বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
এ সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস লক্ষণীয়…………..
(১)মুগীরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ الْمُغِيرَةِ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ نِيحَ عَلَيْهِ يُعَذَّبُ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ
তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে সে যেন অবশ্যই তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়। [মুগীরাহ (রাঃ) আরও বলেছেন,] আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আরও বলতে শুনেছি, যে (মৃত) ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপকৃত বিষয়ের উপর ‘আযাব দেয়া হবে। (সহীহ বোখারী-১২৯১) (মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯৩৩, আহমাদ ১৮২৬৫)
্ি্ি(২)ইবনে উমার (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ فِي قَبْرِهِ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ تَابَعَهُ عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ وَقَالَ آدَمُ عَنْ شُعْبَةَ الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الْحَيِّ عَلَيْهِ
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য কৃত বিলাপের বিষয়ের উপর কবরে শাস্তি দেয়া হয়। আবদুল আ‘লা (রহ.).....কাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনায় আবদান (রহ.)-এর অনুসরণ করেছেন। আদম (রহ.) শু’বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য জীবিতদের কান্নার কারণে ‘আযাব দেয়া হয়।(সহীহ বোখারী-১২৯২)
(৩)ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ رَحِمَ اللهُ عُمَرَ وَاللهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ لَيُعَذِّبُ الْمُؤْمِنَ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَلَكِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ لَيَزِيدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَقَالَتْ حَسْبُكُمْ الْقُرْآنُ (وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى) قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ عِنْدَ ذَلِكَ وَاللهُ (هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى) قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ وَاللهِ مَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ شَيْئًا
‘উমার (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর ‘আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর নিকট আমি ‘উমার (রাঃ)-এর এ উক্তি উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ‘উমার (রাঃ)-কে রহম করুন। আল্লাহ্র কসম! আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার (মৃত) ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বললেন, (এ ব্যাপারে) আল্লাহ্র কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইরশাদ হয়েছে)ঃ ‘বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না’- (আন‘আম ১৬৪)। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ই (বান্দাকে) হাসান এবং কাঁদান। রাবী ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) বলেন, আল্লাহ্র কসম! (এ কথা শুনে) ইবনু ‘উমার (রাঃ) কোন মন্তব্য করলেন না।(সহীহ বোখারী-১২৮৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরে আমরা পরস্পর বিরোধীূ হাদীস দেখতে পেয়েছি, প্রথম দুই হাদীস দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, জীবতর কান্না দ্বারা কবরে মৃত ব্যক্তির আযাব হয়। আর শেষ হাদীস দ্বারা বুঝতে পারলাম যে, আযাব হয় না। এই পরস্পর বিরোধী হাদীসের ব্যখ্যা কি হতে পারে?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন মতামত পেশ করে থাকেন, সর্বোত্তম ব্যখ্যা হল, কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য কান্না করলে তখন-ই তাকে শাস্তি দেয়া হবে,যদি দুনিয়াতে সে এ জিনিষের উপর সন্তুষ্ট থাকে যে, তার মৃত্যুর পর লোকজন তার জন্য আওয়াজ করে কান্না করুক বা এ রকম কান্না করা তার নিয়ম ও স্বভাব ছিলো।সে জন্য তাকে শাস্তি দেয়া হবে।