আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আমাদের মহল্লায় এমন এক অবস্থা চলছে যে কেউ এসে আমাদের পরিবাবের কাউকে অন্যায়ভাবে আঘাত করতে বা মারতে আসার আশঙ্কা আছে। আমার চাচার জমির একটা অংশে অসহায়তার কারণে চাচা এক পরিবারকে থাকতে দিয়েছিল, অনেক বছর পর, সেই লোক চাচার জমি দখল করে ফেলে, দিতে চায়না, বাকিটুকুও দখল করতে চায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ, যার কারণে আমার বাবা, চাচার পক্ষ নেয়, হেল্প করে। এই কারণে ঐ লোক আমাদের পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত, প্রায় সময়ই ঝগড়া ঝামেলা হয়। ঐ লোক এখন লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি করে। এখন কথা হচ্ছে সবাই তো মুসলিম, কিন্তু তারা যেকোন সময় আমাদের পরিবারের যে কাউকে আঘাত করতে বা মেরে ফেলতেও আসার আশঙ্কা করছি, আল্লাহ না করুক।

আল্লাহ না করুক, এই মুহূর্তে তারা এমনটি করতে আসলে ইসলামের হুকুম কী? বিস্তারিত দালিলিকভাবে জানতে চাই।

১। সে বা তারা আমার পরিবারের কাউকে আঘাত করতে আসলে আমি কী করবো? বিস্তারিত প্লিজ।

২। মারতে (মেরে ফেলতে যেমন অস্ত্রশস্ত্র অর্থাৎ লাঠি ছুরি নিয়ে) আসলে আমি কী করবো?

৩। আমি কি আটকাতে যাবো না?
৪। প্রতিরক্ষার্থে যদি আমারই তাকে মেরে ফেলতে হয় তাহলে আমি কি জাহান্নামে যাবো?

________ (সেপারেট) ________

৫।  আমার পরিবারের যেকাউকে (বাবা,ভাই ইত্যাদি) কেউ আঘাত করতে আসলে আমি কি তাদের বাচাতে যাবো না?

৬।  বাচাতে গিয়ে কখন আমিও আঘাত করতে পারবো?

৭।  বাচাতে গিয়ে যদি আমার আঘাত করতে হয় আমি কি পাপী হবো?  
৮। সেই আঘাতে যদি সে মারা যায় বাই চান্স, আমি কি জাহান্নামে যাবো?

৯। রাস্তায় সেইম ঘটনা ঘটলে কী করবো, কাউকে আরেকজন বা কয়েকজন দুর্বল পেয়ে মেরে ফেলছে, তখন কী করবো, সীমারেখা আছে? অধিকাংশেই সেখানে সবাই মুসলিম হবে।
আগ্রীম জাযাকাল্লাহু খইরন, খুবই জরুরী, সিরিয়ালি এন্সারগুলো দিলে উপকৃত হবো।

1 Answer

0 votes
by (612,390 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اِنۡ عَاقَبۡتُمۡ فَعَاقِبُوۡا بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ لَئِنۡ صَبَرۡتُمۡ لَهُوَ خَیۡرٌ لِّلصّٰبِرِیۡنَ

‘আর যদি কাউকে তোমরা শাস্তি দাও, তবে ততখানি শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি সবর করো তাহলে তা তার জন্যই উত্তম।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১২৬)

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রতিশোধের কথা যেমন বলেছেন, তেমনি সবর তথা ধৈর্যধারণ করার কথাও উল্লেখ করেছেন। ইসলামে উভয়টি জায়েয আর প্রতিশোধ নেওয়ার থেকে সবর অবলম্বন করা উত্তম।

প্রতিশোধ গ্রহণআল্লাহর পথে দাওয়াত দানকারীদের আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে যে, যারা নির্যাতন চালায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা বৈধ, কিন্তু শর্ত হলো- প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। যতটুকু জুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে; বেশি হতে পারবে না। 

ইসলামে প্রতিশোধ গ্রহণ জায়েয তবে সবরে রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ।  তবে প্রতিশোধের ক্ষেত্রে অবশ্যই জুলুমের মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের চূড়ান্ত ঘোষণা।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১-৭)
প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। যতটুকু জুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে; বেশি হতে পারবে না। 

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তারা আপনাদেরকে মারতে আসলে আত্মরক্ষার্থে আপনি/আপনারা তাদেরকে মারতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে তাদের উপর জুলুম যেন না হয় নির্যাতনের সীমা যেন অতিক্রম করা না হয়।

আগবাড়িয়ে শুরুতেই তাদেরকে মারা যাবেনা।

তারা যদি আঘাত করে সে ক্ষেত্রে প্রতিশোধ স্বরূপ অনুরূপ আঘাত তাদের উপর করা যাবে।

তারা যদি আপনাদের কাউকে হত্যা না করে সে ক্ষেত্রে তাদের কাউকে হত্যা করা এটা বৈধ হবে না।

হ্যাঁ যদি তারা আপনাদের কাউকে হত্যা করে, সেক্ষেত্রে আপনারা তাদের কাউকে হত্যা করলে এটা অবৈধ হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ رَجُلٌ زَنَى بَعْدَ إِحْصَانٍ فَإِنَّهُ يُرْجَمُ وَرَجُلٌ خَرَجَ مُحَارِبًا لِلَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّهُ يُقْتَلُ أَوْ يُصْلَبُ أَوْ يُنْفَى مِنَ الأَرْضِ أَوْ يَقْتُلُ نَفْسًا فَيُقْتَلُ بِهَا.

আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এমন মুসলমানের রক্ত হালাল নয়, যে সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। তবে তিন শ্রেণীর মানুষকে হত্যা করতে হয়। (১) এমন মানুষ যে বিবাহ করার পর যেনা করল। তাকে রজম করতে হবে। (২) এমন ব্যক্তি যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে অবস্থান করল, তাকে হত্যা করা হবে, না হয় শূলী দেওয়া হবে, না হয় যমীন হতে নির্বাসন করা হবে। (৩) এমন ব্যক্তি যে কাউকে হত্যা করল, তাকে হত্যা করা হবে (আবুদাঊদ হা/৪৩৫৩)।

তবে সর্বাবস্থায় ঝগড়াঝাটি, মারামারিতে না গিয়ে আইনের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ থাকবে আপনারা খুব দ্রুত থানায় গিয়ে তাদের নামে একটি জিডি করতে পারেন,এবং নিরাপত্তা চাইতে পারেন।

(০৮)
আপনার মাজলুম হিসেবে মারা গেলে/নিজেকে/নিজ পরিবারকে হেফাজত করতে গিয়ে শত্রুর আঘাতে মারা গেলে সেক্ষেত্রে আপনি শহীদের স্তর পাবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-   

عن سعيد بن زيد عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال : « من قتل دون ماله فهو شهيد ومن قتل دون أهله أو دون دمه أو دون دينه فهو شهيد

হযরত সাঈদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি নিজ সম্পত্তি রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। অথবা প্রাণ রক্ষায় কিংবা দ্বীন রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৫২)

(০৯)
এক্ষেত্রে আপনি জালেমকে প্রতিহত করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...