আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
374 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
edited by
আসসালাআ'লাইকুম।
এক নিকট আত্মীয় তার জমি বন্ধক রাখতে চাচ্ছে। এখন নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে জমি বন্ধক রেখে যদি সেই জমিতে চাষ করা হয় এবং জমিটার ভাড়া  নিয়মিত পরিশোধ করা হয়,, এইটা কি জায়েজ হবে?
আর জমির ভাড়া টা কিভাবে নির্ধারন করবো? যেহেতু এলাকায় এই রকম বিধান নেই বললে চলে? তাহলে জমির ভাড়া কি মাসিক নাকি বাৎসরিক ভিত্তিতে আদায় করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বর্তমান সমাজে জমি বন্ধকের প্রচলন রয়েছে।অহরহ জমি বন্ধক দেওয়া হচ্ছে বা নেওয়া হচ্ছে।কিন্তু জমি বন্ধকের ইসলামী নিয়মনীতি কি এ সম্পর্কে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই।
ইসলাম এ প্রচলিত পদ্ধতি সম্পর্কে কি বলে?
আসুন কিছুটা সময় ব্যয় করে এ সম্পর্কে কিছু শরয়ী বিধি-বিধান জেনে নেই।
যাতে ইহকাল ও পরকালের সঠিক রাস্তা অর্জন করতে সহায়ক হয়।

বন্ধকের সংজ্ঞা বর্ণনা করতে যেয়ে আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ
(هُوَ) لُغَةً: حَبْسُ الشَّيْءِ. 
وَشَرْعًا (حَبْسُ شَيْءٍ مَالِيٍّ) أَيْ جَعْلُهُ مَحْبُوسًا لِأَنَّ الْحَابِسَ هُوَ الْمُرْتَهِن(ُبِحَقٍّ يُمْكِنُ اسْتِيفَاؤُهُ)
তরজমাঃরেহেন(বন্ধক)এর শাব্দিক অর্থ কোনো কিছুকে বন্ধী করে রাখা।
পারিভাষায় রেহেন বলা হয়,কোনো জিনিষকে হক্ব বা কোনো প্রাপ্তধনের মুকাবেলায় বন্ধী করে রাখা।যাতে পরিবর্তীতে তা দিয়ে নিজ প্রাপ্যকে উসূল করা যায়।আদ-দুর্রুল মুখতার-৬/৪৭৭।

বন্ধক পদ্ধতি বৈধ তবে এক্ষেত্রে শরয়ী নীতিমালাকে মানতে হবে।বুঝতে হবে বন্ধক পদ্ধতি কি? এবং কি জন্য শরীয়ত বন্ধক পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষণা করেছে।সুতরাং শরীয়তের গন্ডীর ভিতর থেকে বন্ধক দিতে বা নিতে হবে।

বন্ধক পদ্ধতির বৈধতা কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।যেমনঃ
বন্ধক পদ্ধতির বৈধতা সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা নিজেই বলেনঃ
ﻭَﺇِﻥكُنْتُمْْ ﻋَﻠَﻰ ﺳَﻔَﺮٍ ﻭَﻟَﻢْ ﺗَﺠِﺪُﻭﺍْ ﻛَﺎﺗِﺒًﺎ ﻓَﺮِﻫَﺎﻥٌ ﻣَّﻘْﺒُﻮﺿَﺔٌ ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﻣِﻦَ ﺑَﻌْﻀُﻜُﻢ ﺑَﻌْﻀًﺎ ﻓَﻠْﻴُﺆَﺩِّ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺍﺅْﺗُﻤِﻦَ ﺃَﻣَﺎﻧَﺘَﻪُ ﻭَﻟْﻴَﺘَّﻖِ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺭَﺑَّﻪُ ﻭَﻻَ ﺗَﻜْﺘُﻤُﻮﺍْ ﺍﻟﺸَّﻬَﺎﺩَﺓَ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻜْﺘُﻤْﻬَﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺁﺛِﻢٌ ﻗَﻠْﺒُﻪُ ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﻋَﻠِﻴﻢٌ
তরজমাঃ আর তোমরা যদি প্রবাসে থাক এবং কোন লেখক না পাও,তবে (ঋণের মুকাবেলায়)বন্ধকী বন্তু হস্তগত করে রাখা উচিত। যদি একে অন্যকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, তার উচিত অন্যের প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করা।
তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত।সূরা বাক্বারা-২৮৩।

