আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আ'লাইকুম।
আমার বয়স ২৫, অবিবাহিত। বিয়ের জন্য পাত্র পক্ষ দ্বীনদার পর্দানশীল মেয়ে খোজে।বলে রাখা ভালো,আমি মাহরাম মেইনটেইন করে পর্দা করার চেষ্টা করি ঘরে বাইরেও। পর্দা শুরু করি ইন্টার পরীক্ষার পর থেকে এবং তখন থেকেই আমি বিয়ের ক্লাব,হলুদ অনুষ্ঠান,বার্থডে পার্টি অর্থাৎ যত ধরনের ফ্রি মিক্সিং আছে এরকম অনুষ্ঠানে আমি যাইনা।নিজের বিয়েও ঘরোয়া সুন্নাহ মোতাবেক করার নিয়ত, ইং শা আল্লাহ।
পাত্র পক্ষ কে এসব বলার পর তারা সমর্থন করেই কয়েক মাস আগে দেখতে আসে,আসার পর দেখা যায় বাবাও আসে।আমি বাবার সামনে যেতে না চাইলে আমাকে জোর করা হয়,এটা বলা হয় বাবা না দেখলে নাকি সামাজিক ভাবে আগানো সম্ভব না।এমন না যে পাত্রের আমাকে পছন্দ হয়েছে সেটা জানিয়েছে,পাত্রের বাবা দেখলেই শুধু ফাইনাল এরকম কিছুনা।সেদিন শুধু পাত্র তার মা ফুফু দেখেছে তারপর বাসায় গিয়ে জানাবে। আর বাবা অন্যরুমে ছিলো যেহেতু আমি ওনার সামনে যাবোনা বলেছি।পরে আমি মুখ ঢেকে গিয়ে সালাম দিয়ে আসি।

এমতাবস্থায় তারা মনক্ষুন্ন হয় এতে কি আমার গোনাহ হবে?আমার পরিবার যেহেতু জেনারেল ব্যাকগ্রাউন্ড এর তাদের মতে, পর্দা নিয়ে আমি যা করি তা বাড়াবাড়ি, কঠোরতা করছি,ইসলাম এত কঠিন না।আসলেই কি আমি তাই করছি? আমার কি পাত্রের বাবার সামনে যাওয়া উচিত ছিলো? আর পাত্র যদি দ্বীনদার হয় তারা ত এটা জানার কথা মানার কথা তাহলে তারাও বা কেন বাধা দেয় না?

আমার শুধু একটা জায়গায় খারাপ লাগে গুরুজন হিসেবে পাত্রের বাবার সামনে মুখ না দেখানোই কি তাকে অপমান করলাম? আল্লাহ কি নারাজ হবেন? আমি কি ভুল পথে আছি নাকি ঠিক আছি? দয়া করে আমাকে রেফারেন্স সহ উত্তর দিয়েন যাতে আমি আমার পরিবারকেও বুঝাতে সক্ষম হই, ইং শা আল্লাহ।
আরেকটা প্রশ্ন ইদানিং আমি আমার বিয়ে নিয়ে বেশি স্বপ্ন দেখি,এমন না যে আমি এসব নিয়ে ভাবছি, বা আমার পরিবারে এসব নিয়ে কথা হচ্ছে তারপরও দেখছি এটা কি ভালো নাকি খারাপ নিজের বিয়ে দেখা?

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

 এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2898

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পাত্রের বাবা পাত্রী দেখতে পারবেনা।
এটা নাজায়েজ।

সুতরাং চেহারা অনাবৃত রেখে পাত্রের বাবার সামনে যাওয়া জায়জ হবেনা।

গেলে অন্যান্য গায়রে মাহরামদের সামনে যাওয়ার ন্যায় হাত,পা,চেহারা সহ পুরো শরীর সম্পূর্ণ পর্দা করতে হবে।

চেহারা খুলে ফ্যামিলি সামনে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ফ্যামিলির চাপ মানা যাবেনা।
জবরদস্তি করে পাঠিয়ে দিলে সেক্ষেত্রে এর গুনাহ ফ্যামিলি ও পাত্রের বাবার হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
গুরুজন হিসেবে পাত্রের বাবার সামনে মুখ না দেখানোতে আপনি তাকে অপমান করেননি,তাকে ইসলামের আসল শিক্ষা শিখিয়েছেন। এতে আল্লাহ নারাজ হবেননা,বরং আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি সঠিক পথেই আছেন।

তদুপরি আপনার পরিবার যদি জবরদস্তি করে আপনাকে পাত্রের বাবার সামনে পাঠিয়ে দেয়, সেক্ষেত্রে এর গুনাহ আপনার পরিবার ও পাত্রের বাবার হবে। এমতাবস্থায় আপনি আল্লাহর কাছে তওবা করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...