/6، ط: سعید)
وإن کان شریک الستۃ نصرانیا أو مریدا اللحم لم یجز عن واحد منہم لأن الإراقۃ لا تتجزأ۔
সারমর্মঃ-
যদি ছয়জন শরীকের মধ্য হতে একজন খ্রিস্টান হয় অথবা গোশত খাওয়ার নিয়ত করে,তাহলে কাহারোই কুরবানী জায়েজ হবেনা। 

رد المحتار: (99/5، ط: دار الفکر)
والحاصل أنه إن علم أرباب الأموال وجب رده عليهم، وإلا فإن علم عين الحرام لا يحل له ويتصدق به بنية صاحبه
সারমর্মঃ-
যদি জানা যায় যে তাই মূলই হারাম,সেক্ষেত্রে তাহা হালাল হবেনা। এক্ষেত্রে মালিকের ছওয়াবের নিয়তে তাহা সদকাহ করে দিতে হবে।

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রচলিত অনলাইন ভাগে কুরবানী ও শরীয়াহ অস্পষ্টতা/ঝুঁকি

১। অর্থের উৎস হালাল হওয়া

ভাগে কুরবানীর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কুরবানীতে সকল শরীক বা অংশীদারদের প্রদেয় অর্থ হালাল উৎস থেকে হওয়া। হারাম আয় থেকে না হওয়া। আমরা আগেই জেনেছি-কুরবানী একটি খালেস আর্থিক ইবাদত। আর প্রতিটি আর্থিক ইবাদত হালাল উৎস থেকে হওয়া একান্ত জরুরী। অন্যথায় তা কবুল হবে না। সুতরাং ভাগে যে কুরবানি দিবে, তার নিজের প্রদেয় অংশ যেমন হালাল থেকে হতে হবে, তেমনি অন্যান্য শরিকদের প্রদেয় অংশটুকুও হালাল থেকে হতে হবে। কারও প্রদত্ত অংশ হারাম থেকে হলে, অন্যদের জন্য সেই পশুতে শরীক হওয়া জায়েয নয়। যেমন, সুদী কারও সাথে কুরবানীতে অংশগ্রহণ করা। (কিফায়াতুল মুফতি, ১২/৯৬)

সুতরাং ভাগে কুরবানী দেয়ার ক্ষেত্রে বাহ্যিকভাবে জানা যায়, বুঝা যায়-তার আয় হালাল, কেবল এমন লোকের সাথেই অংশগ্রহণ করা যাবে। তবে অন লাইনে যেহেতু বিষয়টি উন্মুক্ত থাকে, তাই সেখানে ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণের ফর্মে ‘হালাল আয় থেকে অংশগ্রহণ করা হয়েছে’ বিষয়টি স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। পাশাপাশি আয়ের প্রধান উৎসও উল্লেখ করতে হবে। এতে অন্যদের জন্য শরিক হওয়া সহজ হবে।

প্রচলিত অনলাইন ভাগে কুরবানীর পদ্ধতিতে কে কোন উৎস থেকে অর্থ প্রদান করে ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণ করছে- তা জানার সুযোগ নেই। অর্থের উৎস ডিসক্লোজ করার কোনও অপশন এসব সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে নেই। সুতরাং এটি স্পষ্ট না হয়ে কারও জন্য এমন অস্পষ্ট অন লাইন ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণ শরিয়াহর দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

২। কুরবানীর নিয়ত

কুরবানী মূলত একটি খালেস ইবাদাহ। তাই এখানে পরিচ্ছন্ন ও সঠিক নিয়ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ত পরিশুদ্ধ হওয়ার অর্থ হল, এমন কোনও নিয়ত করা যাবে না, যা অন্যান্য শরীকদের কুরবানী সঠিক হওয়ার জন্য প্রতিবন্ধক। যেমন, কেউ পেছনের কোনও বছরের কাযা বা অনাদায়ী কুরবানীর নিয়ত করে বসল। এমনটি হলে পুরো গোশত সাদাকা করে দিতে হবে। আবার এমন কোনও নিয়তও করা যাবে না, যার কারণে ব্যক্তির কুবরানী-ই সঠিক হয় না। যেমন, কেউ ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণ করেছে। তার উদ্দেশ্য বা নিয়ত-কুরবানী নয়। অথবা কোনও ইবাদত আদায়ের ইচ্ছা বা নিয়ত নেই। কেবল গোশতের ভাগ নেওয়ার জন্য শরীক হয়, তাহলে সে পশুতে যারা কুরবানীর উদ্দেশ্যে অংশগ্রহণ করেছে । এমনটি হলে তার নিজের কুরবানীও হবে না, অন্যান্য শরীকদেরও কুরবানী হবে না। সুতরাং ভাগে কুরবানীতে নিয়তের পরিচ্ছন্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রচলিত অনলাইন ভাগে কুরবানীতে এমন সূক্ষ্ম বিষয় যাচাই করার কোনও পদ্ধতি নেই। সুতরাং এ পরিস্থিতিতে অনলাইন ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণ করা শরীয়াহ-দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