বন্ধকের বৈধতা সম্পর্কে এক হাদীসে এসেছে, নবীজী সাঃ নিজেও বন্ধক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
যেমনঃ হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻗﺎﻟﺖ ﺍﺷﺘﺮﻯ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﻳﻬﻮﺩﻱ ﻃﻌﺎﻣﺎ ﺑﻨﺴﻴﺌﺔ ﻓﺄﻋﻄﺎﻩ ﺩﺭﻋﺎ ﻟﻪ ﺭﻫﻨﺎ
ভাবার্থনবীজী সাঃ এক ইহুদির কাছ থেকে বাকীতে(নির্দিষ্ট সময়ে মূল্য পরিশোধের শর্তে) খাদ্য ক্রয় করেছেন,অতঃপর মূল্যর জামিন হিসাবে নিজ বর্মকে বন্ধক রেখেছেন।(সহীহ মুসলিম-১৬০৩)

ইমাম নববী রাহ,উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেনঃ 
ﻭﻓﻴﻪ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺮﻫﻦ ، ﻭﺟﻮﺍﺯ ﺭﻫﻦ ﺁﻟﺔ ﺍﻟﺤﺮﺏ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺬﻣﺔ ، ﻭﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺮﻫﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻀﺮ ، ﻭﺑﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲ ﻭﻣﺎﻟﻚﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺃﺣﻤﺪ ﻭﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻛﺎﻓﺔ ﺇﻻ ﻣﺠﺎﻫﺪﺍ ﻭﺩﺍﻭﺩ ﻓﻘﺎﻻ : ﻻ ﻳﺠﻮﺯ ﺇﻻ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﻔﺮ 
ভাবার্থ-উক্ত হাদীস দ্বারা বন্ধকের বৈধতা প্রমাণিত হলো।এমনকি কাফিরের কাছে যুদ্ধাস্ত্র বন্ধক রাখারও বৈধতা প্রমাণিত হলো।শুধু তাই নয় বরং মুক্বিম অবস্থায় ও বন্ধক রাখার বৈধতা প্রমাণিত হলো।এটাই ইমাম শাফেয়ী রাহ,ইমাম আবু হানিফা রাহ,ও ইমাম মালিক রাহ,এবং ইমাম আহমদ রাহ,এর মাযহাব ও অভিমত।(আল-মিনহাজ,শরহে নববী-পৃঃ২১৮)

ইবনে আবেদীন শামী রাহ,বন্ধক পদ্ধতির বৈধতা সম্পর্কে বলেনঃ
[ كِتَابُ الرَّهْنِ] 
ِ هُوَ مَشْرُوعٌ، لِقَوْلِهِ تَعَالَى - {فَرِهَانٌ مَقْبُوضَةٌ} [ البقرة: 283] - وَبِمَا رُوِيَ «أَنَّهُ - عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ - اشْتَرَى مِنْ يَهُودِيٍّ طَعَامًا وَرَهَنَهُ بِهِ دِرْعَهُ» وَانْعَقَدَ عَلَيْهِ الْإِجْمَاعُ.
ভাবার্থঃ-বন্ধক পদ্ধতি কোরআনে কারীমের সূরা বাকারার ২৮৮নং আয়ত দ্বারা প্রমাণিত এবং নবীজী সাঃ কর্তৃক নিজ বর্মকে বন্ধক রাখা দ্বারাও প্রমাণিত হয়।সর্বোপরি বৈধতার উপর উলমায়ে কেরামদের ইজমা বা ঐক্যমত ও রয়েছে।(রদ্দুল মুহতার-৬/৪৭৭)

সমাজে জমি বন্ধকের প্রচলিত কিছু পদ্ধতি-
এসমস্ত পদ্ধতিগুলোর হুকুম নিয়ে এখন আলোচনার প্রয়াস পাবো।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-4958


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...