আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (22 points)
closed by

---------- কাবিননামায় স্ত্রীর তালাক গ্রহণের অধিকার সম্পর্কে ------

 

আসসালামু আলাইকুম

কাবিননামার ১৮ নং ধারা খালি থাকা অবস্থায় কাজী পাত্র কে স্বাক্ষর করতে বলে। 

পাত্র যখন বলে এসব ফাঁকা কলাম পূরণ করলেন না ?
কাজী বলে বেশি বুঝিন না।  যা বলছি তাই কর। 

পাত্র স্বাক্ষর করে ।   এরপর পাত্রের সামনেই কাজী ১৮ নং ধারায়  "হ্যা" লিখে স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়ে দিলো। 
এরপর পাত্র কাজী কে কিছু বলে নি।  আর কিছু বললে কাজীর পূর্বের ব্যবহার অনুযায়ী কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় নি।  অযথা তর্ক। 

আমার জানা শুনা ও ধারণা মতে বেশিরভাগ কাজী এরকম করে। 

এটি তো স্পষ্ট ধোঁকা। কেননা ১৮ নং ধারায় লিখা থাকে যে " স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের (গ্রহণের ) ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কিনা? করিয়া থাকিলে কি কি শর্তে? 
এক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি নেয়া আবশ্যক। কিন্তু কাজী অনুমতি নেয় নি।  

তালাকের মালিক স্বামী।  কিন্তু কাজী স্বামীর অনুমতি না নিয়ে ১৮ নং ধারায় "হ্যাঁ" লিখে দেয়। 

প্রশ্ন ১: উপরের বর্ণনা মতে কি স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবে?

প্রশ্ন ২: কাজী স্বামীর অনুমতি না নিয়ে ১৮ নং ধারায় "হ্যাঁ" লিখে দেয়। তারপর স্বামীর সাক্ষর নেয়।  এটি তার  ১ম বিয়ে এবং কাবিননামার ১৮ নং ধারা সম্পর্কে জানে না। তাই কাবিননামা না পড়েই কাজী স্বাক্ষর করতে বললেই স্বাক্ষর করে। 
 এক্ষেত্রে স্ত্রী কি তালাকের অধিকার পাবে ?

প্রশ্ন ৩: কাবিননামায় স্বাক্ষর করার আগেই (ইজাব কবুল) বিয়ে করা  আবশ্যক তা কাবিননামা পড়লেই বুঝা যায়।  যেমন  "স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের (গ্রহণের ) ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কিনা?" আমার জানা মতে আমি আজ পর্যন্ত কাবিনের আগে বিয়ে হতে দেখিনি।

বিয়ে না করলে তো স্বামী স্ত্রী  হওয়া যায় না। তাই বিয়ে না করলে হবু স্বামী   তালাকের মালিকও   হবে না।  তাই হবু স্বামী তার হবু স্ত্রীকে বিয়ের আগে কাবিননামায় তালাকের অধিকার দিলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।  কারণ তারা এখনো স্বামী- স্ত্রী নয়। তাই নয় কি ?


প্রশ্ন ৪: স্ত্রী যদি বলে "তোমাকে তালাক দিলাম" কিংবা "তোমাকে তালাক প্রদান করলাম" তাহলে তো তালাক হয় না কেননা স্ত্রী তালাক দিতে / প্রদান করতে পারে না , গ্রহণ করতে পারে।  তাহলে কাবিননামার ১৮ নং ধারায় যে লিখা থাকে "স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কিনা?" এর দ্বারা স্ত্রী কেন তালাকের গ্রহণের অধিকার পাবে? যেখানে স্ত্রী তালাক প্রদান করতে পারে না, কেবল  গ্রহণ করতে পারে ?

 

প্রশ্ন ৫: স্বামী স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেয়নি।  কাজী স্বামীকে ধোঁকা দিয়ে , স্বামীকে না বলে কাবিননামায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়ে দিলে স্ত্রী সেই ধোঁকাবাজি ক্ষমতাবলে  তালাক গ্রহণ করলে তো তালাক হবে না। এরপর ওই স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করলো।   তাহলে কাজীর এই ধোঁকাবাজি প্রতারণার  কারণে স্ত্রী  স্বামীর হক নষ্ট করতেছে, আবার স্বামীর ট্যাগ লাগিয়ে পরপুরুষের সাথে যেনা করতেছে।  স্বামীর হক নষ্ট  আর পরপুরুষের সাথে যেনার সমান  গুনা কি কাজীর নয় ?

closed

1 Answer

+1 vote
by (620,460 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বর্ণনা মতে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

(০৩)
হ্যাঁ, এটি সঠিক।
হবু স্বামী তার হবু স্ত্রীকে বিয়ের আগে কাবিননামায় তালাকের অধিকার দিলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।  কারণ তারা এখনো স্বামী- স্ত্রী হয়নি।

(০৪)
এখানে প্রদান দ্বারা গ্রহণ করাই উদ্দেশ্য। 

অনেক কাজী সাহেব বিষয়টি না বুঝে এভাবে লিখে থাকে।

আসলে অনেক কাজী সাহেব শরীয়তের মাসয়ালা ভালোভাবে জানেনা।

(০৫)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে উক্ত কাজী সাহেবেরও মারাত্মক গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...