আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু
আমার আব্বু নামে মুসলিম বলা যায়৷ উনি নামাজ পড়েন নাহ (নাউজুবিল্লাহ আল্লাহ উনাকে হেদায়েত দিক আমীন) মানে আম্মুর সাথে বিয়ের আগে থেকেই অনেকটা এমন৷ নাস্তিক না ঠিক তাওহীদে বিশ্বাস করেন কিন্তু নামাজ পড়েন নাহ,ইসলামের নিয়ম কানুন মেনে চলেন না।
এখন আম্মুর সাথে আব্বুর বিয়ে কি বৈধ হয়েছে? ইসলামিক নিয়মেই হয়েছে৷ আম্মুও এতো জানেন না ইসলাম নিয়ে বিস্তারিতভাবে৷ এখন তাদের সংসার করা কি বৈধ? আল্লাহতে বিশ্বাসী তবে ভাবেন যে আল্লাহ সম্পর্কে এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন যেগুলো ইসলামে যেভাবে আল্লাহর পরিচয় বলা হয়েছে তেমন নাহ। নিহিলিস্টদের মতো অদ্ভুত চিন্তা ভাবনা৷
আব্বুকে জন্মের পর থেকেই কোনদিন নামাজ পড়তে দেখিনি৷
এখন আম্মুর করণীয় কি? আব্বুর উপর ভরণপোষণের বিষয়টা ন্যস্ত আমাদের৷ এমনি অন্য কোন সমস্যা নেই। আব্বু আব্বুর মতো থাকেন আমরা আমাদের মতো৷ অনেকটা সেক্যুলারদোর জীবন৷
কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/43637/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بَيْنَ الْعَبْدِ وَبَيْنَ الْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ 

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মু’মিন) বান্দা ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করা।
সহীহ : মুসলিম ৮২, আবূ দাঊদ ৪৬৭৮, নাসায়ী ৪৬৪, তিরমিযী ২৬২০, ইবনু মাজাহ্ ১০৭৮।

উপরোক্ত হাদীসটি দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করে যে, সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) বর্জন কুফরীকে অনিবার্য করে দেয়। সকল মুসলিম মনীষীর ঐকমত্যে, বিশ্বাস সহকারে কেউ সলাত বর্জন করলে সে কাফির হয়ে যাবে। তবে সলাত আদায় ওয়াজিব মনে করে ও অলসতাবশত কেউ সলাত বর্জন করলে তার কুফরীর ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যা-২৭/৫৩" এ বর্ণিত রয়েছে,

নামায তরক কারীর বিধান
حكم تارك الصلاة:
 لتارك الصلاة حالتان: إما أن يتركها جحودا لفرضيتها، أو تهاونا وكسلا لا جحودا.فأما الحالة الأولى: فقد أجمع العلماء على أن تارك الصلاة جحودا لفرضيتها كافر مرتد يستتاب، فإن تاب وإلا قتل كفرا كجاحد كل معلوم من الدين بالضرورة، ومثل ذلك ما لو جحد ركنا أو شرطا مجمعا عليه.واستثنى الشافعية والحنابلة من ذلك من أنكرها جاهلا لقرب عهده بالإسلام أو نحوه فليس مرتدا، بل يعرف الوجوب، فإن عاد بعد ذلك صار مرتدا.
নামায তরক কারীর বিধান দুই প্রকারঃ-যথাঃ-
(১) নামাযরে ফরযিয়্যাত তথা নামায প্রমাণিত নয়,এমনটা ধারণা রেখে,নামাযের অস্থিত্বকেই অস্বীকার করে বসা।সমস্ত উলামায়ে কেরামের মতে উক্ত ব্যক্তি কাফির,মুরতাদ হয়ে যাবে।তাকে তাওবাহর কথা বলা হবে,যদি সে তাওবাহ না করে,তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।(এ দায়িত্ব সরকাল পালন করবে)
وأما الحالة الثانية: فقد اختلف الفقهاء فيها - وهي: ترك الصلاة تهاونا وكسلا لا جحودا - فذهب المالكية والشافعية إلى أنه يقتل حدا أي أن حكمه بعد الموت حكم المسلم فيغسل، ويصلى عليه، ويدفن مع المسلمين؛ لقول النبي صلى الله عليه وسلم: أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله ويقيموا الصلاة ويؤتوا الزكاة، فإن فعلوا ذلك عصموا مني دماءهم وأموالهم إلا بحق الإسلام وحسابهم على الله

(২)দ্বিতীয় প্রকারের বিধান নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে,সেটা হল, অলসতা বা অবহেলা করে নামাযকে ত্যাগ করা।
এ প্রকারের বিধান সম্পর্কে উলামাগণের মতামত হল,
শা'ফেয়ী ও মালিকী মাযহাব মতে তাকে হত্যা করা হবে।তবে সে মুসলমানই থাকবে।হত্যার পর একজন মুসলমানের মত মুসলমানের রীতিনীতি অনুযায়ী তাকে গোসল দেয়া হবে,এবং কাপন পড়িয়ে মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা হবে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,আমাকে জিহাদ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে,যতক্ষণ না লোকগণ এক আল্লাহর সাক্ষ্য দিবে,এবং মুহাম্মাদ সাঃ কে রাসূল বলে মানবে,এবং নামায পড়বে ও যাকাত প্রদান করবে। যদি তারা এগুলো করে ফেলে,তাহলে তারা তাদের জান-মালকে ইসলামের হক ব্যতীত হেফাজতে নিয়ে যাবে।এবং তাদের পরবর্তী হিসাব নিকাশ আল্লাহর কাছেই হবে।

আরো জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বেনামাজি তো কাফের নয়,তাই বেনামাজির সাথে বিবাহ জায়েজ।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার সাথে আপনার মায়ের বিবাহ শুদ্ধ।
বিবাহ শুদ্ধতার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়।
(সূরা ফাতির-১৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার মা আর আপনার মায়ের অভিভাবকদের উচিৎ ছিল যে, প্রথম থেকে দ্বীনদার একজন পাত্রর সাথে ঘর বাধা বা বাধানো। 

যাইহোক, যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে, এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার মা আপনার বাবাকে বুঝিয়ে নামাজে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করবেন।

তাকে আলতো করে আদর করে নামাযের কথা বলতে হবে।ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করতে হবে।

যেভাবেই হোক তাকে তাবলীগে বা হক্কানী কোনো শায়েখের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামায পড়ে আল্লাহর কাছে দু'আ করতে হবে। আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় আপনার মাকে দান করবেন। 

এ সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/295


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...