আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ । ৬ মাসের কিস্তিতে একটা পণ্য কেনা হয়েছে। ৬ মাসের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি । এখন প্রতিষ্ঠান সুযোগ দিচ্ছে কিস্তির টাকা বাড়িয়ে আদায় এর মেয়াদ বাড়াতে যেমন ৮ মাস, ১২ মাসে পরিশোধ, তবে প্রত্যেক মেয়াদের জন্য পণ্যের দাম বাড়বে। এমতাবস্থায় ক্রেতার করণীয় কি? জাযাকাল্লাহ ।

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তে ব্যবসা বাণিজ্য, ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ। 
 এ সম্পর্কে আল কুরআনেই বলা হয়েছে,
احل الله البيع وحرم الربا 
 ‘মহান আল্লাহ কেনাবেচাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম’ (সূরা আল বাকারাহ : ২৭৫)। 

রাসূল সা: এক ইহুদির কাছ থেকে বাকিতে খাদ্যদ্রব্য কিনেছিলেন এবং তাঁর লৌহবর্ম বন্ধক রেখেছিলেন (সহিহ আল বুখারি)। 

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  কিস্তিতে (বাকীতে মেয়াদের ভিত্তিতে)   ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয আছে।

বাকিতে লাভে পণ্য কেনাবেচা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, ‘কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এ কথা বলায় কোনো অসুবিধা নেই যে, নগদ হলে এত দাম আর বাকিতে হলে এত দাম। তবে ক্রেতা-বিক্রেতার সন্তুষ্টির ভিত্তিতেই তা হতে হবে’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীয়তের বিধান হলো  কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয। 
তবে কিস্তির বিক্রির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে-
১. পণ্যের মূল্য ও আদায়ের তারিখ সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
২. চুক্তির সময় পণ্যের মূল্য চূড়ান্ত হওয়ার পর কিস্তি আদায়ে বিলম্ব বা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না।
৩. কিস্তি আদায়ের জন্য পণ্য আটকে রাখা যাবে না; বরং চুক্তির পরই পণ্য ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

(মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী জিদ্দা ৭/২/৩২-৩৬; বাইউত তাকসীত ওয়া আহকামুহু, সুলাইমান আততুরকী পৃষ্ঠা : ২২৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা, আল্লামা তাকী উসমানী ১/৭)
,
কিস্তির মেয়াদ কম বেশি হওয়ার কারণে পণ্যের মূল্য কম বেশি করা জায়েয। তবে শর্ত হল, কেনা বেচার সময় মেয়াদ অনুযায়ী একটা মূল্য চূড়ান্ত করে দিতে হবে। অর্থাৎ গ্রাহক যদি পণ্যটি কিস্তিতে নেয় তবে তা কত মাসে পরিশোধ করবে এবং মোট কত টাকা পরিশোধ করবে তা চুক্তির সময়ই নির্ধারণ করে নিতে হবে। বেচাকেনা সম্পন্ন হওয়ার পর কোনো কিস্তি আদায়ে বিলম্ব হলেও মূল্য বাড়ানো যাবে না। অথাৎ পূর্ব নির্ধারিত মূল্য অপরিবর্তীত থাকবে। তাই গ্রাহকের দায়িত্ব হবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কিস্তি আদায় করে দেয়া। যেন বিলম্বের কারণে বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

(জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩১; আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/৭; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩৭; রদ্দুল মুহতার ৫/৯৯,মাবসূত ১৩/৮; রদ্দুল মুহতার ৫/১৪২; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/৭-৮)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পন্যের দাম বাড়ানো তাদের জন্য জায়েজ হবেনা। ক্রেতারও সেই চুক্তি মেনে নেয়া জায়েজ হবেনা।

এমতাবস্থায় কাহারো থেকে ঋন নিয়ে হলেও কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...