এক্ষেত্রে করণীয় হল, যারাই ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণের জন্য ইচ্ছা করবে, তাদেরকে প্রথমেই একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। অনলাইনে এই ফর্ম থাকবে। এতে নিয়তের পরিশুদ্ধতার ঘোষণা থাকবে। পাশাপাশি-কুরবানীর তাৎপর্য, কুরবানী সঠিক হওয়ার মৌলিক নির্দেশনা ইত্যাদি শরীয়াহ-নীতিমালা বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকাও ওয়েবসাইটে থাকবে। অংশীদারে আগ্রহীরা সেটি পড়ে নিবে। এতে ভাগে কুরবানী সকলের জন্য নিরাপদ সাব্যস্ত হবে।

৩। ভাগের টাকা প্রদান

অনলাইনে যারা ভাগে কুরবানীর প্রস্তাব করেন, তাদের দুটি অবস্থা হয়ে থাকে। যথা-

১। পশু আগে থেকে তাদের সংগ্রহে নেই। ভাগের টাকা নিয়ে পশু ক্রয় করা হবে। এরপর কুরবানী করা হবে। এ সূরতে ভাগে টাকা দেয়ার অর্থ হলো অনলাইন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে পশু ক্রয়ে ওকীল নিযুক্ত করা। সুতরাং এক্ষেত্রে পশু ক্রয়ের পর টাকা থেকে গেলে তা ফেরৎ দিতে হবে। আর পারিশ্রমিক নির্ধারণ করতে চাইলে আলাদা করে নির্ধারণ করতে হবে।

২। পশু আগে থেকে তাদের সংগ্রহে আছে। সেক্ষেত্রে ভাগে টাকা দেয়ার অর্থ প্রথমে তাদের থেকে পশু ক্রয় করা। আর যেকোনও ক্রয় চূড়ান্ত হয় তা ‘কবয’ (হস্তগত) করার মাধ্যমে। এখানে সেটি হয় না। ভাগে কুরবানী সার্ভিসদাতা (বিক্রেতা)-কেই ক্রেতার পক্ষে পশু হস্তগত করার উকীল নিযুক্ত করাও শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভব নয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যূ। অনলাইনে যারা এ সেবা দিয়ে থাকেন, তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়-পশু তারা আগে থেকেই ক্রয় করে রাখেন। এরপর ভাগ গ্রহণের আহবান করেন।

এভাবে কুরবানী করা হলে তা সঠিক হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। বিষয়টি নানাভাবে সমাধান করা যায়-

ক. কসাই বা কোম্পানির এম্প্লয়ী নয়-এমন কাউকে ক্রেতাদের পক্ষে পশুটি হস্তগত করার জন্য উকীল নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা রাখা। এক্ষেত্রে পশুটি বিক্রেতার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে।

খ. কোম্পানি কর্তৃক পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম সাহেবকে ক্রেতাদের পক্ষে হস্তগত করার উকীল হিসাবে উপস্থাপন করা।

(এখানে আরও কিছু সমাধান আছে, যা কেবল উচ্চতর ফিকহ বোর্ডে আলোচনা করা যেতে পারে। সেগুলো আরও অধিক সহজ সমাধান)

৪। প্রাসঙ্গিক নানা শরীয়াহ ঝুঁকি

প্রচলিত অনলাইন ভাগে কুরবানীতে অংশগ্রহণে আরও নানা ধরনের শরীয়াহ ঝুঁকি রয়েছে। সংক্ষেপে তা হল-

-কোরবানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো, কুরবানীর পশুর কোনও অংশ বিক্রয়যোগ্য নয়। অনলাইনে যারা এ ধরনের ব্যবসা করেন, তারা পশুর থেকে যাওয়া নানা অংশ কী করেন, কোথায় ব্যবহার করেন- এগুলো স্পষ্ট নয়।

