আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমি যাকে উপহার দিয়েছি সে আমার বান্ধবী।  হিন্দু ধর্মের অনুসারী। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। বিয়ের সময় শাড়ি দিয়েছিলাম যাতে সময়মতো তার কাজে লাগে। শুধু আমি না আমার অন্য বান্ধবীরাও দিয়েছি। আমরা আসলে সাহায্যের নিয়তেই দিয়েছি। তখন পর্দার ব্যাপারটা আমরা চিন্তা করিনি। এখন আইওএমের স্টুডেন্ট হিসাবে আমি টার্গেট করেছি দ্বীনের দাওয়াত দিলে আমার এই হিন্দু বান্ধবীকেই আগে দিবো। কিন্তু সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য হাদিয়া দেওয়ার যে পদ্ধতি আমি সেটা সবসময় করার চেষ্টা করি।
আমি ভালো নিয়তে দিয়েছিলাম। এখন ও তো হিন্দু এজন্য পর্দা মেনে চলবেনা। আমার উপহার দেওয়া শাড়ি পরে যদি বেপর্দা চলাফেরা করে তাহলে কি আমার গুনাহ হবে

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো যদি ক্রেতার হাবভাব দেখে নির্ধারণ করা যায় না যে, সে কি হারাম ত্বরিকায় ব্যবহার করবে, না হালাল ত্বরিকায় ব্যবহার করবে, তাহলে এমতাবস্থায় ঐ ক্রেতার নিকট বিক্রয় না করাই উচিৎ। 

তবে বিক্রয় করে নিলে ক্রেতা যদি কোনো গোনাহের কাজে ব্যবহার করে, তাহলে এর গোনাহ শুধুমাত্র ক্রেতারই হবে।বিক্রেতার এক্ষেত্রে কোনো গোনাহ হবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। 
(সূরা ফাতির-১৮)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/242

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوِ ابْتَعْتَهَا تَلْبَسُهَا لِلْوَفْدِ إِذَا أَتَوْكَ وَالجُمُعَةِ؟ قَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ» وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى عُمَرَ حُلَّةًسِيَرَاءَ حَرِيرٍ كَسَاهَا إِيَّاهُ، فَقَالَ عُمَرُ: كَسَوْتَنِيهَا، وَقَدْ سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِيهَا مَا قُلْتَ؟ فَقَالَ: «إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا، أَوْ تَكْسُوَهَا»

উমর (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রী হতে দেখে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি এটি খরীদ করে নিতেন, তা হলে যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখন এবং জুমুআর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরবর্তী সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাকেই পরতে দেন। উমর (রাঃ) বললেন, আপনি এখনি আমাকে পরতে দিয়েছেন, অথচ এ সম্পর্কে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে, তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে।(সহীহ বুখারী-২/৮৬৮, হাদীস নং-৫৮৪১, ইফাবা-৫৪২৩)


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলাকে শাড়ি গিফট করার সময় তার হাবভাব দেখে যদি নির্ধারণ করা না যায় যে, সে কি হারাম ত্বরিকায় ব্যবহার করবে? না হালাল ত্বরিকায় ব্যবহার করবে?

তাহলে এমতাবস্থায় তাকে শাড়ি গিফট করার পরে যদি সে বেপর্দা চলাফেরা করে,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

হ্যাঁ যদি আপনি আগে থেকেই জানেন যে হারাম ত্বরিকায় ব্যবহার করবেই,তাহলে তাকে শাড়ি গিফট দেয়ার পর সে বেপর্দা চলাফেরা করলে,সেক্ষেত্রে আপনারও গুনাহ হবে।

এক্ষেত্রে গুনাহের কাজে সহযোগিতার গুনাহ আপনার হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...