আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

১. কিছুদিন যাবত আমার বিয়ের কথাবার্তা চলতেছে। পাত্রের সাথে এখনো আমার সরাসরি দেখা হয় নি। এমনিতে নরমান বিষয় গুলো (দ্বীনদারিতা ও আনুষঙ্গিক বিষয়) জানার জন্য মেইলে একটু কথা হয়েছে। পাত্র আমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলেছে, এবং আজকে আমার এক ভাইয়ের সাথে দেখা করেছে। আজকে পাত্রের চাচা আমাদের বাড়িতে আসছিলো। সব মিলিয়ে উভয় ফ্যামিলি রাজি। পাত্র আমার ছবি দেখেছে। এখন আমার ভার্সিটি বন্ধ না থাকায় বাড়িতে যেতে পারছি না।, প্রায় মাস খানেক পর বন্ধ ভার্সিটি। তখন পাত্র সরাসরি আমাকে দেখবে, এরকম কথা হয়েছে।

এখন, পাত্র বলতেছে, উনার কিছু বিষয় ক্লিয়ার হওয়া ও কনফিউশান দূর করার জন্য একদিন ফোনে কথা বলতে চায়। এখন এটা কি ঠিক হবে?
২. পাত্র আজকে আমার এক ভাইয়ের সাথে দেখা করে বলছে, আমি হাত-পা মোজা পরে উনাদের ভাইয়ের সাথে একটু কুশলাদি বিনিময় করতে পারব কি না তা জানাতে (পাত্র এম্নিতে বলছে যে, পরিপূর্ণ পর্দায় রাখবে এবং তার ভাইদের সাথেও পর্দা করতে হবে) এখন বলতেছে, কুশলাদি বিনিময়ের কথা। এ অবস্থায় আমার করনীয় কি?

জাযাকুমুল্লাহু খইর।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/69086/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পূর্বে পাত্রিকে দেখা জায়েজ আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ 
تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে।
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫ মিশকাত ৩০৯৮।)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمُ الْمَرْأَةَ فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلٰى مَا يَدْعُوهُ إِلٰى نِكَاحِهَا فَلْيفْعَلْ»

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, আর যদি তার পক্ষে এমন কোনো অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা বিবাহের পক্ষে যথেষ্ট, তখন তা যেন দেখে নেয়। 

(আবূ দাঊদ ২০৮২, সহীহাহ্ ৯৯, আহমাদ ১৪৫৮৬, ইরওয়া ১৭৯১, সহীহ আল জামি‘ ৫০৬।)

★ইসলামে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে,ছবির মাধ্যমে নয় ।
কারণ- একেতো বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা, ব্যবহার ও
আদান-প্রদান শরীয়তে নিষিদ্ধ ।
তাছাড়া ছবিতে বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি যাচাই সম্ভব নয় ।
অধিকন্তু পাত্রের নিকট ছবি পাঠানোর দ্বারা বারবার তার জন্য বেগানা নারীকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।
যেটি নাজায়েজ। 
 
অথচ বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্র পাত্রীকে বারবার
দেখার বৈধতা নেই ।
তাছাড়াও এ ছবি পাত্র ব্যতীত অন্যকোন পুরুষও দেখতে পারে ।
অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা জায়িয নয় । এ সকল কারণে ছবির মাধ্যমে পাত্রী দেখা বা
পাত্রীর ছবি পাত্রের নিকট পাঠানো ইসলামের
দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
{সূত্রঃ রদ্দুল মুখতার, ৬ : ৩৭০}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১)খালওয়াত হতে পারবে না।

(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না

(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে

(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফোনে কথা বলা জায়েজ হবেনা।
মেসেজে বৈধ গুরুত্বপূর্ণ/জরুরী কথা তাকে লিখে পাঠাতে বলতে পারেন।

আর ছবি দেয়ার দরুন যেহেতু আপনার গুনাহ হয়েছে,তাই আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করে নিবেন।

(০২)
অতি আবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় কথা থাকলে পর্দার আড়ালে থেকে ফিতনার আশংকা না থাকার শর্তে বলতে পারবে।

এক্ষেত্রে সে সালাম দিলে আপনি মনে মনে জবাব নিতে পারবেন।

তবে অতি আবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় কথা না থাকলে সেটি বলা যাবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...