কারো মনে কষ্ট দিলে কি করা উচিত?

Question

আস-সালামু আলাইকুম,

আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকি বর্তমানে। আমার পড়াশোনা শেষ এজন্য হল ছেড়ে দিতে হবে।তাই আমি ও আমার ২ বান্ধবী মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই বাসা ভাড়া নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করে নিজেদের পছন্দমতো বাসা পাই। ওদের সাথে বাসা নেয়ার আগে কর্মজীবী নারীদের হোস্টেলে আমি অ্যাপ্লাই করি কিন্তু ওখানে আমার সিট হয়না।একটা অ্যাপ্লিকেশন ৩ মাস পর্যন্ত বহাল থাকে। গত ২দিন আগে আমার কর্মজীবী ওখান থেকে জানিয়েছে যে আমার সিট হয়েছে। বলে রাখি যে এখানে ভাড়া কম ২০০০ এর মতো।আর যেখানে বাসা ভাড়া নিয়েছি তা ৪০০০। আমার আর্থিক অবস্থা ততটাও স্বচ্ছল নয়।তো সিট হওয়ার পর সবাই ই আমাকে বলতেছে কর্মজীবী নারীদের হোস্টেলে উঠে যেতে। কিন্তু আমি আসলে দোটানায় আছি। আমার জন্য আমার বান্ধবীরা একসাথে বাসায় উঠলাম।এখন আমি চলে যাচ্ছি এতে ওদের মন খারাপ হচ্ছে। যদিও আমার বদলে ওখানে আরেকজন মেয়ে উঠবে।নইলে ওদের জন্য ভাড়া অনেক বেশি হয়ে যায়। ওদের মন খারাপ থেকেও আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আমি ওদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতেছি। এখন সবাই বলতেছে যে এমন না ঐ বাসায় আমারা একদম আজীবন থাকবো।কারো চাকরি বা বিয়ে হয়ে গেলে এমনিতেই বাসা ছাড়তে হতো।তাই আমাকে আমার অন্য বান্ধবীরা বা বাসা থেকে বলতেছে যে আমি যেন কর্মজীবী তে উঠে যাই। যেহেতু ওখানে খরচ কম। কিন্তু আমি খুবই লজ্জিত হচ্ছি। আমার ২ বান্ধবীর সাথে আমি কথা বলেছি।ওরা প্রথমে রাগ করলেও ওরাও বলছে যে বেটার অপশন পাওয়ার পর ও উঠব না কেন। কর্মজীবী তে যাতে উঠে যাই। কিন্তু আমি আসলে কি তাই আমি জানি না।আমার একবার মনে হয় যাই কর্মজীবী তে। আবার মনে হয় বাসায় থাকি।বাসা আমার পছন্দের। কিন্তু কিছু সমস্যা এখানেও আছে ,আমার রান্না করে খেতে হবে; বিশুদ্ধ পানি ফিল্টার নেই।আবার বাসা ৫ তলা লিফট নেই। আমার একটু শারীরিক সমস্যা ও আছে। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে আমার কষ্ট হয়।তাও আমি ভেবেছিলাম সবাই মিলে থাকব।একটু তো কষ্ট করতেই হবে। আমার বাবা বলেছে যেখানে আমি সুবিধা মনে করি আমি যেন সেখানে যাই। কর্মজীবী নারীদের হোস্টেলে ও যে একদম সব সুবিধা আছে এমন নয়। কিন্তু ওখানে টাকা একটু কম এই আরকি। আমি আমার বান্ধবীদের বলেছি যে ওরাও যাতে ওখানে অ্যাপ্লিকেশন দেয়। কিন্তু ওখানে সিট হওয়া একটু কষ্টকর। আমার ই ৩ মাস পর হয়েছে। আমি ওদের আগে বলিনি যে অ্যাপ্লিকেশন করেছি।আমার হয়নি‌ তাই আর বলিনি।ওদের খারাপ লাগাটা আমি বুঝতেছি। ওদের জায়গায় আমি থাকলে আমার ও খারাপ লাগত। কিন্তু আমি যে কি করব।আমার কেমন যেন নিজেকে স্বার্থপর মনে হচ্ছে।যে ওখানে সিট হওয়া মাত্রই আমি চলে যাচ্ছি। আমি পারতাম সিট ক্যানসেল করে দিতে। কিন্তু একবার ক্যানসেল করলে আমি আর ওখানে উঠতে পারব না।আমি খুবই অপরাধবোধে ভুগতেছি। ৫-৬ বছর একসাথে পড়াশোনা করেছি আমরা।আমার খুবই খারাপ লাগতেছে।আবার সবাই বলতেছে নিজের টা ভেবে দেখ।পরে কিন্তু এমন সুযোগ আসবে না। আমার আসলে কি করা উচিত?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "

তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/36

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার যেখানে সার্বিক সুবিধা হবে, সেখানেই আপনি উঠবেন,বাসা ভাড়া নিবেন। এখানে বিশ্বাসঘাতকতার কিছু নেই। আল্লাহ আপনাকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের তাওফিক দান করুক।আমিন।