নারীর জন্য কী ধরণের সাজসজ্জা বৈধ হবে- ইসলাম এক্ষেত্রে কিছু মুলনীতি আরোপ করেছে। মূলনীতিগুলো হচ্ছে এই–
১- কোনো সাজসজ্জা হারাম হওয়ার ব্যাপারে যতক্ষণ পর্যন্ত দলিল পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তা বৈধ। আর হারাম হওয়ার দলিল পাওয়া গেলে তা অবৈধ। কেননা, বস্তুর মূল হচ্ছে, বৈধতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللّهِ الَّتِيَ أَخْرَجَ لِعِبَادِهِ وَالْطَّيِّبَاتِ مِنَ الرِّزْقِ
আপনি বলুন, আল্লাহর সাজসজ্জাকে, যা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে? (সূরা আ’রাফ ৩২)
২- সাজসজ্জা করতে গিয়ে নারী পুরুষের বেশ ধারণ করতে পারবে না। যেমন- চুল এত ছোট করে ছাঁটা যার কারণে দূর থেকে দেখে পুরুষ মনে হয়। কেননা, ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ
রাসূলুল্লাহ ﷺ নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন। (বুখারী ৫৮৮৫)
৩- সাজসজ্জার ক্ষেত্রে অমুসলিম কিংবা প্রকাশ্য পাপাচারে লিপ্ত নারীদের অনুকরণ করা যাবে না। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে। (আবু দাউদ ৪০৩১)
৪- সাজসজ্জার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর বস্তু বা প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لا ضرر ولا ضرار ক্ষতি ও ক্ষতি সাধনের কোন অনুমতি নেই। (সুনানে দারাকুতনী ৩০৭৯)
চোখে রঙিন পর্দা বা কন্ট্যাক্ট লেন্স। চশমার বিকল্প হিসেবে আজকাল অনেকেই ব্যবহার করছেন। এটা আজকাল হয়ে উঠেছে ফ্যাশনের নতুন অনুষঙ্গ। এ সম্পর্কে শায়েখ সালিহ আল ফাওযান বলেন,
العدسات إذا كان فيها مصلحة لتقوية البصر، بصرها ضعيف تحتاج للعدسات تلبسها مثل ما تلبس النظارات إذا كان البصر ضعيفًا، وكذلك إذا كان في عينيها عيب، في عينيها عيب تلبس العدسات من أجل إزالة هذا العيب فلا بأس بذلك، أما إذا كانت العينان سليمتين ولا فيهما عيب فلا نرى لبس العدسات؛ لأن هذا من العبث، وبعض النساء تلبس عدسات تشبه أعين الكافرات تكون زرق، أو تكون .. ، وبعضهن تلبس عدسات على شكل الثياب التي تلبسها؛ هذا من العبث .. أنه لا يجوز
যদি কন্ট্যাক্ট লেন্স চশমার মত দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে হয়, অনুরূপভাবে চোখের কোনো দোষ দূর করার উদ্দেশ্য হয় তাহলে অসুবিধা নেই। আর যদি চোখ সুস্থ থাকে যে, তার চোখে কোনো ত্রুটি নেই, তাহলে এটির ব্যবহার আমরা জায়েয মনে করি না। কেননা, এটি তখন ফ্যাশন হবে। অনেক মহিলা কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে, যাতে অমুসলিম নারীদের মত তাদের চোখ নীলাভ বা বিভিন্ন রঙ্গের দেখায়। অনেকে নিজের পোশাকের সঙ্গে কালার মিলিয়ে এটি ব্যবহার করে। এটা নিছক ফ্যাশন, যা জায়েয নেই।
হাদিস শরিফে এসেছে,
قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: لَعَنَ اللَّهُ الوَاشِمَاتِ وَالمُسْتَوْشِمَاتِ، وَالمُتَنَمِّصَاتِ، وَالمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ، المُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللَّهِ تَعَالَى
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা অভিশম্পাত করেছেন সেসব নারীদের উপর যারা দেহাঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং যারা করায়, তেমনি যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে, যারা সৌন্দর্য মানসে দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, যারা মহান আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে। (বুখারী ৪৮৮৬, ৪৮৮৭, ৫৯৩১, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮)
যাদের চোখে পাওয়ার এর সমস্যা আছে তারা কন্টাক্ট লেন্স ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন।
এতে কোনো সমস্যা নেই।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কন্টাক্ট লেন্স ব্যাবহার প্রয়োজন।
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলার গন বলেছেন যে,
স্বামীর জন্য চোখে রঙিন লেন্স পরা জায়েয।
কিন্তু পাত্রপক্ষকে দেখানো, নন-মাহরামের মাঝে নিষেধ।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সতর্কতামূলক চোখে লেন্স না পড়াই উচিত।
★আলগা,কৃত্রিম নখ লাগানো নাজায়েয। আমাদের শরীয়াহ নখ ছোটো করতে বলেছে। কাফির নারীদের অনুকরণে শরীয়াহ বিরোধী সাজ অনুমোদিত নয়।
,
★কানে একের অধিক ফুটো করা,এতে যদি কাফের ফাসেকদের সাদৃশ্যতা না থাকে,তাহলে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা যাবে।
,
অন্যথায় জায়েজ নেই।
,
আরো জানুনঃ
(০২)
শরীয়তের বিধান মতে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মহিলাদের চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েয নয়।
মহিলাদের জন্য কালো কালার ব্যাতিত অন্য যেকোনো কালারের কলপ ব্যবহার করা জায়েজ আছে।
তবে এখানে নিয়ত করবে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জন।
আরো জানুনঃ