-চামড়া কোথায় ব্যয় করা হয়? এর বিক্রয়লবদ্ধ টাকা কী করা হয়, তা স্পষ্ট নয়।

-পশু যবাইয়ের পর গোশত সঠিকভাবে মেপে ৭ ভাগ করা-এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাপায় কম-বেশি হতে পারবে না। তদ্রূপ আগে থেকে প্রত্যেক শরিকের জন্য ওযন নির্ধারিত করে রাখা। এরপর পূর্ব নির্ধারিত ওযনে গোশত প্রদান করাও সঠিক পদ্ধতি নয়। কারণ একেক পশুর ওযন একেক রকম হয়। এতে দেখা যাবে, ওযন ঠিক রাখতে গিয়ে অন্য পশুর গোশত দেয়া হয়েছে। তখন এক পশুতে ৭ এর অধিক অংশগ্রহণ হয়ে যাবে। এতে কারও কুরবানী হবে না। আবার ঘোষিত ওযনের চেয়ে গোশত অধিক হলে, সেটিও অনুমোদন ছাড়া রেখে দেয়া যাবে না।

-ঈদের চুতুর্থ দিনও গোশত সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কুরবানী কবে হবে, তা উল্লেখ করা নেই।

-অংশীদার কারা হতে পারবে, এর কোনও সুনির্দিষ্ট শরীয়াহ নির্দেশনা নেই। এমনও হতে পারে, অমুসলিম কেউ ভাগে অংশগ্রহণ করে বসল। এমনটি হলে কারও কুরবানী হবে না।  এগুলো যাচাই করা, শরীকগণের এসব বিষয়ে নিশ্চিত থাকার সুযোগ দৃশ্যমাণ নয়।

-বিদেশ থেকে কেউ ভাগে অংশগ্রহণ করলে, সেই গরু এমন দিনে কুরবানী করতে হবে, যখন উভয় দেশে কুরবানির দিন চলমান থাকে। অন্যথায় বিদেশের লোকের পক্ষে কুরবানী হবে না। এ বিষয়টিও স্বচ্ছ নয়।

-কখনও দেখা যায়, ভাগে কুরবানী সার্ভিস প্রদানকারীদের কাছে আগে থেকে পশু থাকে না, সেক্ষেত্রে তারা শরিকদের টাকায় পশু ক্রয় করেন। এরপর তাদের পক্ষে কুরবানী করেন। এখানে মূল লেনদেনটি হচ্ছে-ওয়াকালাহ। সুতরাং কোনও টাকা বেঁচে গেলে সেটি ফেরৎ দিতে হবে বা রেখে দিতে চাইলে অনুমোদন নিতে হবে। অথবা আলাদা করে স্পষ্টভাষায় ওয়াকালাহ সার্ভিস চার্জ হিসাবেও পূর্ব থেকে চুক্তি হতে পারে। সুতরাং এগুলো কোনও একটি না করে সরাসরি অতিরিক্ত টাকা রেখে দেয়া যাবে না।

-কখনও দেখা যায়, আগে থেকে পশু থাকে। সেক্ষেত্রে পশুর মূল্য ও প্রাসঙ্গিক খরচের টাকা-আলাদা করে নির্ধারণ করতে হবে। কারণ তখন দুটি লেনদেন হয়। এক. তাদের থেকে পশু ক্রয় করা। দুই. পশু কুরবানী ও প্রাসঙ্গিক কাজ আঞ্জাম দেয়া। এটি ওয়াকালাহ চুক্তি। এ বিষয়টি বেশ অবহেলিত। অধিকাংশ মানুষ মনে করে, তারা পশু ক্রয় করে কুরবানী করবে। অথচ পশু আগে থেকেও তাদের কাছে থাকতে পারে। বিষয়টি অত্যন্ত সূক্ষ্ম।
(সংগৃহীত)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অনলাইনে কুরবানি দেয়া হলে উপরোক্ত ঝুকি গুলো থেকে যায়,যার দরুন অনেক ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী কবুল হবেনা,বা কুরবানী আদায় হবেনা।

সুতরাং অনলাইনে কুরবানি না দেয়ারই পরামর্শ থাকবে। 

তদুপরি উপরোক্ত কোনো ঝুকির যদি বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা না থাকে,শরীকে কুরবানীর সকলের ইনকাম সোর্স যদি শতভাগ হালাল থাকে, সকলের নিয়ত যদি শতভাগ শুদ্ধ থাকে এবং আর কোন সমস্যা যদি না থাকে সেক্ষেত্রে অনলাইনে কুরবানী দেওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...