আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in পবিত্রতা (Purity) by (6 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। বর্তমানে পাত্র/পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে ছবি দিয়েই সমস্ত কাজ চলে। গণহারে ঘটকদের কাছে মেয়েদের ছবি দেয় পরিবার থেকে, এইভাবেই বিয়ে হচ্ছে, ছবি না দিলে ঘটক প্রস্তাব আনে না। কোনোভাবে প্রস্তাব আসলেও ছেলে পক্ষ থেকে দেখতে আসেনা অনেকসময় ইচ্ছা করেই ছবি চায়,, আবার কেউ কেউ দূরত্বের কারণে এসে দেখে যায়না। সবাই ছবি চায়। আমরা যারা জেনারেল পড়ুয়া, বাসায় দ্বীন এর বুঝ নেই, মাসের পর মাস লড়াই করেও যখন বয়স বেড়ে যায়, ছবি না দেওয়ায় প্রস্তাব আসেনা, এসব কারণে বিয়ে হয় না। সমাজে, পরিবারে কতটা অপমানিত, লাঞ্ছিত হয়ে পার হতে হয় বলে বুঝানোর মতো হয়তো না। আমলে ইবাদতে ও খাদ তৈরি হয়ে যায়, সাথে মা বাবার কষ্ট পেরেশানি আর বদদোয়া তো আছেই। কি করা উচিৎ এমন পরিস্থিতিতে? আজ এতটা মাস ধরে এমন সময় যাচ্ছে। কোনদিক দিয়ে কোনো ব্যবস্থা হচ্ছেনা। বাবা মায়েরও বয়স হয়েছে। উনারাও এমন চাপ নিতে পারছেন না আর। বয়স একটু বেড়ে গেলে আর কেউ মুখ ফিরেও থাকায় না। নানান কথা শুনতে হচ্ছে। এসব পেরেশানি হতাশা সবমিলিয়ে নিজেকে হেদায়াতের আগের জাহিলিয়াত থেকে আরো বড় গুনাহগার মনে হচ্ছে। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। মা বাবার কষ্টের কারণ হয়ে তো কেউ কখনও জীবনে উন্নতি করতে পারে না। তাদের কষ্ট, হতাশা আরো ভয়ের কারণ হচ্ছে। নিজের আমল আখলক ও ঠিক নাই।
তাদেরকে ছবি তোলা হারাম, নাজায়েজ এসব বললে উনারা বলেন তাহলে আলেমরা তুলেন কেনো, প্রয়োজনে তোলা যায়, মা এর কথা শুনলে গুনাহ হবে না ইত্যাদি। আত্মীয়তার সম্পর্ক নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে, মা বাবার কষ্টের কারণ হচ্ছি, আমার এই ছবি না দেওয়াটা কি বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে? আল্লাহ ও নবীজির পর সবচেয়ে আনুগত্য করতে হয় মা বাবার, কিন্তু এসব কারণে মা বাবার সাথে ও সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, উনারা কথা বলা বন্ধ করে দেন, আশেপাশের মানুষ ও নানান কথা শুনায়, তাদের তো দ্বীন এর বুঝ ও নেই, এত কিছু বুঝেন ও না। আমি তো গুনাহগার, অজ্ঞ। দিনশেষে গুনাহ তো হয়ে যাচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (620,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পূর্বে পাত্রিকে দেখা জায়েজ আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ 
تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে।
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫ মিশকাত ৩০৯৮।)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمُ الْمَرْأَةَ فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلٰى مَا يَدْعُوهُ إِلٰى نِكَاحِهَا فَلْيفْعَلْ»

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, আর যদি তার পক্ষে এমন কোনো অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা বিবাহের পক্ষে যথেষ্ট, তখন তা যেন দেখে নেয়। 

(আবূ দাঊদ ২০৮২, সহীহাহ্ ৯৯, আহমাদ ১৪৫৮৬, ইরওয়া ১৭৯১, সহীহ আল জামি‘ ৫০৬।)

★ইসলামে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে,ছবির মাধ্যমে নয় ।
কারণ- একেতো বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা, ব্যবহার ও
আদান-প্রদান শরীয়তে নিষিদ্ধ ।
তাছাড়া ছবিতে বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি যাচাই সম্ভব নয় ।
অধিকন্তু পাত্রের নিকট ছবি পাঠানোর দ্বারা বারবার তার জন্য বেগানা নারীকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।
যেটি নাজায়েজ। 
 
অথচ বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্র পাত্রীকে বারবার
দেখার বৈধতা নেই ।
তাছাড়াও এ ছবি পাত্র ব্যতীত অন্যকোন পুরুষও দেখতে পারে ।
অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা জায়িয নয় । এ সকল কারণে ছবির মাধ্যমে পাত্রী দেখা বা
পাত্রীর ছবি পাত্রের নিকট পাঠানো ইসলামের
দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
{সূত্রঃ রদ্দুল মুখতার, ৬ : ৩৭০}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত কাজটিকে বাড়াবাড়ি বলা যাবেনা,বরং এটিই শরীয়তের নির্দেশ।
নিজের মোবাইলে ছবি তোলা,আর সেটি গায়রে মাহরামকে দেখানে এক জিনিস নয়।

গায়রে মাহরাম এর সামনে যেমন চেহারা খোলা জায়েজ নেই,ছবি দেয়াও জায়েজ নেই।

এখন আপনার পরিবারে বিষয়টি যেহেতু অনেক সমস্যার মধ্যেই চলে গিয়েছে,সুতরাং এমতাবস্থায় তাদের আদেশে/চাপে ছবি দিলে সেক্ষেত্রে মহান আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করে নিবেন।

Aalia.com বা অর্ধেক দিন ডট কম এ জাতীয় নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট গুলোতে আপনি আপনার বায়োডাটা দিতে পারেন, সেক্ষেত্রে আশা করি উক্ত সমস্যায় পড়তে হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...